ঝালকাঠির নলছিটি সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসের নকল নবিশরা ৫ মাস যাবত পাচ্ছেনা পারিশ্রমিকের টাকা। করোনা ভাইরাসের প্রভাবে মানবেতর জীবন যাপন করছে তারা । চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পারিশ্রমিক টাকা হাতে পায়নি ।
বালম বইতে রেজিষ্ট্রী কৃত দলিল নিবন্ধন (লিখে) করে প্রতি পৃষ্ঠা ২৪ টাকা পারিশ্রমিক পায় নকল নবিশরা । সাপ্তাহিক ছুটি বাদে ২২ দিন অফিসে কাজ করলে প্রতিদিন নির্দারিত ১২ পৃষ্ঠা বালাম বইতে নিবন্ধন করে ২ শত ৬৪ পৃষ্ঠা নিবন্ধন (লিখতে) করতে পারে তারা । এতে পারিশ্রমিক টাকা হয় ৬ হাজার তিন শত ৩৬ টাকা , এই সামান্য পারিশ্রমিক দিয়েই নকল নবিশদের চলে সংসার । নলছিটি সাব রেজিষ্ট্রী অফিসের কর্মরত ২৪ জন নকল নবিশরা ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পারিশ্রমিকের টাকা পায়নি । করোনা ভাইরাসের কারনে সরকারি বন্ধ থাকায় এপ্রিল ও মে মাসে কাজ করা সম্ভব হয়নি নকল নবিশদের ।
দলিল সম্পাদনের ইতিহাস অনেক পুরনো হলেও সম্পত্তি বেচাকেনায় প্রতারণা বন্ধ এবং ভূমি রাজস্ব আদায়ের স্বার্থে ১৭৮১ সালে উপমহাদেশে প্রথম রেজিষ্ট্রি আইন প্রবর্তিত হয় । তখন থেকেই রেজিষ্ট্রি কৃত দলিল নিবন্ধন এবং দলিলের নকল লেখার জন্য সৃষ্টি হয় নকল নবিশ পদ ।
কিন্তু পদ সৃষ্টির পর কয়েক শতক বছর পেরিয়ে গেলেও অস্থায়ি ভিত্তিতেই কাজ করতে হয় তাদের ।
দেশের ৬৪ টি জেলায় ৪৭৭ টি সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে প্রায় ২০ হাজার নকল নবিশ কর্মরত আছে তার বেশির ভাগি নারী। আর তারা সরকারি উৎসব বোনাস সহ সকল সুযোগ সুবিদা থেকে বঞ্চিত এমন কি নারী নকল নবিশদের বিনা পারিশ্রমিকেই মাতৃ কালিন ছুটি কাটাতে হয় ।
এ পদে কর্মরত থাকা অবস্থায় কেউ মৃত্যু বরণ করলে জোটেনা সরকারি সাহায্য সহযোগিতা এবং জীবনে ৬০ বছর কর্মরত থাকার পর খালি হাতে চলে যেতে হয় কর্মস্থল থেকে ।
বর্তমান সরকার ,সরকারি চাকুরি জীবিদের বেতন ভাতা বৃদ্ধি করলেও নকল নবিশদের পারিশ্রমিক টাকা বৃদ্ধি হয়নি ।
দলিল রেজিষ্ট্রি মাধ্যমে সরকার প্রতিদিন হাজার হাজার কোটি টাকা রাজাস্ব আয় করে থাকে ।
নকল নবিশরা দীর্ঘদিন যাবত তাদের চাকুরি জাতীয়করন করনের লক্ষ্যে জেলা উপজেলা সহ ঢাকাতে ভিবিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসলেও ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি । ঝালকাঠি জেলা নকল নবিশ এসোশিয়েসনের সাধারন সম্পাদক শফিকুল ইসলাম জানান দেশের মানুষের ভাগ্য পরির্বতনের জন্য কাজ করে যাচ্ছে সরকার, হয়তো এক দিন নকল নবিশদেরও ভাগ্যের পরির্বতন ঘটবে। সে দিন বেশি দুরেনা।
নলছিটি সাব রেজিষ্ট্রী অফিসের এক কর্মকর্তা বলেন নকল নবিশদের পারিশ্রমিক বিলের কাগজ উর্ধতন কর্মকর্তাদের কাছে পাঠানো হয়েছে সেখান থেকে অর্থ ছাড় পেলেই তারা পারিশ্রমিকের টাকা পেয়ে যাবে ।