এম বশির, ব্যুরো প্রধান, বরিশালঃ
বরিশালের উজিরপুরে ব্যবসায়ী সোহাগ সেরনিয়াবাতকে হত্যার ঘটনায় দাদা বাহিনীর দুইজনকে ফাঁসি এবং চারজনকে যাবজ্জীবন দিয়েছেন আদালত।
বুধবার (১৫ সেপ্টেম্বর) বেলা সাড়ে ১২ টায় বরিশাল জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল ও বিশেষ জেলা দায়েরা জজ আদালতের বিচারক টিএম মুসা আসামিদের উপস্থিতিতে এ রায় দেন।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন জননিরাপত্তা বিঘ্নকারী অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনালের পাবলিক প্রসিকিউটর লস্কর নুরুল হক।
তিনি বলেন, দাদা বাহিনীর প্রধান জিয়াউল হক লালন ও রিয়াদ সরদারকে ফাঁসির দণ্ডাদেশ এবং মামুন, ইমরান, বিপ্লব পাটনী, ওয়াসিম সরদারকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাণ্ড দিয়েছেন আদালত।
এ মামলায় আরও ১০ জনকে বেকসুর খালাস দেওয়া হয়েছে।
খালাস প্রাপ্ত আসামিদের রায়ের বিষয়ে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন বলে জানিয়েছেন নিহতের বাবা ফারুক হোসেন সেরনিয়াবাত।
তিনি বলেন, রায়ে আমরা সন্তুষ্ট। তবে যারা বেকসুর খালাস পেয়েছেন তারাও হত্যার সঙ্গে জড়িত ছিলেন।
রায়ের পূর্ণাঙ্গ আদেশ কপি পেলে উচ্চ আদালতে আপিল করবো। আশা করি, উচ্চ আদালত তাদের শাস্তি দেবেন।
২০১৪ সালের ৪ সেপ্টেম্বর রাত সাড়ে ৮টার দিকে উপজেলা সদরের রাখালতলা ভিআইপি রোডের মোশাররফ হোসেনের বাড়ির সামনে সোহাগ সেরনিয়াবাতকে কুপিয়ে হত্যা করে লালন বাহিনী।
এ ঘটনায় নিহতের মামা খোরশেদ আলম নান্টু বাদী হয়ে ৫ সেপ্টেম্বর উজিরপুর মডেল থানায় মামলা একটি করেন। মামলার তদন্ত শেষে ওই বছরের ২২ নভেম্বর ১৬ জনকে অভিযুক্ত করে অভিযোগপত্র দেন জেলা গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক শাহাবুদ্দিন খান।
তদন্তে উঠে আসে, আসামি রিয়াদ ও নিহত সোহাগ সেরনিয়াবাত ঘনিষ্ঠ বন্ধু থাকায় পরস্পরের বাড়িতে যাওয়া আসা করতেন। সেই সুবাদে রিয়াদের স্ত্রী ফৌজিয়া নাভিন অভির সঙ্গে পরকীয়া সর্ম্পকে জড়িয়ে পড়েন। ওই দম্পতির ইছানুর অভি নামে একটি ছেলে সন্তান ছিল। তবে পরকীয়ায় জড়িয়ে রিয়াদকে ছেড়ে সোহাগের সঙ্গে সংসার শুরু করেন অভি। এ নিয়ে উভয় পরিবারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল।
ওই ঘটনার প্রতিশোধ নিতে রিয়াদ অবশেষে জিয়াউল হক লালনের দাদা বাহিনীতে যোগ দেন। এরপর পরিকল্পিতভাবে সোহাগ সেরনিয়াবাতকে কুপিয়ে হত্যা করেন। এ ঘটনায় সাইফুল ইসলাম নামে নিহত সোহাগের আরেক বন্ধু গুরুত্বর আহত হয়েছিল।