হবিগঞ্জের লাখাই উপজেলার টিক্কাপুর হাওরে নৌকাভ্রমণে যাওয়া নববধূকে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের ঘটনায় ছাত্রলীগনেতা সোলায়মান রনিসহ আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করা হয়েছে।আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে নববধূর স্বামী বাদী হয়ে হবিগঞ্জ নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-২-এ আটজনের বিরুদ্ধে মামলাটি করেন।
আসামিরা হচ্ছেন মোড়াকড়ি গ্রামের মুছা মিয়া (২৬), মিঠু মিয়া (২১), হৃদয় মিয়া (২২), সুজাত মিয়া (২৩), জুয়েল মিয়া (২৫), মুড়াকড়ি ইউনিয়নের ছাত্রলীগনেতা সোলায়মান রনি (২২), মুছা মিয়া (২০) ও শুভ মিয়া (১৯)।
বিচারক জিয়াউদ্দিন মাহমুদ মামলাটি আমলে নিয়ে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এফআইআর করতে লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) নির্দেশ দেন।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাদীপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হাফিজুল ইসলাম।
এ ঘটনায় তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। ছাত্রলীগনেতা সোলায়মান রনি ও মিঠু মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব আর শুভকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
মামলার আসামি শুভকে গ্রেপ্তার করেছে লাখাই থানা পুলিশ।
বাদীপক্ষের আইনজীবী হাফিজুল ইসলাম জানান, এক মাস আগে তাদের বিয়ে হয়। গত ২৫ আগস্ট দুপুরে বাড়ির পাশের ওই হাওরে তারা নৌকাভ্রমণে যান। নৌকায় নবদম্পতি, তাদের এক বন্ধু ও মাঝি ছিলেন। সে সময় আরেকটি নৌকায় করে গ্রামের আট যুবক তাদের নৌকার গতিরোধ করেন। তাদের নৌকায় উঠে ওই যুবকরা তাকে ও তার বন্ধুকে মারধর করে আটকে রাখেন। তার স্ত্রীকে ওই নৌকায় তুলে নিয়ে সংঘবদ্ধ ধর্ষণ করেন।
মোবাইল ফোনে ধর্ষণের ভিডিও ধারণ করে রাখা হয়। ধর্ষণের বিষয়টি কাউকে জানালে ওই ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়া হবে বলেও হুমকি দেন তারা। এ কারণে বিষয়টি এত দিন গোপন করে রেখেছিলেন নববধূ ও তার স্বামী।
তবে ঘটনার চার দিন পর ওই যুবকরা ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আবারও নববধূর সঙ্গে শারীরিক সম্পর্কে মিলিত হতে চান। এতে রাজি না হওয়ায় তারা এলাকার কয়েকজনের কাছে ভিডিওটি ছড়িয়ে দেয়। এর মধ্যে নববধূর শারীরিক অবস্থাও খারাপ হতে থাকে। এরপর গতকাল বুধবার ওই নববধূকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
লাখাই থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইদুল ইসলাম জানান, আসামিদের গ্রেপ্তার করতে পুলিশের অভিযান চলছে। ইতোমধ্যে আসামি শুভকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
র্যাব জানায়, লেফটেন্যান্ট কমান্ডার নাহিদ হাসান ও সিনিয়র এএসপি কামরুজ্জামানের নেতৃত্বে র্যাব হবিগঞ্জ ক্যাম্পের সদস্যরা আসামি সোলায়মান রনি ও মিঠু মিয়াকে গ্রেপ্তার করেছে।