1. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  2. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  3. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
বুধবার, ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:৪১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ঢাকা মহানগরে ব্যাটারিচালিত রিকশা বন্ধে হাইকোর্টের নির্দেশ প্রয়োজনীয় কিছু সংস্কার শেষেই দ্রুত সম্ভব নির্বাচন সংঘটিত হবে-আইন উপদেষ্টা টাঙ্গাইলে বাস-পিকআপ সংঘর্ষে নিহত ৪ আজও তিতুমীর কলেজে শিক্ষার্থীদের  সড়ক ও রেলপথ অবরোধের ঘোষণা সাবেক খাদ্যমন্ত্রী কামরুলের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর রাজধানির সড়কে মাওলানা সাদ পন্থীদের অবস্থান অন্তর্বর্তী সরকার নির্বাচিত নয়,তাদের ম্যান্ডেট নেই-বিএনপি মহাসচিব নিজেকে বদলানোর কোনো ইচ্ছে নেই-প্রধান উপদেষ্টা ভারতীয় চ্যানেল ‘রিপাবলিক বাংলা’র বিরুদ্ধে হাইকোর্টে রিট দায়ের স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে ৮৩তম ব্যাচের ওরিয়েন্টশন অনুষ্ঠিত

বিএনপি নেতার বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ, ১১ দিনেও মামলা নেয়নি পুলিশ

  • সময় : শনিবার, ২৮ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ৪০

সাকিব আসলাম 

ঢাকার আশুলিয়া থানা বিএনপির সহ-সভাপতি আমিনুল ইসলাম পিয়ার আলীর বিরুদ্ধে গত ১৬ই সেপ্টেম্বর আশুলিয়া থানায় ধর্ষনের অভিযোগ দায়ের করেন এক ভুক্তভোগী নারী। তবে অভিযোগ দায়েরের ১১ দিন পেরিয়ে গেলেও এখনো মামলা নেয়নি পুলিশ। 

ভুক্তভোগী নারী অভিযোগ করেন, অভিযুক্ত পিয়ার আলী প্রভাবশালী বিএনপি নেতা হওয়ার কারণে তাকে বাঁচাতে আমাকে মেডিকেলে পরীক্ষার জন্য না পঠিয়ে মামলা নেওয়ার কথা বলে সকাল-বিকাল ঘুরাতে থাকে পুলিশ। পরে আমি জানতে পারলাম, বাহাত্তর ঘন্টা পেরিয়ে গেলে ধর্ষনের প্রধান আলামত নষ্ট হয়ে যায়। আলামত নষ্ট করার জন্যই মামলা নেওয়ার আশ্বাস দিয়ে আমাকে ঘোরানো হয়েছে।

অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আমিনুল ইসলাম পিয়ার আলী (৫৭) আশুলিয়া থানার ধামসোনা ইউনিয়নের পবনারটেক এলাকার মৃত কাশেম আলীর ছেলে। বর্তমানে সে জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির আশুলিয়া থানা কমিটির সহ-সভাপতি ও সভাপতি প্রার্থী। 

থানায় দেওয়া অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, গত ৫ই আগস্ট দেশে বৈষম্য বিরোধী ছাত্র-জনতার আন্দোলনে সরকার পরিবর্তন হয়, এর পর থেকে ভুক্তভোগী ওই নারী নেত্রীকে নানা ভাবে ভয়ভীতি দেখাতে থাকে ওই বিএনপি নেতা। এসময় ওই যুব মহিলা লীগ নেত্রীসহ তার পরিবারের সদস্যদের হত্যা মামলায় নাম দেওয়ার হুমকী দেয়। হুমকির মুখে স্বপরিবারে বাসা পরিবর্তন করতে বাধ্য হয় ভুক্তভোগী পরিবার। কিন্ত ফেসবুক ম্যাসেঞ্জার ও মোবাইল নাম্বারে ফোন দিয়ে তার সাথে দেখা করতে বলে। এসময় দেখা না করায় যুব মহিলালীগের নেত্রী সহ পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের হুমকী দিতে থাকে। পরে বাধ্য হয়ে ১৬ই সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে দশটার দিকে দেখা করার জন্য ভাদাইল পিয়ার আলী স্কুলের ভিতরে বিএনপি নেতার ব্যক্তিগত অফিসে যায়। এসময় সাড়ে এগারোটার দিকে কৌশলে মুখ চেপে ধরে ইচ্ছার বিরুদ্ধে জোর পূর্বক ধর্ষন করে সে। হুমকি দেয় ঘটনার বিষয়ে কাউকে না জানাতে।

ভুক্তভোগী যুব মহিলালীগের নেত্রী বলেন, আমি আগে আওয়ামী যুব মহিলালীগের একটি পদে ছিলাম। দেশে সরকার পতনের পর সবার নামে মামলা হচ্ছে,বাড়ি ঘরে হামলা হচ্ছে। আমি পদে থাকায় সবাই আমাকে চিনে। কিন্ত আমাকে কেউ কিছু বলেনি। ৫ই আগস্টের পর থেকে এলাকার এক বিএনপি নেতা আমাকে দেখা করতে খবর পাঠায়। কিন্ত আমি যাই নাই। এর পর অনেক ভাবে আমাকে তার কাছে নিতে চেষ্টা করে। পরে পরিবারের সদস্যদের ডিস্ট্রাব করা শুরু করে। তাই বাধ্য হয়ে এলাকা ছেড়ে চলে যাই। 

তিনি আরও বলেন,  যখন এলাকা থেকে চলে আসি তখন কোন ভাবে নাম্বার সংগ্রহ করে যোগাযোগ করে। সেসময় আমার ও আমার পরিবারের সদস্যদের নামে হত্যা মামলা দায়ের হচ্ছে। তাই দ্রুত দেখা করতে বলে। তাই তার কথা মত একটি স্কুলের নিজ ব্যক্তিগত অফিসে দেখা করি। সেখানে প্রথমে অনেকে ছিল। পরে তাদের বের করে দিয়ে মুখ চেপে ধর্ষণ করে। এই বিষয়ে কাউকে না জানাতে হুমকি দেয় সে। যদি জানাই তাহলে আমি এবং আমার ছেলে ও পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের নাম মামলায় ঢুকিয়ে দিবে বলে সে হুমকি দেয়। 

মামলার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি সেদিন থানায় মামলার জন্য যাই কিন্ত ওসি স্যার তদন্ত করে মামলা নেওয়ার কথা বলেন। তিন দিন পার হলেও তদন্ত করতে ঘটনাস্থলে যায়নি কেউ। আমি থানায় বার বার আসায় তিনদিন পর বাধ্য হয়ে ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। এমনকি একদিন রাত বারোটার সময় মামলা নেওয়ার কথা বলে আমাকে থানায় ডেকে আনে। আমি থানায় গিয়ে দেখি পিয়ার আলীর লোক ইদ্রিস থানায় বসে আছে। পরে এস.আই মজিবর আমাকে জানায় পিয়ার আলী ৩ লাখ টাকা পাঠিয়েছে এটা নিয়ে ঝামেলা শেষ করে ফেলো। আমি টাকা নিতে অস্বীকৃতি জানাই এবং মামলা নিতে বলি। কিন্তু সে রাতেও মামলা নেয়নি পুলিশ। পরে আমি বাসায় চলে আসি। বর্তমানে থানার ওসি এবং এস.আই মজিবর আমার কল রিসিভ করেন না। থানায় মামলা সম্পর্কে জানতে হলে আমার সাথে কেউ কথা বলেন না। 

অভিযুক্ত বিএনপি নেতা আমিনুল ইসলাম পিয়ার আলী বলেন, “আমি তাকে ডেকে আনি নাই। সে নিজে থেকে আমার অফিসে এসেছে। সে তো আওয়ামীলীগের সাথে জড়িত।  মামলা হচ্ছে বিভিন্ন জায়গায়। তাই মামলা থেকে বাঁচতে আমার কাছে আসছিল। 

তাকে ধর্ষণ করা হয়েছে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমি অসুস্থ মানুষ। দীর্ঘ সময় ধরে আশুলিয়া এলাকায় ছিলাম না। তার সাথে এতো ভাল পরিচয় নেই। তবে তাকে চিনি। তাকে পরামর্শ দিয়ে পাঠিয়ে দিয়েছি। এছাড়া আর কিছু হয়নি। 

মীমাংসার বিষয়ে তিনি বলেন, সে এসেছিল। আমার কাছে তিন লাখ টাকা চেয়েছে। কিন্ত আমি দেয়নি। আমি কাউকে ধর্ষণ করি নাই।”

১২ দিন পেরিয়ে গেলেও থানায়  মামলা দায়ের হয়নি। তবে ঘটনার দিন দুপুরে থানায় একটি অভিযোগ করেন। সেই অভিযোগের তদন্ত কর্মকর্তা ছিলেন আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক মজিবুর রহমান। তদন্ত বিষয়ে তার সাথে বলে জানা যায়, ধর্ষণের ঘটনা ঘটলে তাৎক্ষণিক মামলা হওয়া উচিত তবে এই মামলার ক্ষেত্রে একটু ভিন্নতা রয়েছে। এখানে যে ভিকটিম রয়েছে সে যে বক্তব্য দিয়েছে তার সাথে অভিযুক্ত ঘটনার সময় নিয়ে একটু সন্দেহ রয়েছে। তাই  অভিযোগ পাওয়ার পর পর দুজনের নাম্বার প্রযুক্তির সহযোগিতা নিয়ে যাচাই-বাছাই করা হচ্ছে। 

মামলা নেওয়া হয়নি কেন জানতে চাইলে তিনি বলেন,  মামলা নেওয়ার এখতিয়ার ওসি স্যারের। আমার কিছুই করার নেই। আমরা কোন আলামত নষ্ট করিনি। উল্টো সে মিমাংসার কথা বলে আমাদের কাছে সময় নিয়েছে। 

এবিষয়ে জানতে আশুলিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আবু বক্কর সিদ্দিকের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। পরে আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মোস্তফা কামালের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ঘটনাটা তদন্ত করতে এক অফিসার কে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। ওই অফিসার তদন্ত রিপোর্ট ওসি স্যারকে দিয়েছেন। এর বেশি আমি কিছু জানি না।

অভিযুক্ত : বিএনপি নেতা পিয়ার আলীর

বা বু ম/ এস আর

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪