নারায়ণগঞ্জের সিদ্দিরগঞ্জে রাসেল (২৮) নামে এক বাস চালককে অপহরণের ৮ দিন পর উদ্ধার করেছে র্যাব-১১। ২০ জুন শনিবার বিকেলে র্যাব-১১’র অধিনায়ক লেঃ কর্ণেল ইমরান উল্লাহ সরকার স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে পাঠানো এক প্রে স বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে র্যাব।
শুক্রবার (১৯ জুন) বিকেল সাড়ে ৫ টায় হাউজিং এলাকায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে ভিকটিমকে উদ্ধারসহ মোঃ আল আমিন (২৪) ও ইরা ইসলাম (২২) নামে সংঘবদ্ধ অপহরণকারী চক্রের ২ জন সক্রিয় সদস্যকে গ্রেফতার করে র্যাব-১১।
বিজ্ঞপ্তিতে র্যাব জানায়- গত ১৮ জুন ভিকটিমের মা র্যাব-১১ নারায়ণগঞ্জ বরাবর একটি অভিযোগ করেন যে, গত ১১ জুন ভিকটিম মোঃ রাসেল চিটাগাং রোডে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে বের হয়। পরবর্তীতে রাসেল বাড়িতে না ফেরায় তার মা অনেক খোঁজাখুজি করেন। ১২ জুন অজ্ঞাত এক ব্যাক্তি ফোন করে বলে যে আপনার ছেলে আমাদের কাছে আটক আছে। তারা ভিকটিম রাসেলকে জিম্মি করত হত্যার হুমকি দিয়ে পরিবারের কাছ থেকে মোটা অংকের মুক্তিপণ দাবি করে। উক্ত অভিযোগের প্রেক্ষিতে র্যাব-১১ কর্তৃক গোয়েন্দা নজরদারী ও গোপন অনুসন্ধানের মাধ্যমে অভিযোগের সত্যতা পায়।
র্যাব জানায়- গ্রেফতারকৃতদেরকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ ও অনুসন্ধানে জানা যায়, আসামীরা পরষ্পর স্বামী-স্ত্রী। তাদের বাড়ি চট্টগ্রাম জেলার সন্দীপ থানাধীন সাতঘরিয়া এলাকায়। আসামীরা আরো স্বীকার করে যে, তারা একটি পেশাদার অপহরণকারী চক্রের সদস্য। দীর্ঘদিন ধরে সিদ্ধিরগঞ্জ এলাকায় এই ধরণের অপহরণ কার্যক্রম করে আসছে। অপহরণ করার ক্ষেত্রে তারা বিভিন্ন ধরণের কৌশল অবলম্বন করে থাকে। তার মধ্যে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ অন্যতম। তারা ভিকটিম মোঃ রাসেলকে অপহরণের বিষয়ে স্বীকারোক্তি প্রদানসহ অন্যান্য আরও অপরাধের লোমহর্ষক বর্ননা দেয়।
ভিকটিম রাসেল অপহরণ বিষয়ে তারা জানায় যে, ধৃত আসামীরা গত ১১ জুন নারায়ণগঞ্জে চিটাগাং রোড থেকে রাসেলকে অপহরণের উদ্দেশ্যে তুলে নিয়ে যায়। সেখান থেকে তাকে চেতনা নাশক ঔষধ প্রয়োগ করত অবচেতন করে তাদের ভাড়া করা একটি ফ্লাট বাসায় নিয়ে যায়। অতঃপর উক্ত বাসায় একটি গোপন কক্ষের ভিতর হাত-পা ও চোখ বেঁধে রাসেলকে মারধর করাসহ বিভিন্ন শারীরিক নির্যাতন করতে থাকে। মুক্তিপণের ২ লক্ষ টাকার জন্য রাসেলের পরিবারের কাছে ফোন করে এবং এই বিষয়ে কাউকে কিছু না বলার জন্য রাসেলের পরিবারকে রাসেল হত্যার হুমকি দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, অপহরণকারী চক্রের সদস্যরা ভিকটিম রাসেলের মুখের ভিতর কাপড় ঢুকিয়ে দেয় এবং গামছা দিয়ে চোখ, মুখ, হাত-পা বেধে লাঠি ও কাঠের তৈরি ব্রাশ দিয়ে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় আঘাত করে এবং হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় সুই দিয়ে খোঁচায়। রাসেলের পরিবার কোনো উপায় না পেয়ে রাসেলের জীবন বাঁচাতে ১৫ জুন রাতে বিকাশের মাধ্যমে ১০ হাজার টাকা তাদের কাছে পাঠায় এবং বাকী টাকা নগদে পরিশোধ করবে বলে জানায়।
গ্রেফতারকৃত আসামীদের বিরুদ্ধে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের এর প্রস্তুতি চলছে।