1. boyd94289@gmail.com : Ayon Islam : Ayon Islam
  2. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  3. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  4. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
  5. bangladeshbulleting646@gmail.com : Sohel Desk : Sohel Desk
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:৪৮ অপরাহ্ন

মুগদা মেডিকেল থেকে পালিয়ে করোনা রোগীর আত্মহত্যা

  • সময় : শনিবার, ২০ জুন, ২০২০
  • ৩৩৭

আব্দুল মান্নান খন্দকার (৪১) করোনাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে চিকিৎসাধীন ছিলেন রাজধানীর মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। গতকাল শুক্রবার তাঁর শরীরের অবস্থার অবনতি হয়, শ্বাসকষ্ট শুরু হয়। পরে তিনি তাঁর স্ত্রী মমতা খাতুনকে (৩০) ফোন করে বলেন, ‘আমি আজ মরে যাচ্ছিলাম। আমি বাসায় যাব।’ তখন স্ত্রী বললেন, ‘আস।’। এরপর থেকে মান্নানের মুঠোফোনটি বন্ধ।

রাত ১০টার পর থেকে মমতা খাতুন তাঁর স্বামীকে ফোনে না পেয়ে ভাই মুসা আজাদীকে (২৮) ঘটনা জানান। ঘটনা শুনে মুসা ভোরে ছুটে যান মুগদা হাসপাতালে। হাসপাতালে গিয়ে তিনি জানতে পারেন, তাঁর বোন জামাই ‘কাউকে কিছু না বলে রাত ১২টার দিকে হাসপাতাল থেকে পালিয়েছেন।’

আজ শনিবার দুপুরে মুসা আজাদীকে এই প্রতিবেদককে বলছিলেন, গত ১৩ জুনে মান্নানের করোনা পজিটিভ রিপোর্ট আসে। ১৫ জুন করোনায় আক্রান্ত মান্নান খন্দকার মুগদা হাসপাতালে ভর্তি হন। শুক্রবার মুসার শারীরিক অবস্থার অবনতি হলে তিনি কাউকে কিছু না বলে হাসপাতাল থেকে পালিয়েছেন। ভোরে মান্নানকে আর হাসপাতালে পাওয়া যায়নি। পরে বাসার দিকে যাচ্ছিলেন মুসা আজাদী।

আজ শনিবার সকালে রাজধানীর আদাবরের ১৭/১৮ হোসেন হাউজিংয়ের সেন সেশন অ্যাপার্টমেন্টের নিরাপত্তারক্ষীরা আদাবর থানায় ফোন করে জানান, আদাবরের সেন সেশন অ্যাপার্টমেন্টের পেছনের কাঁঠাল গাছে গলায় ফাঁসি দিয়ে একজন ঝুলে আছেন। খবর পেয়ে সকাল ৭টার দিকে ঘটনাস্থলে গিয়ে থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল মোমিন লাশটি উদ্ধার করেন।

এসআই আব্দুল মোমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান, লাশের পাশে একটি ফোন পড়ে আছে। ফোনটির শেষ ডায়ালে থাকা নম্বরটিতে ফোন করেন মোমিন। ফোনটি রিসিভ করেন আব্দুল মান্নান খন্দকারের স্ত্রী মমতা খাতুন। মমতা স্বামীর ফোনটি ধরেই বলেন, ‘তুমি বাসার নিচে এসেছ? আমি আসব?’ তারপর এসআই আব্দুল মোমিন তাঁকে ঘটনা জানান। কিন্তু স্বামীর মৃত্যুর ঘটনা জেনেও বের হতে পারেননি মমতা। কারণ তিনি, তাঁর ছেলে মৌবিন (৪) ও মেয়ে মিমি (১২) করোনায় আক্রান্ত! তাদের ঘর থেকে বের হতে দেওয়া হয়নি। পরে মুসা আজাদীকে ঘটনাটি জানান তাঁর বোন মমতা খাতুন। মুসা ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখতে পান দুলাভাইয়ের লাশ।

আজ শনিবার দুপুরে শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে থাকা মুসা আজাদী এই প্রতিবেদককে বলেন, “আমার দুলাভাইকে ১৫ জুন মুগদা মেডিকেলে ভর্তি করিয়েছিলাম। গতকাল তাঁর শ্বাসকষ্ট বাড়ে। শরীর অন্য দিনের চেয়েও খারাপ হয়। তারপর আমার বোনকে ফোন করে বলেন, ‘আমি আজ মরে যাচ্ছিলাম। আমি বাসায় যাব।’ এরপর আমার আপা বলেন, ‘আস।’ তার পরই ফোনটি কেটে দেন দুলাভাই। ভোরে হাসপাতালে এসে শুনলাম রাত ১২টার দিকে দুলাভাই পালিয়েছেন। পরে আজ সকালে আপা আমাকে বললেন, মান্নান গলায় ফাঁশ দিয়ে মারা গেছেন। পরে আমি ঘটনাস্থলে যাই। হয়তো অতিরিক্ত শরীর খারাপ হওয়াতে হাসপাতাল থেকে পালিয়ে আত্মহত্যা করেছেন।”

জানতে চাইলে এসআই আব্দুল মোমিন বলেন, ‘সেন সেশন অ্যাপার্টমেন্টের পাশের শাহি পেট্রল পাম্পের পেছনের বাগানের মতো একটি স্থানে লাশটি ঝুলে ছিল। লাশটি সকাল সাড়ে ৭টার দিকে উদ্ধার করা হয়। পরে লাশের কাছে থাকা ফোন দিয়ে তার স্ত্রীকে ঘটনা খুলে বলি। কিন্তু তিনি আসেননি। কারণ, তিনি এবং তাঁর দুই ছেলে-মেয়ে করোনায় আক্রান্ত। পরে মান্নারের শ্যালক আসেন। তারপর লাশটি উদ্ধার করে শহীদ সোহরাওয়ার্দী হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। লাশের শরীরে ট্রাউজার ও স্যান্ডো গেঞ্জি পরা ছিল। মান্নান তাঁর স্ত্রীকে বাসায় যাওয়ার কথা বললেও তিনি পরে আর কারো সঙ্গে যোগাযোগ করেননি। এমনকি বাসায়ও যাননি। মৃত ব্যক্তি সেন সেশন অ্যাপার্টমেন্টেরই দারোয়ান। ওই বাসার ১১তলার ছাদের একটি কক্ষে তিনি থাকতেন।’

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪