বরিশালের উজিরপুরে মোবাইল ফোন চুরির অপবাদ দিয়ে এক শিশুকে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন। ৩য় শ্রেনীতে পরুয়া এক হতদরিদ্র শিশুর দুই হাত বেধে জালানী কাঠ ও বাঁশের লাঠি দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে প্রভাবশালীরা বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় এলাকায় চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। আহত শিশু উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
নির্যাতনের ঘটনা ধামাচাপা দিতে অসহায় পরিবারকে বিভিন্ন ভয়-ভীতি ও হুমকি অব্যাহত।প্রভাবশালীদের ভয়ে মামলা করতে সাহস পাচ্ছে না আহত শিশুর পরিবার। আহত শিশুর পরিবার সূত্রে জানা যায় শিশুর বাবা ইউসুফ মৃধা গরীব অসহায় হওয়ায় উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নে কাজিরা গ্রামে নানা শাহালম তালুকদারের বাড়ীতে থেকে মাহিন (১০) নামের শিশুটি লেখা পড়া করে থাকে।
১২ জুন একই গ্রামের প্রবাসী জাকির হাওলাদারের স্ত্রীর নাসিমা বেগমের মোবাইল চুরি হয়। সে ঘটনায় শিশু মাহিনের উপর চুরির অপবাদ দিয়ে ১৪ জুন রাতে প্রবাসীর বাড়ীতে শালিশি বৈঠকের আয়োজন করে। এলাকার মোড়লরা চাঁদাবাজী করার উদ্দেশ্যে ৮ হাজার ৫শত টাকা জরিমানা করে। শিশুর পরিবার উক্ত জরিমানার টাকা দিয়ে রাজী না হওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে প্রবাসীর স্ত্রীর পক্ষ নিয়ে একই এলাকার নেছার উদ্দিন হাওলাদার ছেলে ইউনুস তালুকদার, শোলক ইউনিয়নের দত্তসর গ্রামের আবুল বাশার (বাদশা) মিলে ওই শিশুকে বেদম ভাবে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে।
এ ব্যাপারে প্রবাসীর স্ত্রী নাসিমা বেগম জানান মোবাইল চুরি করেছে মহিন তবে দুই দিন পরেই আমার মোবাইল ফেরৎ পেয়েছি। শালিশি বৈঠকের আয়োজনে আমি করিনি। চুরি করার অপরাধে স্থানীয়রা শালিশ বৈঠকের আয়োজন করেছে। অভিযুক্ত ইউনুছ তালুকদার জানান চুরি করায় মাহিনকে কয়েকটি লাথি ও থাপ্পর দিয়েছি। বাঁশের লাঠি দিয়ে আঘাত করিনি। আবুল বশার বাদশার কাছে হামলার ঘটনার বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন আমার ছেলে জিহাদ মোবাইল চুরির ঘটনায় জড়িত আছে বলে মিথ্যা অপপ্রচার চালিয়েছে বলে আমি মাহিনকে মেরেছি।
আহত শিশুর নানা শাহালম তালুকদার জানান আমরা গরীব অসহায় হওয়ায মোবাইল চুরির অপবাদ দিয়ে এলাকার কতিপয় শালিশরা সড়ে ৮ হাজার টাকা চাঁদা দাবী করে তা না দেয়ার আমার নাতি মাহিনকে হত্যা করার উদ্দেশ্যে দুই হাত বেঁধে বাঁশেরলাঠি ও জ্বালানি কাঠ দিয়ে পিটিয়ে গুরুতর আহত করেছে।
আরো জানান মামলা করবো কিভাবে।আমাদের তো টাকা পয়সা নেই, এমনকি চিকিৎসার টাকা পর্যন্ত চড়া সুদে এনেছি। আমরা একমাত্র আল্লাহর কাছে বিচার দিচ্ছি । শিশু নির্যাতনের ঘটনার বিচার চেয়ে প্রশাসনের সু-দৃষ্টি কামনা করেন ভুক্তভোগী পরিবার।