1. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  2. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  3. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০৪:০৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
“নব যৌবন এবং আমাদের সংস্কৃতি “ নব যৌবন এবং আমাদের সংস্কৃতি “ ন্যক্কারজনক  ঘটনার মধ্য দিয়ে যাত্রা শুরু হলো বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নতুন কমিটির পুলিশ আইন-শৃঙ্খলা রক্ষার পাশাপাশি মানবিকতায়ও নজির স্থাপন করেছে-ডিএমপি কমিশনার কাতারকে বাংলাদেশে বিনিয়োগের আহ্বান রাষ্ট্রপতির কাতারের সঙ্গে বাংলাদেশের ৫টি চুক্তি ও সমঝোতা স্মারক সাক্ষরিত পদ্মশ্রী পদক গ্রহণ করলেন বাংলাদেশের বন্যা প্রথম ধাপের উপজেলা নির্বাচনের প্রতীক বরাদ্দ আজ অবৈধ দখলদারদের কবল থেকে বনভূমি উদ্ধার করলেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে বাসের ধাক্কায় চুয়েটের দুই শিক্ষার্থী নিহত

কালিয়ায় ২ কোটি টাকা জামানত হারিয়ে গ্রাহকেরা ঘুরছেন দ্বারে দ্বারে!ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট লাপাত্তা!

  • সময় : বৃহস্পতিবার, ১০ জুন, ২০২১
  • ৩৮৬

মো: হাবিবুর রহমান,স্টাফ রিপোর্টার:

কালিয়ায় প্রায় ২ হাজার গ্রাহকের ৩ মাসের বিদ্যুৎ বিলের ৫ লক্ষাধিক টাকা এবং জামানতের ২ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে গা ঢাকা দিয়েছে উপজেলার চাচুড়ী বাজারের ব্যাংক এশিয়ার এজেন্ট খায়রুল বাশার। ব্যাংকে আমানতের টাকা জমা হয়নি এই খবর পেয়ে গ্রাহকেরা হতাশ হয়ে ভীড় করছেন ব্যাংকে। ব্যাংক থেকে গোপনে কম্পিউটার সরানো এবং ৫০হাজার টাকা ভাড়া বকেয়া পড়ায় ভবন মালিক ব্যাংকে তালা মেরে দিয়েছেন।

ব্যাংক এশিয়া সুত্রে জানা যায়, উপজেলার চাচুড়ী শাখাটি ২০১৯ সালের জুন মাসে স্থাপন হয়। স্থানীয় চন্দ্রপুর গ্রামের খায়রুল বাশার এজেন্ট হিসাবে নিয়োগ পান। বর্তমানে শাখাটিতে ডিপিএস, মেয়াদি আমানত ও সঞ্চয়ী হিসাব মিলে ১ হাজার ৩০০ গ্রাহক নিয়মিত লেনদেন করেন। এর মধ্যে বেশীরভাগই মেয়াদি আমানতের গ্রাহক। এয়াড়া প্রতি মাসে ২ হাজারেরও বেশী গ্রাহক বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করে থাকেন। চলতি বছরের ফেব্রুয়ারী মাস থেকে ব্যাংকটিতে পল্লী বিদ্যুতের বিল নেয়া শুরু হয়। আশেপাশের ৪ ইউনিয়নের প্রায় ২ হাজার গ্রাহক এখানে বিদ্যুৎ বিল জমা দেয়। মার্চ মাস থেকে বিদ্যুৎ বিলে বকেয়া আসতে থাকায় গ্রাহকেরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন জমাকৃত বিলের টাকা পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে জমা হয়নি। এই অবস্থা পরবর্তী এপ্রিল ও মে মাসে চলতে থাকে। বিদ্যুৎ বিলের ঘাপলার কারনে ধীরে ধীরে বের হতে থাকে অন্য জামানতের টাকার হিসাব। ব্যাংকিং পদ্ধতির বাইরে নিজ উদ্যোগে গ্রাহককে এককালীন জামানতে মাসিক বেশী অর্থ প্রদানের লোভ দেখিয়ে কয়েক’শ গ্রাহকের কাছ থেকে এককালীন জামানত নিয়ে ব্যাংকে জমা না দিয়ে নিজে হাতিয়ে নেন। এমনকি এজেন্ট অফিসে ১০ থেকে ১২ জন কর্মী নিয়োগ দিয়ে তাদের কাছ থেকে জনপ্রতি ২/৪ লক্ষ টাকা করে নিয়েছেন এজেন্ট কাম খায়রুল বাশার বলে জানান।

ডহর চাচুড়ী গ্রামের মৎসজীবি পিটু বিশ্বাস মাছ ধরে ৩ লক্ষ টাকা সঞ্চয় করেছিলেন বাড়ি বানানোর জন্য। লাখে মাসিক ৮’শ টাকা পাবেন এই আশায় স্ত্রী লাকিয়া’র নামে ৩ লক্ষ টাকা জামানত রেখেছিলেন। মঙ্গলবার (৮ জুন) ব্যাংকে এসে জানতে পারেন তার নামে ব্যাংকের হিসাবে কোন টাকাই জমা হয়নি। পিটু বিশ্বাস বলেন, ঘরের জন্য কিছু টাকা জমাইছিলাম ভাবছিলাম আরো কিছু জমায়ে ঘরটা তুলবো এখন আমার ঘর তোলার স্বপ্নই নস্ট করে দিলো এজেন্ট বাশার। চাচুড়ি গ্রামের কোহিনুর বেগম, আড়াই লক্ষ টাকা ব্যাংকে জমা রেখে দুই মাসে ইন্টারেস্ট পান। মে মাসে ইন্টারেস্টের টাকা নিতে এসে দেখেন ব্যাংকে তালা মারা, এজেন্ট হাওয়া। অসহায় কোহিনুর বলেন, ছেলের পাঠানো টাকা জমিয়ে অনেক কষ্টে টাকাগুলো জমা রেখেছিলাম এখন তো সবই হাওয়া। আমি কি আত্মহত্যা করবো নাকি?

এরকম ভাবে ডহর চাচুড়ি গ্রামের মফিজুর রহমান ১৫ লক্ষ,পুরুলিয়া গ্রামের জাহাঙ্গীর শেখ ১২ লক্ষ, হাসান শেখের দেড় লক্ষ সহ কয়েক’শ গ্রাহকের দুই কোটি জামানতের টাকার কোন হদিস নাই। ব্যাংক শুরুর পরে কর্মীদের চাকুরী দেবার নাম করে ২ থেকে ৪ লক্ষ টাকা করে নিয়েছে নিজস্ব কায়দায়। মাসিক লাভের কথা বলে হাতিয়ে নেয়া টাকার ব্যাপারে মুখ খুলতে শুরু করেছে কর্মীরা। এর মধ্যে ফারজানার কাছ থেকে ২ লক্ষ, ফজিলার কাজ থেকে ২ লাক্ষ, লাকি খানম আর অনিক নামের হিসাবে কাজ করা দুই কর্মীর কাছ থেকে ৪ লাখ টাকা নিয়েছে খায়রুল। এসব কর্মীরা এখন রাগে ক্ষোভে ফুসলেও বাইরের গ্রাহকের গালি শুনছেন।


ব্যাংকের এমন জালিয়াতিতে ক্ষুব্ধ বাজারের ব্যবসায়ীরা, চাচুড়ি বাজার বনিক সমিতির সভাপতি আলহাজ গোলাম মোস্তফা বলেন, ব্যাংকে মানুষ আস্থা নিয়ে টাকা জমা রাখে আর তা লুট হয়ে যায়,আমি প্রশাসনের কাছে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের আবেদন করছি। গ্রাহকের কোটি টাকা নিয়ে এজেন্ট পালায়ে গেল অথচ তা ধরতেই পারলো না ব্যাংকের কর্মকর্তা এটা দুঃখজনক। ব্যাংক এশিয়া কর্তৃপক্ষের দাবী,ব্যাংকের ভুয়া ভাউচার ছাপিয়ে সেই ভাউচারে গ্রাহকের টাকা হাতিতে নিয়েছে এজেন্ট বাশার। নড়াইল জেলা ম্যানেজার ফিরোজ আহম্মেদ বলেন, ব্যাংকের প্রকৃত ভাউচারে টাকা গ্রহন করলে গ্রাহক তা ফেরত পাবে। মূলতঃ এজেন্ট ব্যাংকে টাকা জমা হবার পরে রশীদ প্রিন্ট হয়ে বের হয়,এখানে অধিকাংশ ভাউচারই নকল।

ঢাকা থেকে আসা ব্যাংক এশিয়ার অডিটর আব্দুল্লাহ বাকী বলেন, আমরা গ্রাহকের অভিযোগ সংগ্রহ করছি,এখানে এজেন্ট যে ধরনের জালিয়াতি করেছে তার বিরুদ্ধে কতৃপক্ষ আইনগত ব্যবস্থা নেবে। ব্যাংক এশিয়ার রিলেশানশীপ কর্মকর্তা লিকু আহম্মেদ জানান,এজেন্ট বিদ্যুৎ বিলের টাকা জমা নিয়ে রশিদ দিলেও সে টাকা ব্য্ংাকে জমা করেনি। বুধবার পর্যন্ত এজেন্ট কর্তৃপক্ষ ৩২ লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়ার তথ্য পেয়েছি। এজেন্ট শাখাটিতে নিরীক্ষা কাজ চলছে।এদিকে চন্দ্রপুর গ্রামের ইমাদুল খানের ছেলে এজেন্ট খায়রুল বাশার এর সাথে মোবাইলে (০১৭১৩১৩৭৮৫০) ২দিন ধরে কল করে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তার নম্বরটি বন্ধ পাওয়া গেছে। পল্লীবিদ্যুৎ সমিতি কালিয়া’র ডিজিএম মো. মমিনুর রহমান বিশ্বাস বলেন, এলাকার প্রায় ২ হাজার গ্রাহক সেখানে বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করেন। মার্চ থেকে মে পর্যন্ত ওইসব গ্রাহকদের কাছ থেকে বিদ্যুৎ বিল বাবদ প্রায় ৫ লক্ষাধিক টাকা গ্রহন করলেও এজেন্ট সে টাকা জমা না দেয়ায় গ্রাহকদের বিদ্যুৎ বিল বকেয়া রয়েছে। ঘটনাটি উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।


সহকারী পুলিশ সুপার (কালিয়া সার্কেল) প্রনব কুমার সরকার বলেন, পুলিশ চাচুড়ী বাজারের এজেন্ট ব্যাংকিং বিষয়ে খোঁজ নিচ্ছে। এলাকার মানুষের অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪