স্বপ্ন দেখতে যতটা ভালোবাসি, ঠিক ততটাই স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করতে ভালোবাসি। এ জন্য বন্ধুরা অনেক সময় আমাকে স্বপ্নের ফেরিওয়ালাও বলে। আমি যে স্বপ্ন ফেরি করি! স্বপ্ন দেখি আকাশে ওড়ার, স্বপ্ন দেখি সুন্দর ভবিষ্যতের, স্বপ্ন দেখি ইচ্ছাগুলোকে রঙিন করার। অনেক স্বপ্নের ভিড়ে একটি স্বপ্ন বারবার উঁকি দেয়। দেশকে বিশ্বে পরিচিত করতে হবে। যার যার অবস্থান থেকে সমাজটাকে আরও সুন্দর করে সাজাতে। যেখানে একটি মানুষও অবহেলিত থাকবে না।
বিশেষ করে আমাদের বৃদ্ধা মা-বাবারা ও এতিম শিশুরা। দেশের অন্যান্য জেলা ও উপজেলা গুলোর মতোই আমাদের নরসিংদী জেলায় ও আমার নিজ উপজেলায় পলাশে এখনো অনেক বৃদ্ধা মা-বাবা ও ছোট ছোট কোমলমতি এতিম শিশুরা অবহেলিত হয়ে পড়ে আছেন। আমি চাই সেসকল মা-বাবা ও কোমলমতি এতিম শিশুদের সেবা করতে, যারা পরিবার থেকে-সমাজ থেকে অবহেলিত। আমি চাই কর্মের মাধ্যমে হাজারও মানুষের মাঝে বেঁচে থাকতে। এভাবেই বৃদ্ধাশ্রম ও এতিমখানা তৈরি করার বিষয়ে এ প্রতিবেদককে একান্ত সাক্ষাতকারে নিজের স্বপ্নের কথা গুলো জানাচ্ছিলেন পলাশ উপজেলার প্রথম শ্রেণির একজন ব্যবসায়ী মাকসুদুর রহমান।
তিনি বলেন, ছোট বেলা থেকেই আমার দুচোখ ভরা স্বপ্ন ছিল সমাজের অবহেলিত বৃদ্ধা মা-বাবা ও অবহেলিত শিশুদের পাশে দাঁড়ানোর। আমি একজন শ্রমিকের সন্তান। আমার বাবা জনতা জুট মিলে শ্রমিকের শ্রমিক ছিলেন। ছোট বেলা থেকেই দেখে এসেছি, আমার বাবা শ্রমিকদের দুঃখ-সুখের সাথী হয়ে পাশে দাড়াতেন। আমার বাবাই ছিল আমার জন্য সব থেকে বড় অনুপ্রেরণা। জনতা আদর্শ উচ্চ বিদ্যালয় থেকে আমার শিক্ষাজীবন শুরু হলেও উপজেলার সমবায় আদর্শ বিদ্যানিকেতন স্কুল থেকে এসএসসি পরীক্ষা দেই। এরপর পলাশ ইউরিয়া সার কারখানা কলেজ থেকে এইচএসসি পরীক্ষা দিয়ে নরসিংদীর সরকারি কলেজ ভর্তি হই। তারপর সেখান থেকে অনার্স পাস করে ঢাকা গিয়ে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং পাস করে কর্মজীবনে পদার্পণ করি।
এরপর থেকে আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয়নি। নিজের মেধা ও পরিশ্রম দিয়ে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হয়েছি। নিজে প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পর থেকেই ছোট বেলার সেই স্বপ্ন-যা আমি নিজের মাঝে ফেরি করে বেড়াই, সমাজে অবহেলিত বৃদ্ধা মা-বাবা ও কোমলমতি এতিম শিশুদের সেবা করার। তা বাস্তবায়ন করার জন্যই ইতিমধ্যে পৈতৃক জমি থেকে ১২ শতাংশ জমি বৃদ্ধাশ্রম ও এতিমখানার জন্য দিয়ে কাজ শুরু করেছি। তবে আমার এই বৃদ্ধাশ্রম ও এতিমখানা তৈরি করতে গেলে আরও প্রায় ৮ শতাংশ জমির প্রয়োজন।ইতিমধ্যে জমি ক্রয় করার জন্য প্রতিবেশী জমির মালিকদের সাথে কথা-বার্তাও ঠিক হয়েছে।
কিন্তু একটি মহল আমার এই বৃদ্ধাশ্রম ও এতিমখানা তৈরিতে বাধা প্রয়োগ করছে। সেক্ষেতে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগিতা পেলে অতি দ্রুত বৃদ্ধাশ্রম ও এতিমখানা তৈরি করার কাজটি শেষ করতে পারবে বলেও জানান মাকসুদুর রহমান।
এছাড়া তিনি আরও জানান, দেশে করোনা সংকট আসার পর থেকেই উপজেলার পরী সংগঠন নামে একটি সামাজিক সংগঠনের মাধ্যমে প্রতি সাপ্তাহে একবার প্রায় ৭০০ দরিদ্র মানুষের মাঝে পাঁচ কেজি করে চাল,ডাল,আলু ও নিত্য প্রয়োজনীয় খাদ্যসামগ্রী বিতরণ অব্যাহত রেখেছেন। যা দেশে করোনা সংকট থাকাকালীন সময় পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে।