রাজধানীর সন্নিকটে সাভারের আশুলিয়ায় ৬ষ্ঠ শ্রেণীর এক শিক্ষার্থীকে (১৩) সাত দিন আটকে রেখে ধর্ষণের অভিযোগে দুই বখাটে যুবককে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। সোমবার (১৫ জুন) রাতে আশুলিয়ার শুটিংবাড়ি এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদেরকে গ্রেফতার করে আশুলিয়া থানা পুলিশ। এর আগে গত ৬ জুন ওই ছাত্রীকে হত্যার হুমকি দিয়ে আশুলিয়ার শুটিংবাড়ি থেকে কাঠগড়া এলাকায় তুলে নিয়ে যায় কাজল ও মাসুদ নামের দুই বখাটে। সেখানে তাকে সাতদিন আটকে রেখে নিয়মিত ধর্ষণ করা হয়। পরে ধর্ষকের চাচা শ্বশুর হিমেল ওই ছাত্রীকে ধর্ষণের হাত থেকে বাঁচানোর আশ্বাস দিয়ে শুটিংবাড়ি এলাকার নির্জন একটি বাড়িতে নিয়ে সে নিজেও তাকে ধর্ষণ করে। পরে ধর্ষিতার মা বাদি হয়ে আশুলিয়া থানায় ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, আশুলিয়া থানার শুটিংবাড়ি এলাকার গেল্লা মিয়ার ছেলে মো. কাজল (২৬) ও কাজলের চাচা শ্বশুর পাবনার সুজানগর থানার হিমেল (২২)। এছাড়া ধর্ষণের সহযোগী ময়মনসিংহ জেলার কোতোয়ালি থানার মাসুদ (২১) পলাতক রয়েছে।
মামলা সূত্র জানায়, ৬ষ্ঠ শ্রেণি পড়–য়া ওই শিক্ষার্থী করোনা ভাইরাসের কারণে স্কুল বন্ধ দেয়ায় গত দুই মাস আগে গ্রামের বাড়ি থেকে আশুলিয়ার শুটিংবাড়ি এলাকায় তার মায়ের কাছে আসে। পরে গত ৬ জুন পোশাক শ্রমিক মা তার মেয়েকে বাসায় রেখে সকালে কারখানায় চলে যান। দুপুরে বাসায় ফিরে দেখেন তার মেয়ে বাসায় নেই। তাকে বিভিন্ন স্থানে খোঁজাখুঁজি করেও কোথাও পাওয়া যায়নি। হঠাৎ গত ১৩ জুন রাতে আসামি কাজলের স্ত্রী এসে জানায় তার মেয়ে কাজলের বাসায় আছে। এসময় মেয়েকে আনতে কাজলের বাসায় গেলে কাজল ও মাসুদ কথা বলতে দিবেনা মর্মে তাকে মারধর করে নীলা ফুলা জখম করে।
পরে মেয়েকে নিয়ে বাসায় আসলে ওই মেয়ে তার মাকে জানায়, গত ৬ জুন সকাল সাড়ে ৯ টায় মাসুদের সহায়তায় কাজল তাকে হত্যার হুমকি দিয়ে আশুলিয়ার কাঠগড়া একটি বাসায় নিয়ে যায়। সেখানে তাকে ৭ দিন আটকে রেখে নিয়মিত ধর্ষণ করে কাজল। পরে গত ১৩ জুন রাতে কাজলের চাচা শ্বশুর হিমেল ওই ছাত্রীকে কাজলের হাত থেকে বাঁচতে হলে তার সাথে যেতে বলে। পরে নাবালক মেয়েটি তার কথায় বিশ্বাস করে শুটিংবাড়ি এলাকায় গেলে সেখানে একটি নির্জন বাড়িতে নিয়ে জোরপূর্বক ধর্ষণ করে বখাটে হিমেল।
এ বিষয়ে আশুলিয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) সুদীপ কুমার গোপ জানান, ধর্ষণের শিকার ওই ছাত্রীর মায়ের দায়ের করা মামলায় দুই আসামিকে গ্রেফতার করে আদালতে পাঠানো হয়েছে। এদিকে ডাক্তারি পরীক্ষার জন্য মেয়েটিকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টার (ওসিসি) পাঠানো হয়েছে। এ ঘটনায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে আশুলিয়া থানায় পৃথক দুটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।