মোঃ নাজমুল ইসলাম সবুজ শরণখোলা প্রতিনিধিঃ
করোনা মহামারী মোকাবেলায় যখন ব্যস্ত দেশ, তখন শীতিল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সুযোগে সুন্দরবনের বাংলাদেশ অংশে হরিণ শিকার করে মাংস বিক্রি করছে একটি চক্র। গবেষকরা বলছেন, বনে শিকার বন্ধে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে হবে।
জানা গেছে, সুন্দরবন সংলগ্ন খুলনার দাকোপ এলাকায় হরহামেশা চলছে হরিণের বিক্রি। স্থানীয়রা জানান, পূর্ব ও পশ্চিম সুন্দরবনের সুতারখালী, কালাবগী, নলিয়ান, কালিনগর, কৈলাশগঞ্জ, রামনগর, বানিশান্তা, ঢাংমারী, খেজুরিয়া ও লাউডোব উপজেলায় চিহ্নিত হরিণ শিকারি চক্রের সদস্যরা বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। গত কিছুদিন ধরে একের পর এক হরিণ শিকার করছে চক্রটি।
দাকোপের বাসিন্দারা জানান, গোপনে বনে ঢুকে শিকার করা হরিণ লোকালয়ে নিয়ে আসে চক্রটির সদস্যরা। পরে আগে থেকেই নির্ধারিত ক্রেতার কাছে প্রতিকেজি ৫০০-৬০০ টাকায় বিক্রি করছে হরিণের মাংস। কখনো বনবিভাগ ও কোস্টগার্ডের হাতে মাংস ও চামড়াসহ চক্রটির সদস্যরা ধরা পড়লেও থেমে নেই হরিণ শিকার।
আর স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা ওইসব শিকারি থেকে হরিণের মাংস কিনে থাকেন। এতে সদিচ্ছা থাকলেও শিকারিদের থামাতে পারছেন না বাসিন্দারা। জামাল শেখ এবং আল মাসুদ শেখ নামের দুই বাসিন্দা জানান, শিকারি চক্রের সদস্যদের নামে একাধিক মামলাও আছে। কেউ কেউ আটক হলেও, অনেকেই পালিয়ে যায়। আবার আটক অনেকে ছাড়া পেয়ে ফিরে আবারো শিকারে যুক্ত হয়।
সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের ঢাংমারী স্টেশন কর্মকর্তা আনোয়ার হোসেন বলেন, হরিণ শিকার রোধে নিয়মিত টহল জোরদার রয়েছে। চোরা শিকারিদের বিরুদ্ধেও অভিযান অব্যাহত আছে। ধরা পড়লে বন্যপ্রাণী আইনে আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।
শনিবার দুই শিকারিকে আটক করে বাংলাদেশ বনবিভাগ।
এদিকে ৩ মে, শনিবার বাগেরহাটের শরণখোলার ডিমের চর থেকে হরিণ শিকারের প্রস্তুতিকালে দুই শিকারিকে আটক করে বনবিভাগ। এ সময় শিকারে ব্যবহার করা ১৫শ ফুট নাইলনের দড়ির ফাঁদ ও একটি ট্রলার জব্দ করা হয়।
বন্যপ্রাণী গবেষকরা বলছেন, শিকার চলতে থাকলে সুন্দরবনের চিত্রল মায়াবী হরিণ বিলুপ্ত হতে পারে। এতে অস্তিত্ব সংকটে পড়বে বনের নিরাপত্তারক্ষী বেঙ্গল টাইগারও। বাংলাদেশে বন্যপ্রাণী গবেষক নাসির উদ্দিন বলেন, দীর্ঘদিন লকডাউন এবং স্বাভাবিক কাজকর্ম না থাকার কারণে বেপরোয়া হয়ে উঠতে পারে শিকারিরা। কাজেই বাঘের প্রধান খাদ্য হরিণসহ বন্যপ্রাণী শিকার রোধে সংশ্লিষ্টদের আরো সজাগ থাকতে হবে।