ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আবাসিক হল খুলে পরীক্ষা
নেওয়ার বিষয়ে উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামানের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন কেন্দ্রীয় ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নেতারা। এই বৈঠকে স্বাস্থ্যবিধি মেনে শুধু পরীক্ষার্থীদের জন্য হল সীমিত পরিসরে খুলে দেওয়া, অথবা পরীক্ষার তারিখ পেছানোর বিষয়ে আলোচনা হয়েছে।
২৪ ডিসেম্বর, বৃহস্পতিবার দুপুর ২টার দিকে উপাচার্যের অফিসে এ বৈঠক শুরু হয়। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় নির্বাহী সংসদের যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক শামস-ই-নোমান, সাংগঠনিক সম্পাদক সাদ বিন কাদের চৌধুরী, শিক্ষা ও পাঠচক্র সম্পাদক আব্দুল্লাহ আল মাসুদ (লিমন), ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস এবং সাধারণ সম্পাদক সাদ্দাম হোসেনসহ আরো অনেকেই।
শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যার সমাধান না করে পরীক্ষা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান বলেন, সংশ্লিষ্ট বিভাগগুলো শিক্ষার্থীদের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনা করে আলোচনাসাপেক্ষে পরীক্ষা গ্রহণ করবে। এতে কোনো জবরদস্তির সুযোগ নেই। শিক্ষার্থীদের কল্যাণই প্রথম কাজ। শিক্ষার্থীদের কোনোভাবেই ঝুঁকিতে ফেলা যাবে না।
কয়েকটি বিভাগ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ না করেই পরীক্ষার তারিখ নির্ধারণ করেছে জানালে ঢাবি উপাচার্য বলেন, আপনারা বিভ্রান্ত হচ্ছেন কিংবা বিভ্রান্ত করার চেষ্টা করছেন। বিভাগগুলো ডিসেন্ট্রালাইজড। পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে সংশ্লিষ্ট বিভাগ ও অনুষদের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরাই ভালো বুঝবেন। তারা নিজেদের মতো করে সিদ্ধান্ত নেবেন। আবাসিক শিক্ষার্থীদের থাকার ব্যবস্থা বিবেচনায় না রেখে হল না খুলেই অ্যাকাডেমিক কাউন্সিলে পরীক্ষা গ্রহণ করার সিদ্ধান্তের বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, ‘আগেই বলেছি— যদি সম্ভব হয়, তবে পরীক্ষা গ্রহণ করবে। না হলে করবে না।’
উল্লেখ্য, হল না খুলেই পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়ার তিন দিন পর গত ১৩ ডিসেম্বর স্বাস্থ্যবিধি মেনে হল খুলে দিয়ে পরীক্ষা নেওয়ার দাবি জানিয়ে উপাচার্য বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ। হলে থাকার ব্যবস্থা নিশ্চিত না করে এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেওয়া একপাক্ষিক, শিক্ষার্থীদের স্বার্থের বিপ্রতীপ, বিদ্যমান বাস্তবতায় অনুপযুক্ত সমাধান এবং কোনো অবস্থাতেই অভিভাবকসুলভ নয় বলে স্মারকলিপিতে উল্লেখ করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতির জন্য গত মার্চ মাস থেকে বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে অনলাইনে ক্লাস কার্যক্রম চললেও পরীক্ষা নেওয়া সম্ভব হয়নি। এতে শিক্ষার্থীদের সেশন জটে পড়ার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে ৪৩তম বিসিএস পরীক্ষার আবেদন শুরু হয়েছে। কিন্তু অনার্স শেষ না করতে পারায় আবেদন করতে পারছেন না বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থী। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীরা দ্রুত সময়ের মধ্যে পরীক্ষা নেওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে দাবি জানালে অবশেষে বিশ্ববিদ্যালয় একাডেমিক কাউন্সিলের সভায় আবাসিক হল বন্ধ রেখে অনার্স শেষ বর্ষ এবং মাস্টার্সের পরীক্ষা নেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। এরপর হল খুলে পরীক্ষা নেওয়ার দাবিতে শিক্ষার্থী ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে দাবি জোরালো হয়।