বরগুনায় এক যুবককে ফাঁদে ফেলে জিম্মি করে চাঁদা নেয়ার সময় মিজানুর রহমান সুমন গোলদার (৪২) নামের এক ব্যক্তিকে আটক করেছে পুলিশ। জিম্মি হওয়া যুবক মামুন(২৬) কে উদ্ধার করা হয়েছে। মামুন পাথরঘাটা সদর ইউনিয়নের হরিণঘাটা এলাকার তোফাজ্জল মাস্টারের ছেলে। এ ঘটনায় চম্পা নামের এক নারী ও লিমন নামের অপর একজনকেও আটক করা হয়েছে।
বরগুনা থানা পুলিশ সূত্র জানায়, বরগুনার পৌরশহরের পিটিআই এলাকার চম্পা নামের ওই নারীর সাথে পাথরঘাটার হরিণঘাটার মামুনের ভার্চুয়াল সখ্যতা তৈরি হয়। এর সূত্র ধরে শুক্রবার সকালে মামুনকে দেখা করার কথা বলে বরগুনায় ডেকে আনে চম্পা। মামুনকে নিয়ে সে ক্রোক এলাকার লিমনদের বাড়িতে নিয়ে লিমনের সহায়তায় একটি কক্ষে আবদ্ধ করে।
খোঁজ নিয়ে বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, সুমন গোলদার বরগুনার বামনা উপজেলার এলাকার বাসিন্দা। সে সাংবাদিক পরিচয়ে বিভিন্ন সময়ে বামনা এলাকায় চাঁদাবাজি করে আসছেন। এ ছাড়াও চম্পা নামের ওই নারীকে দিয়ে সে লোকজনকে ভার্চুয়াল ব্লাকমেইল করে টাকা আদায় করে থাকেন।কয়েকবছর আগে সুমন গোলদারের ইয়াবা সেবনে একটি ভিডিও ও চাঁদা দাবির একটি অডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়।
বামনা উপজেলা জাতীয়তাবাদী যুবদলের বর্তমানে দায়িত্বপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের পরিচয় দিয়ে থাকেন। এছাড়াও ২০১৮ সালে সুমন বরগুনা জেলা সাংবাদিক ফোরামের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন।বিভিন্ন পত্রিকার স্টাফ রিপোর্টারসহ নানা গণমাধ্যমের পরিচয়ে তিনি এসব অপকর্ম করে আসছেন।
এসময় বরগুনার বামনা এলাকার সুমন গোলদার ওই বাড়িতে গিয়ে মামুনকে পুলিশ পরিচয়ে মারধর করে ৫০ হাজার টাকা চাঁদা দাবি করে। আত্মীয়-স্বজনদের সহায়তায় দুই দফায় সুমনের বিকাশ একাউন্টে ১২ হাজার দেয় মামুন। এরপরও জিম্মিকারি সুমন ও চম্পা আরো ২০ হাজার টাকা দাবি করে।বিষয়টি জানার পর মামুনের খালু জাকির হোসেন কালাম বরগুনা সদর থানা পুলিশকে ঘটনাটি জানায়। পুলিশ অভিযান চালিয়ে ডক্টরর্স কেয়ার ক্লিনিকের সামনে বিকাশ থেকে টাকা ক্যাশ আউটের সময় হাতেনাতে সুমনকে আটক করে। পরে অভিযান চালিয়ে পিটিআই সড়ক থেকে চম্পা ও ক্রোক থেকে লিমনকে আটক করে।
বামনা এলাকার জ্যেষ্ঠ সাংবাদিক মিজানুর রহমান মজনু্ জানান, উপজেলার আনাচে-কানাচে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপকর্মের সাথে সুমন যুক্ত। সাংবাদিকতা দিয়ে শুধু চাঁদাবাজি নয় তিনি বামনা উপজেলার একজন স্বনামধন্য ইয়াবা ব্যবসায়ী ও ইয়াবাসেবী।
বরগুনা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি তদন্ত) শহিদুল ইসলাম জানান, এ ঘটনায় মামুনের মা কহিনুর বেগম বাদি হয়ে আটক তিনজনের বিরুদ্ধে বরগুনা থানায় একটি মামলা দায়ের করেছেন। আটক ব্যক্তিদের আদালতে সোপর্দ করা হবে।