ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) এক ছাত্রী ধর্ষণ মামলার রায়ে একমাত্র আসামি মজনুকে যাবজ্জীবন কারাদন্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ বৃহস্পতিবার ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোসাম্মৎ কামরুন্নাহার এ রায় ঘোষণা করেন।
রায়ে সন্তুষ্ট প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আফরোজা ফারহানা আহম্মেদ অরেঞ্জ বলেন, ‘ঢাবি শিক্ষার্থী ধর্ষণ মামলার একমাত্র আসামি মজনুর যাবজ্জীবন কারাদন্ড দেওয়ায় আমরা সন্তুষ্ট। এ রায়ে আমরা ন্যায় বিচার পেয়েছি’।
মজনুর আইনজীবী (সরকার থেকে নিয়োগপ্রাপ্ত) রবিউল ইসলাম বলেন, ‘রায়ে আমরা ন্যায় বিচার পাইনি। রায়ের বিরুদ্ধে আমরা উচ্চ আদালতে যাবো’।
এরআগে ১২ নভেম্বর ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোসাম্মৎ কামরুন্নাহার উভয়পক্ষের যুক্তি উপস্থাপন শেষে রায় ঘোষণার জন্য এদিন ধার্য করেন।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে রাজধানীর কুর্মিটোলায় বাসস্ট্যান্ডের পেছনে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে ওই ছাত্রীকে ধর্ষণ করা হয় বলে মামলার এজাহারে উল্লেখ করা হয়।
মামলার ২৪ জনের মধ্যে ২০ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ শেষ হয়েছে। ১৩ কার্যদিবসে মামলার বিচার কার্যক্রম শেষ হয় বলে আদালত সূত্রে জানা যায়।
এরআগে মজনুকে আজ সকালে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করা হয়।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৫ জানুয়ারি বিকেল সাড়ে ৫টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বাসে চড়ে সন্ধ্যা ৭টার দিকে রাজধানীর কুর্মিটোলা বাসস্ট্যান্ডে নামেন ওই ছাত্রী। এরপর অজ্ঞাত এক ব্যক্তি তার মুখ চেপে ধরে সড়কের পেছনে নির্জন স্থানে নিয়ে গিয়ে ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতন করে।
নির্যাতনের একপর্যায়ে ওই ছাত্রী জ্ঞান হারিয়ে ফেলে । ডাক্তারি পরীক্ষায় নির্যাতনের শিকার ছাত্রীর শরীরের বিভিন্ন জায়গায় ক্ষতচিহ্ন পাওয়া গেছে। রাত ১০টার দিকে জ্ঞান ফিরলে নিজেকে একটি নির্জন জায়গায় আবিষ্কার করেন ওই ছাত্রী। পরে সিএনজি অটোরিকশা নিয়ে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে যান তিনি। তাকে ওইদিন রাত ১২টার দিকে ঢামেক হাসপাতালের ওয়ান স্টপ ক্রাইসিস সেন্টারে (ওসিসি) ভর্তি করা হয়।
পরদিন সকালে অজ্ঞাত ব্যক্তিকে আসামি করে ওই শিক্ষার্থীর বাবা ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা করেন। মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশকে (ডিবি উত্তর) তদন্তের দায়িত্ব দেয়া হয়। পরে ৮ জানুয়ারি এ মামলার একমাত্র আসামি মজনুকে গ্রেফতার করে র্যাব। ৯ জানুয়ারি সাত দিনের রিমান্ডে নিয়ে মজনুকে জিজ্ঞাসাবাদ করে পুলিশ। ১৬ জানুয়ারি ধর্ষণের দায় স্বীকার করে ফৌজদারি কার্যবিধি ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন অভিযুক্ত মজনু।
১৬ মার্চ ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে মজনুর বিরুদ্ধে চার্জশিট দাখিল করেন মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ডিবি পুলিশের পরিদর্শক আবু বক্কর।
২৬ আগস্ট ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৭ এর বিচারক বেগম মোসাম্মৎ কামরুন্নাহার ভার্চুয়াল আদালতে মজনুর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করেন।