গাজীপুর মহানগরে সাংগঠনিক কোনো কার্যক্রম না থাকায় দিনদিন সমর্থক হারাচ্ছে জাতীয় পার্টি। দলীয় নেতাদের মাঝে আবার বেড়েছে গ্রুপিং, দ্বন্দ্ব ও কোন্দল। রাজনীতির মাঠে টিকে থাকতে অন্য ঘর খুঁজছেন নেতা-কর্মীরা।
গাজীপুর মহানগরে জাতীয় পার্টির দুটি কমিটি থাকলেও কোনো কার্যক্রম দেখা যাচ্ছে না। দলটির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের মৃত্যুর পর কোন্দলে জড়িয়ে পড়েছেন দুই কমিটির নেতা-কর্মীরা। দুটি কমিটির একটিতে রয়েছেন সভাপতি আব্দুস সাত্তার ও সাধারণ সম্পাদক জয়নাল আবেদীন। অপর কমিটিতে ছিলেন হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের সাবেক স্বাস্থ্য উপদেষ্টা এমএম নিয়াজ উদ্দিন। এরশাদের মৃত্যুর পর তার পদত্যাগে জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মীরা নিষ্ক্রিয় হয়ে পড়েছে। অপরদিকে জেলা কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের মৃত্যুর পর জেলায় জাতীয় পার্টির কার্যক্রম নেই বললেই চলে।
চলমান করোনাভাইরাস সংক্রমণ রোধে ও সহায়তায় দলটির কোনো কর্মকাণ্ড চোখে পড়েনি। ফেসবুকসহ অন্যান্য সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমেও তাদের দেখা মেলেনি। করোনায় লকডাউনে গাজীপুরে কোনো জাপা নেতাকে অসচ্ছল, গরিব ও দিনমজুরের পাশে দাঁড়াতেও দেখা যায়নি। যার ফলে তৃণমূলের অসচ্ছল ও গরিব সমর্থক ও কর্মীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।
দলীয় সূত্রে জানা যায়, কমিটির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতা-কর্মীদের মধ্যে কোনো সমন্বয় নেই। তারা নিজ বলয়ের কিছু নেতা-কর্মীদের বাইরে কোনো যোগাযোগ রাখেন না। দ্বন্দ্বের কারণে গাজীপুর মহানগর ও জেলা জাতীয় পার্টি দিন দিন অস্তিত্ব সংকটে পড়ছে। গাজীপুরে শ্রমিক নেতা আহসান উল্লাহ মাস্টারের হত্যাকারী টঙ্গীর নুরুল ইসলাম দীপুকে বিদেশে পলাতক থাকা অবস্থায় জাতীয় পার্টি কেন্দ্রীয় কমিটিতে স্থান দেয়ায়ও গাজীপুর জাতীয় পার্টিতে কোন্দল ব্যাপক আকার ধারণ করে।
কয়েকজন ত্যাগী জাপা নেতা জানান, গাজীপুরে এক সময় জাতীয় পার্টির যৌবন ছিল। সাংগঠনিক কার্যক্রম অনেক শক্তিশালী ছিল। গাজীপুর জাপার তৃণমূলের ত্যাগী নেতারা এখন রাজনীতির মাঠে টিকে থাকতে অন্য ঘর খুঁজছেন। এমনকি অনেক নেতা-কর্মী লবিংও চালিয়ে যাচ্ছেন।
মহানগর জাতীয় পার্টির সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসরাফিল মিয়া জানান, নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের খোঁজ কেউ তেমন একটা রাখেন না। নিজেদের ব্যক্তিগত কাজ ছাড়া তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন না কেউ।
ফলে জাপার রাজনীতি দিনদিন সমর্থকশূন্য হয়ে পড়ছে। জাতীয় পার্টির সাংগঠনিক কাঠামো গড়ে তোলার জন্য আমাদের প্রস্তুতি ছিল। কিন্তু করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ায় তা আর সম্ভব হয়নি।