ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে অপরিকল্পিত ভাবে নদী ড্রেজিংয়ের কারণে মেঘনা তীরবর্তী বেশ কয়েকটি গ্রাম নদী গর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। অনুসন্ধানে জানা গেছে, মেঘনা নদীতে সরকারি নিয়ম নীতি না মেনে, ছয়টি ড্রেজার বসিয়ে প্রতি দিন লক্ষ লক্ষ ফুট বালু উত্তোলন করছেন নরসিংদী জেলার বালু মহলের ইজারাদার আঃ মতিন সরকার। জানা গেছে, ড্রেজিংয়ের জন্য আরো কয়েকটি ড্রেজার বাড়ানোর পায়তারা করছেন তিনি। সূত্র জানিয়েছে, পরিবেশ আইন ভঙ্গ করে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের চরলাপাং মৌজা ও নরসিংদীর রায়পুরা উপজেলার মির্জাচর মৌজার মেঘনা নদী থেকে বালি উত্তোলন করছেন মতিন ইজারাদারের লোকজন। জানা যায়, শুক্রাবার সকালে এই বালি উত্তলনে ক্ষিপ্ত হয়ে চারটি নৌকা বুঝাই করে নদী ভাঙ্গনের শিকার একদল গ্রাম বাসী ড্রেজারে কর্মরত শ্রমিকদের উপর অর্তকীত হামলাও চালায়। এবং এই বালি উত্তোলন বন্ধ করতে তাদের নিষেধও করে গ্রামবাসী। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, মেঘনা নদীতে ড্রেজার দ্বারা অপরিকল্পিতভাবে বালু উত্তোলনের ফলে নবীনগরের চরলাপাং,চিত্রি, কেদারখলা,সাহেবনগর,মানিকনগর গ্রামে ও রায়পুরার মির্জাচর, শান্তিপুর, বাশগারি,আজিজপুর গ্রাম গ্রাম গুলিতে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। এবং ভাঙ্গনের মাত্রা দিন দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। ইতিপুর্বেও গ্রাম গুলির বড় অংশ নদী গর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। প্রতি বছরই বর্ষা মৌসুমে অপরিকল্পিত ভাবে ড্রেজার দিয়ে সিন্ডিকেটে বালু ব্যবসায়ীরা বালু উত্তোলন করার ফলে গ্রাম গুলি ভেংগে যাচ্ছে, সর্বহারা হচ্ছেন এসব গ্রামের সাধারণ মানুষ। স্থানীয় চরলাপাং গ্রামের ইউপি সদস্য নূরে আলম জানান, ৬টি মৌজা নিয়ে সৃষ্ট চরলাপাং গ্রামটি তিনটি মৌজা ১,২,৩ সীটটি আগেই বিলীন হয়ে গেছে। বর্তমানে চরলাপাং মৌজার ৪, ৫, ৬ নং সীটের মধ্যে কিছু অংশ গত গত কয়েকদিনে বিলীন হয়ে গেছে। বাকি অর্ধেকাংশ নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার পথে। আরো প্রায় এক কিলোমিটার এলাকা নদী ভাঙ্গন কবলের শিকারের মধ্যে আছে। বর্তমানে গ্রামের যে অংশটুকু ভাংগনে আশংকায় আছে সে সকল অংশের মানুষ তাদের বাড়ি ঘর সরিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। এই নিয়ে অনেক অভিযোগও করা হয়েছে প্রশাসনকে।এসব অভিযোগ কোন কাজেই আসে না। এ বিষয়ে বালু মহলের ইজারাদার আ: মতিন সরকার জানান, আমি সরকারি ভাবে বালু মহল ইজারা নিয়েই রায়পুরা র মির্জাচরের মেঘনা নদী থেকে ড্রেজারে বালু উত্তোলন করছি। স্থানীয়রা জানান, জরুরী ভিত্তিতে এই ড্রেজিং বন্ধ না করলে আগামী এক-দুই বছরে মধ্যে মেঘনা নদীর তীরে অবস্থিত গ্রাম গুলির অস্তিতই পাওয়া যাবে না। বাংলাদেশের মানচিত্র থেকে কয়েকটি গ্রাম হারিয়ে যাবে। নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়া অসহায় পরিবারগুলো তাদের সহায় সম্বল হারিয়ে খোলা আকাশের নিচে বেচেঁ থাকার লড়াই করেছে। জরুরী ভিত্তিতে এই ইজারা বন্ধ করে ও তাদের এই কষ্টের জীবন যাপনের চিত্র তুলে ধরে গ্রাম গুলি রক্ষায় সরকারের আশু পদক্ষেপ গ্রহনের জন্য আকুল আবেদন জানান স্থানীয় ভুক্তভোগীরা। উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ মাসুম বলেন, নদী ভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারগুলোকে সরকারিভাবে আর্থিক অনুদানসহ পূর্ন:বাসন ও স্থানান্তরিত পরিবারগুলোকে খাদ্য সহায়তা প্রদান করা হয়ে থাকে। তিনি বলেন, জেলা প্রশাসক মহোদয় দুই এলাকার অমিমাংসিত সীমানা চিহৃত করনের ব্যবস্থা করার জন্য ভূমি রেকর্ড ও জরীপ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরারব পত্র দিয়েছেন। তাই আশা করা যায় সীমানা সমস্যার ও সমাধান হবে।