ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরে এক শিক্ষকের প্রাইভেট পড়ানোর কক্ষে সংঘটিত অনৈতিক ঘটনার পর সেই স্কুলের আশপাশে সব ধরনের প্রাইভেট পড়ানো নিষিদ্ধ করেছে স্কুল কর্তৃপক্ষ। শনিবার স্কুলের প্রধান
শিক্ষকের সভাপতিত্বে ডাকা জরুরি এক সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
জানা গেছে, নবীনগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের পেছনে বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক কাজী ওয়াজেদ ওল্লাহ জসীমের প্রাইভেট পড়ানোর একটি টিনের ঘর রয়েছে (ভাড়া করা)। সেখানে তিনি শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়িয়ে থাকেন।
ঘটনার দিন গত বৃহস্পতিবার (২০ অগাস্ট) ওই সহকারী প্রধান শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে ওই ঘরটিতে
দুজন ছাত্র-ছাত্রীকে আপত্তিকর অবস্থায় আটক করে প্রতিবেশীরা। একপর্যায়ে তাদের ছেড়ে দেওয়া হয়।
কিন্তু শিক্ষকের অনুপস্থিতিতে তালাবদ্ধ ওই ঘরে কিভাবে দুই ছাত্র-ছাত্রী প্রবেশ করল- এ নিয়ে শুরু হয়
কানাঘোষা। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও সংশ্লিষ্টরা।উদ্ভূত পরিস্থিতিতে শনিবার বিদ্যালয়ের শিক্ষক মিলনায়তনে এক জরুরি সভায় অদূর ভবিষ্যতে বিদ্যালয়ের আশপাশে শিক্ষকদের প্রাইভেট পড়ানো সর্বসম্মতভাবে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়।
এ বিষয়ে রোববার বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক ওয়াজেদ উল্লাহ জসীমের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
প্রধান শিক্ষক আবু মোছার কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কোন মন্তব্য করতে রাজি হননি।
তবে জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা স্বীকার করে তিনি বলেন,’প্রাইভেট পড়ানো সরকারি ভাবেই সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ। তাই সরকারিবিধিবিধানের বাইরে যাতে কোন কর্মকাণ্ড না হয়, সভায় সে বিষয়ে সর্বসম্মত ভাবে কঠোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
‘প্রতিবেশীরা জানান, নবীনগর সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়ের আশপাশে অসংখ্য শিক্ষক ঘর ভাড়া নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে প্রকাশ্যে ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত নির্বিঘ্নে প্রাইভেট ও কোচিং করাচ্ছেন।
করোনার কারণে কয়েক মাস এসব বন্ধ থাকলেও চলতি মাস থেকে সেগুলো আবারও সীমিত
আকারে শুরু হয়েছে।অভিভাবকদের অভিযোগ, অর্থলোভী কোন কোন শিক্ষক এক ব্যাচে ৩০
থেকে ৪০ জন ছাত্র-ছাত্রী নিয়ে স্কুলের ক্লাসের আদলে প্রকাশ্যে প্রাইভেট পড়ালেও, এতদিন এসব দেখার কেউ ছিল না।নবীনগরের মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. মোকাররম হোসেন বলেন,স্কুলের আশপাশে প্রাইভেট পড়ানোর বিষয়টি আমার জানা নেই।
আর যেখানে প্রাইভেট কোচিং নিষিদ্ধ, সেখানে ৩০/৪০ জন করে এক ব্যাচে কিভাবে প্রাইভেট পড়ানো হয়? এসব বিষয়ে খেঁাজ নিয়ে অবশ্যই প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
প্রাইভেট পড়ানোর কক্ষে সংঘটিত ঘটনাটির বিষয়ে তিনি বলেন, ঘটনাটি আমি শোনার পরই প্রধান শিক্ষককে এ বিষয়ে কঠোর ব্যবস্থা
নিতে নির্দেশ দিয়েছিলাম।