বরিশালের উজিরপুরে যৌতুকের দাবীতে স্বামী,শশুর,শাশুরী কর্তৃক ৩ মাসের অন্তঃস্বত্তা নারীকে মারধর, আহার বন্ধ ও খুন্তির ছেকা দিয়ে মধ্যযুগীয় কায়দায় নির্যাতন করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
মামলা ও ভুক্তভোগী সুত্রে জানা যায়- উপজেলার বামরাইল ইউনিয়নের হস্তিশুন্ড গ্রামের মামুন হাওলাদারের পালিত ছেলে হৃদয় মল্লিকের সাথে একই গ্রামের মৃত কুদ্দুস ফকিরের মেয়ে হতদরিদ্র মিতু(১৯) এর ৮ মাস পূর্বে প্রেমের সর্ম্পকের মাধ্যমে বিবাহ হয়। জানা যায় মিতুর বাবা নেই এবং মাতা মানসিক প্রতিবন্ধী। তাই আশ্রয় নিয়েছিল হস্তিশুন্ড গ্রামের চাঁচাত নানা ইউসুফ মোল্লার বাড়ীতে।
সেখানে থেকে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে হৃদয়ের সাথে প্রেমের সম্পর্ক হয়। পরে দুই পক্ষের সমঝোতার মাধ্যমে তাদের বিবাহ হয়। এদিকে হৃদয়ও মামুনের বাড়ীতে আশ্রিতা হিসেবে থাকত। হৃদয়ের প্রকৃত বাবা একই এলাকার পান্নু মল্লিক।
বিবাহের পর থেকেই যৌতুকের দাবীতে মিতুর উপর শশুর মামুন হাওলাদার(৫০),শাশুরী মারুফা বেগম(৪০),স্বামী হৃদয় মল্লিক(২৫) অমানুষিক নির্যাতন চালিয়ে আসছে। হতদরিদ্র মিতুর সুখের দিকে তাকিয়ে আশ্রয়দাতা নানা নগদ ১ লক্ষ টাকা দেয়। তাতেও ঐ যৌতুকলোভীদের তৃপ্তি মিটিনি। এরই ধারাবাহিকতায় ১১ আগষ্ট মঙ্গলবার দুপুর দেড় টার দিকে স্বামীর স্বপিরবার মিলে মিতুর নানাবাড়ী থেকে আরো ২ লক্ষ টাকা যৌতুক এনে দিতে বলে।
এতে রাজী না হওয়ায় মিতুকে গরম খুন্তি দিয়ে হাতের উপর আঘাত করে এবং সকলে মিলে লাঠি দিয়ে শরীরের বিভিন্ন স্থানে পিটিয়ে গুরুতর আহত করে বাড়ী থেকে তাড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় সাংবাদিকরা ঘটনাস্থল পৌছলে তাদের কাছে অকোপটে বিষয়টি স্বীকার করে নির্যাতিতা মিতু বেগম।নির্যাতিতা মিতু বেগম আঘাতের যন্ত্রনা নিয়ে উজিরপুর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসাধীন রয়েছে। তবে মডেল থানার ওসি ও সাংবাদিকদের সহযোগীতায় হাসপাতালে চিকিৎসা ও মামলা হয়েছে।
এ ঘটনায় নির্যাতিতার নানা ইউসুফ হোসেন মোল্লা বাদী হয়ে উল্লেখ্য অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ১২ আগষ্ট উজিরপুর মডেল থানায় যৌতুক ও শারিরিক নির্যাতনের অভিযোগে একটি মামলা দায়ের করেন। আসামীরা পলাতক রয়েছে।
উজিরপুর মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ মোঃ জিয়াউল আহসান জানান, মামলা হয়েছে, আসামীদের গ্রেফতারের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।