যশোর শহরের মুজিব সড়কে অবস্থিত ডা. মোসলেম উদ্দিনের মালিকানাধীন ল্যাব এইড হাসপাতাল সিলগালা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ। বুধবার সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মীর আবু মাউদের নেতৃত্বে অভিযান চালিয়ে অবৈধ এই হাসপাতালটি সিলগালা করা হয়। পরে ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের স্ক্যান হসপিটাল ও দেশ ক্লিনিকের ডায়াগনস্টিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করেন। এছাড়া চিকিৎসকের ভুয়া ডিগ্রি সম্বলিত সাইনবোর্ড ব্যবহার করায় ডায়াগনস্টিক সেন্টার কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করা হয়েছে। এসময় সাইনবোর্ডগুলো নামিয়ে দিতে বাধ্য করা হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ডা. মীর আবু মাউদ জানিয়েছেন, অভিযানের সময় ল্যাব এইড হাসপাতালে ভর্তি রোগী থাকলেও দেখভালের জন্য কোন চিকিৎসক ও সেবিকা ছিলেন না। এছাড়া সেখানে টেকনিশিয়ান নেই। স্বাস্থ্য অধিদফতরের লাইসেন্সের মেয়াদ ২০১৭ সালে শেষ হলেও হালনাগাদের জন্য আবেদন করা হয়নি। সম্পূর্ণ অবৈধভাবে পরিচালনা করা হচ্ছিলো ল্যাব এইড হসপিটাল। স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে অভিযান চালিয়ে প্রতিষ্ঠানটি সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। ডা. মীর আবু মাউদ আরো জানান, প্যাথলজিস্ট ও টেকনোলজিস্ট ছাড়াই প্যাথলজি রিপোর্ট প্রস্তুত করার অভিযোগে স্ক্যান হসপিটাল ও দেশ ক্লিনিকের ডায়াগনস্টিক কার্যক্রম বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত সেখানকার কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এছাড়া প্যাথলজিস্ট ও টেকনোলজিস্ট ওই দুই প্রতিষ্ঠানের ডায়াগনস্টিক কার্যক্রমের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ ছিলো। ডা. মীর আবু মাউদ জানান, পরে অভিযান চালানো হয় পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে। অভিযানের সময় দেখা যায় সেখানে চিকিৎসকের ভুয়া ডিগ্রি ব্যবহার করে (পার্ট-১ ও পার্ট-২) সাইনবোর্ড ঝুলানো হয়েছে। ভুয়া ডিগ্রির সাইনবোর্ড খুলে ফেলতে বাধ্য করা হয়। আগামীতে এই ধরণের সাইনবোর্ড ব্যবহার করা হলে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে কর্তৃপক্ষকে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে। অভিযানের সময় তার সাথে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সার্জারি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. আব্দুর রহিম মোড়ল, সিভিল সার্জন অফিসের ডা. রেহেনেওয়াজ ও আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তার সাথে ছিলেন।
উল্লেখ্য, গত ২১ জুলাই থেকে যশোর জেলার অবৈধ হাসপাতাল ও ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে অভিযানে নামে জেলা স্বাস্থ্য বিভাগ। অভিযানের প্রথম দিনে বসুন্দিয়ার মহুয়া ক্লিনিক সিলগালা করা হয়। পরে ২৬ জুলাই সিলগালা করা হয় খাজুরার মাতৃভাষা ক্লিনিক এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার। ২৭ জুলাই অভিযান চালিয়ে সিলগালা করা ৬ টি প্রতিষ্ঠান। সেগুলো হলো যশোর শহরের ঘোপ সেন্ট্রাল রোডের সততা ডায়াগনস্টিক সেন্টার, আধুনিক হাসপাতালের ডায়াগনস্টিক কার্যক্রম, মণিরামপুর উপজেলার মুন হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার (হাসপাতাল মোড় শাখা), নিউ প্রগতি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার, নিউ লাইফ ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও মুন হাসপাতাল এন্ড ডায়াগনস্টিক সেন্টার (কুয়াদা শাখা)। গত ৩ আগস্ট বন্ধ ঘোষণা করা হয় ঘোপ নওয়াপাড়া রোডের ল্যাবজোন হসপিটাল। সবমিলিয়ে ১২ টি স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে।
০১৭১৭১২৭৭১৬