নিজেদের জীবনের ঝুঁকিকে তুচ্ছ জ্ঞান করে করোনাভাইরাস আক্রান্তদের পাশে থেকেই নমুনা পরীক্ষা ও চিকিৎসার আওতায় আনতে বিরামহীনভাবে কাজ করছে বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের স্বাস্থ্য বিভাগ। গত ২ মাস যাবৎ সিটি মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর নির্দেশক্রমে প্রধান স্বাস্থ্যকর্মকর্তা ডাঃ মতিউর রহমান এর তত্ত্বাবধানে ডাঃ খন্দকর শুভ্র সার্বক্ষনিক প্রচেষ্টায় সফলতা অর্জনের পথে বিসিসি।
এছাড়া সার্বিক সহযোগীতায় সিটি কর্পোরেশনের পাশে রয়েছে বরিশাল সিভিল সার্জন অফিস ও বিশ্ব স্বাস্থ্য স্বংস্থা। পাশাপাশি আরো রয়েছে ইপিআই সুভারভাইজার কবির হোসেন এবং আউট সোসিংয়ের ৬ জন সাহসী ও দক্ষ টেকনোলজিস্ট দল। তারা নিরালস ভাবে দিনরাত মাঠ পর্যায়ে নগরবাসীর করোনা সুরক্ষায় কাজ করে যাচ্ছেন। তারা ইতিমধ্যে নগরীর ৩০ টি ওয়ার্ডের নাগরিকদের বাড়িতে গিয়ে করোনার উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের আইসুলেশনে রেখে তাদের নমুনা সংগ্রহ করছেন।
অন্যদিকে বরিশালের গুরুত্বপূর্ন নগর পুলিশে বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত সদস্যদের ৪ শত জনের অধিক ও বরিশাল র্যাব ৮ সদস্যদের ৪০ জন উপসর্গ থাকা ব্যক্তিদের নমুনা সংগ্রহ করে শেবাচিমের পিআরসি ল্যাবে প্রেরন করেছেন। এখন পযর্ন্ত বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের প্রায় ৫৫৬ অধিক ব্যক্তির নমুনা সংগ্রহ করেছেন এ দলটি। গত(৩০) মে শনিবারের তথ্যনুশারে নগর পুলিশ ও জেলা পুলিশের সদস্যসহ তাদের পরিবারের সদস্যদের ৫৮ জনের করোনা সংক্রমিত তথ্য পাওয়া গেছে। এছারা নগরবাসীদের মধ্যে প্রায় ৩০ জনের করোনা পজেটিভ সনাক্ত হয়েছে। তাদের সঠিক চিকিৎসা সেবার পাশাপাশি নিয়ম মানায় অধিকাংশ আক্রান্ত সুস্থতা লাভ করে হয়ে বাড়ি ফিরেছেন।
তবে করোনা নিয়ে কাজ করার কারনে সিটি কর্পোরেশনের এ বিভাগের কাজ করা কর্মীদের সাথে অনেক সময় অপ্রত্যাশিত আচারন ও অবহেলা করা হয়ে থাকে। বিসিসির স্বাস্থ্য বিভাগের কোভিট ১৯ নিয়ে কাজ করা ডাঃ খন্দকার শুভ্র জানান,আমরা প্রতিদিন জিবনের ঝুকি নিয়ে আত্মমানবতার সেবায় কাজ করে যাচ্ছি। যদি কোন ব্যক্তির করোনার উপসর্গ থাকে, প্রথমে তাকে আইস্যুলেশনে রেখে পরবর্তীতে টেকনোলজিষ্টদের দ্বারা তার নমুনা সংগ্রহ করে ল্যাবে পাঠানো হয়।
যদি পজেটিভ আসে সে ক্ষেত্রে তাকে টেলিমেডিসিন মাধ্যমে সকল তথ্য নিশ্চিত করে চিকিৎসা ও পরামর্শ দেওয়া হয়। বিগত ২ মাস ধরে নমুনা সংগ্রহ করা ব্যক্তিদের সাথে প্রতিদিন সকাল থেকে একাধারে গভীর রাত পযর্ন্ত একজন একজন করে আমার কথা বলতে হচ্ছে। এবং চিকিৎসার সকল প্রকার সমস্যার সমাধান তাৎক্ষনিক ভাবে দিয়ে থাকি। সেক্ষেত্রে আমাদের টেকনোলজিষ্টরা অক্লান্ত ভাবে প্রতিনিয়ত আমাদের সহযোগীতা করে যাচ্ছে। নগরবাসীর সেবায় বিসিসির স্বাস্থ্য বিভাগ ঈদ-উল ফিতরের মধ্যে কাজ করেছে কোন প্রতিদান ছাড়াই।
বিসিসিতে আউটসোসিংসের মাধ্যমে কাজকরা টেকনোলজিষ্টদের বরিশাল বিভাগীয় পুলিশ হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত পুলিশ সদস্যেদের নমুনা সংগ্রহ শেষে যাচ্ছিলেন একটি দল। এ সময় আলাপকালে তারা জানান, সেবার ব্রত নিয়ে সম্ভাব্য করোনা রোগীর নমুনা সংগ্রহের মতো বিপজ্জনক কাজটি তারা করে চলেছেন।‘বিপদে পড়া মানুষের জন্য কিছু করতে পারাটা ভাগ্যের ব্যাপার। বিবেকের তাড়নায় কাজটি করছি। শুনেছি করোনা যুদ্ধে আত্মনিয়োগ করা স্বাস্থ্য কর্মীদের একটি তালিকা মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়েছে। তবে সেই তালিকায় আমাদের দলের সদস্যদের নাম না থাকা নিয়ে ব্যথিত না। আরো বলেন, ‘আসলে কোনো প্রতিদান পাওয়ার জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কাজটি করছি না। রোগগ্রস্তদের সেবা দিতে কাজটি করছি।’
বরিশাল সিটি করপোরেশনের প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ডাঃ মতিউর রহমান জানান, দেশের অন্যান্য সিটি কর্পোরেশনের চেয়ে আমারা নমুনা সংগ্রহে এগিয়ে আছি। আমাদের নিরালস প্রচেষ্টায় আমরা নগরবাসীর সেবা করছি। আমি আমার কর্মীদের সাথে সবসময় পাশে থেকেই কাজ করে যাচ্ছি। এবং তাদের মনে সাহস ও উৎসাহ প্রদান করছি। আমার স্বাস্থ্য বিভাগের কারোনা নিয়ে কাজ করা দলটি অত্যন্ত সাহসী ভূমিকা পালন করেছে। কোন নতুন রোগীর করোনা পরীক্ষা করিয়ে তাকে চিকিৎসার আওতায় নেয়ায় গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটি পালন করছেন বরিশাল সিটি কর্পোরেশেন। তবে কিছু সীমাবদ্বতার কারনে কিছু কার্যক্রম ব্যহত মাঝে মাঝে হচ্ছে। নমুনা সংগ্রহকারীদের এ দলে একজন মেডিকেল অফিসার ডাঃ খন্দকার শুভ্র সার্বক্ষনিক রয়েছে। এ দলের সদস্যদের ব্যক্তিগত নিরাপত্তার পিপিই মাস্ক, গ্লাভস সরকারিভাবে সরবরাহ করা হলেও তা কতটুকু নিরাপদ তা নিয়ে রয়েছে সন্দেহ। রোগীর শরীর থেকে সংগ্রহ করা নমুনা সংগ্রহ করে বরিশাল শেবাচিমের ল্যাবে পাঠানোর দায়িত্বও তাদের।
আউট সোসিংয়ের মাধ্যমে নেওয়া আমাদের কর্মিরা জিবনের ঝুকি নিয়ে কাজ করে যাচ্ছে এবং তারা অনেক দক্ষ। তাদের জন্য ভবিষৎতে কিছু করাযায় সে বিষয় মেয়র মহাদয়কে অবগত করা হবে।