1. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  2. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  3. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
শনিবার, ২৬ অক্টোবর ২০২৪, ০১:২৩ পূর্বাহ্ন

ফরিদপুরে জিয়াসমিন হত্যা, মামলার রহস্য পুলিশ পরিদর্শকের বিচক্ষণতায় পাঁচ দিনেই উদঘাটন

  • সময় : শুক্রবার, ১৭ জুলাই, ২০২০
  • ২২৫

গত ১১ জুলাই ফরিদপুরের কোতোয়ালি থানাধীন কৃষ্ণনগর ইউনিয়নের উজান মল্লিকপুর জমাদার পাড়া সড়কের পাশে আখ ক্ষেত থেকে জিয়াসমিন (৩২) নামে এক মহিলার লাশ উদ্ধার করা হয়। নিহত মহিলার বাবার বাড়ি মধুখালি থানার কারন্যপুর গ্রামে। পরের দিন মৃতের বাবা মো. রফিক শেখ ওরফে নবী বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে কোতোয়ালি থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।


ওই দিন কোতোয়ালি থানার পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মো. সাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে যান। এরপর ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন পুলিশ সুপার মোঃ আলিমুজ্জামান বিপিএম -সেবা ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন) মোঃ জামাল পাশা। কিছুক্ষণ পর ঘটনাস্থলে সিআইডির ক্রাইমসিন বিশেষজ্ঞ একটি দল ও পিবিআই এর একটি দল ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে। লাশের সুরতহাল রিপোর্ট প্রস্তুত করে ময়না তদন্তের জন্য মর্গে প্রেরণ করা হয়।

এরপর হত্যা রহস্য উদঘাটনে পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) মো. সাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে শুরু হয় পুলিশি কার্যক্রম। সকল প্রকার তথ্য-উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তার সন্দেহ হয় মৃতের স্বামী আনোয়ার হোসেনকে (৩৭)। আনোয়ার ঢাকায় চ্যানেল আই-এর গাড়ি চালক। তার বাড়ি ফরিদপুর জেলার কোতোয়ালি থানার তাম্বুলখানা গ্রামে। পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেলের তদারকি ও সহযোগিতায় পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন)মো. সাহিদুল ইসলামের নেতৃত্বে মামলার তদন্তকারী অফিসারের সমন্বয়ে গড়া একটি টিম নিয়ে ১৫ জুলাই রাতে ঢাকা ডিএমপির তেজগাঁও শিল্পাঞ্চল থানার সহায়তায় পশ্চিম নাখালপাড়া এলাকা হতে আসামী আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সে হত্যার কথা স্বীকার করেছে।

থানা সূত্রে জানা গেছে, আনোয়ার হোসেন স্বীকার করে সে গত ১০ জুলাই বিকাল তিনটার সময় তার দ্বিতীয় স্ত্রী জেসমিনকে ফোন করে ফরিদপুর আসতে বলে। জিয়াসমিন তার বাবার বাড়ি মধুখালি থাকত। জিয়াসমিনের স্বামী আনোয়ার হোসেন তাকে ফোনে জানায় সে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে ১০ কেজি আম ও কিছু টাকা পাঠিয়েছে। আম ও টাকা আনার কথা বলে জিয়াসমিন বাড়ি হতে বের হয়। আসামি আনোয়ার তার পরিকল্পনা মোতাবেক অন্য একজনের সহযোগিতায় মাইক্রোবাসে ১০ জুলাই সন্ধ্যা ৭ টায় ফরিদপুর আলিপুর কবরস্থানের নিকট পৌঁছায়। জিয়াসমিনকে মাইক্রোবাসে উঠিয়ে বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে। রাত ১০টার দিকে মাইক্রোবাসের মধ্যে আনোয়ার জিয়াসমিনের গলা টিপে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। হত্যার ঘটনা ভিন্ন খাতে প্রবাহিত করার জন্য ঘটনাস্থলে মৃতদেহ ফেলে রেখে আনোয়ার আবার ঢাকা চলে যায়। আনোয়ার হোসেনকে মোবাইল ফোনে আম পাঠানোর বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করলে সে জানায় তার বন্ধুর মাধ্যমে ৯ জুলাই সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে ১০ কেজি আম পাঠায়। কিন্তু ফরিদপুর সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিস এর রেকর্ড পত্র ও সিসিটিভি ফুটেজ পর্যালোচনা করে এর সত্যতা পাওয়া যায় না।

পরবর্তীতে ফরিদপুরে এস এ পরিবহনের রেকর্ড পত্র পর্যালোচনা করে সেখানেও কোন তথ্য পাওয়া যায়নি। বিষয়টা নিয়ে আনোয়ার হোসেনকে ফোন করলে সে পরিকল্পনা করে ১৩ তারিখ সে তার মৃত স্ত্রী জিয়াসমিনের নামে মহাখালী এস এ পরিবহন অফিস হতে ১০ কেজি আম পার্সেল করে পাঠায়। ফরিদপুরের এস এ পরিবহন অফিস হতে জানানো হয় জিয়াসমিনের নামে একটি পার্সেল এসেছে। পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) সাহিদুল ইসলাম এস এ পরিবহন অফিসে গিয়ে দেখেন আম বুকিং করা হয়েছে ১৩ জুলাই। এতে পুলিশ পরিদর্শক (অপারেশন) সাহিদুল ইসলাম নিশ্চিত হন জিয়াসমিন হত্যাকান্ডে তার স্বামী আনোয়ার জড়িত। আনোয়ারের প্রথম স্ত্রীর একটি ছেলে ও একটি মেয়ে সন্তান রয়েছে। অপরদিকে মৃত জিয়াসমিনের প্রথম স্বামীর ঘরে ১১ বছর বয়সের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে । দেড় বছর পূর্বে আনোয়ার গোপনে জিয়াসমিনকে বিয়ে করে। এরপর তারা ফরিদপুর দক্ষিণ আলিপুর এক রুমের বাসা ভাড়া নেয়। আনোয়ার ছুটিতে আসলে জিয়াসমিন ভাড়া বাসায় থাকতো। অন্য সময় জিয়াসমিন তার বাবার বাড়িতে থাকতো। জিয়াসমিন গত দুই মাস যাবত আনোয়ারকে তার বাড়িতে উঠানোর জন্য চাপ দিতে থাকে এবং প্রথম স্ত্রীকে তালাক দিতে বলে। এর কারণে আনোয়ার জিয়াসমিনকে হত্যা করে।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪