ঢাকা, শুক্রবার, ১০ জুলাই ২০২০:
তথ্যমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ বলেছেন, ‘রিজেন্ট হাসপাতালের অনিয়ম সরকারই উদঘাটন করেছে, অন্য কেউ নয়। বিএনপিও এ নিয়ে আগে কোনো প্রশ্ন তোলেনি।’
শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর ধানমন্ডিতে আওয়ামী লীগ সভাপতির রাজনৈতিক কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন মন্ত্রী। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুলের মন্তব্য ‘সরকারের মদদে রিজেন্টের অনিয়ম’ এর জবাবে তিনি একথা বলেন।
‘সরকারি সংস্থা নিজেই ঢাকায় রিজেন্ট হাসপাতালের দু’টি শাখায় অভিযান ও মামলা করেছে, গণমাধ্যমের কোনো প্রতিবেদনের ভিত্তিতে নয়। এরপর এবিষয়ে অনুসন্ধানী প্রতিবেদন প্রকাশের জন্য আমি গণমাধ্যমকে ধন্যবাদ জানাই’ বলেন তথ্যমন্ত্রী।
মন্ত্রী বলেন, পত্রপত্রিকার রিপোর্টে দেখা যায়, সাহেদ করিম বিএনপি আমলে হাওয়া ভবনের সাথে যুক্ত ছিলেন, এরপর দু’বছর জেলেও ছিলেন। রিপোর্ট অনুযায়ী কয়েক মাস আগেও যুবদলের নেতাকে সামনে রেখে সাহেদ যখন তারেক রহমানের সাথে স্কাইপে কথা বলেন, তখন সেটি কাদের মদদে ঘটে, মির্জা ফখরুলের কাছে প্রশ্ন রাখেন ড. হাছান।
তিনি বলেন, সাহেদকে যারা টক শো’তে সুযোগ দিয়েছিলেন তাদেরও দায় রয়েছে, কারণ সে টক শো’কে প্রতারণার ঢাল হিসেবে ব্যবহার করতো।
সাহেদ প্রতারণার কাজে কখনো নিজেকে মেজর, কর্ণেল, আওয়ামী নেতা বা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের কর্মকর্তা এমন নানা পরিচয় দিয়েছেন যা সত্য নয় বলেন তথ্যমন্ত্রী। ‘আমরা তদন্ত করে দেখেছি, তিনি আওয়ামী লীগের কোনো কমিটিতে ছিলেন না’ জানান আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক।
ড. হাছান মাহমুদ বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দ্ব্যর্থহীন ভাষায় বলেছেন, দুর্নীতিবাজদের পরিচয়-বর্ণ যাই হোক, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে। তারই অংশ হিসেবে সাহেদ ও এমন আরো প্রতারকদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।’
ইটালি থেকে বাংলাদেশী যাত্রীদের ফেরত পাঠানোর বিষয়ে বিএনপিনেতা রুহুল কবির রিজভীর মন্তব্য -বাংলাদেশের বিমানকে ‘করোনা বোমা’ বলা হচ্ছে, এ প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, রিজভী সাহেবের এ বক্তব্য বাংলাদেশ ও দেশের মানুষের বিরুদ্ধে।
তিনি বলেন, ‘সমগ্র বিশ্বের কোনো দেশেই করোনার কারণে বিমান চলাচল এখনো স্বাভাবিক হয়নি, বাংলাদেশও করোনা আক্রান্ত বলে মনে হওয়া বিদেশি যাত্রীদের ফেরত পাঠিয়েছে।’
বিশ্ব পরিস্থিতির দিকে তাকিয়ে ও দেশের পক্ষে কথা বলার জন্য রিজভীকে আহবান জানান তথ্যমন্ত্রী।
সর্বজনশ্রদ্ধেয় সাহারা খাতুনের মৃত্যু রাজনীতিতে অপূরণীয় ক্ষতি -তথ্যমন্ত্রী
তথ্যমন্ত্রী ড. হাছান এসময় প্রবীণ রাজনীতিক সাহারা খাতুনের মৃত্যুকে দেশের রাজনীতির জন্য অপূরণীয় ক্ষতি হিসেবে বর্ণনা করে বলেন, ‘আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য সর্বজনশ্রদ্ধেয় এডভোকেট সাহারা খাতুন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার অত্যন্ত বিশ্বস্ত সহকর্মী ছিলেন। ২০০৭ সালে শেখ হাসিনাকে কারাবন্দী করা হলে তার মুক্তির জন্য আইনী ও রাজনৈতিক লড়াইয়ে তিনি ওতোপ্রোতোভাবে ভূমিকা রাখেন। আওয়ামী লীগের সকল দুঃসময়ে তিনি বিপদের মুখোমুখি দাঁড়িয়েছেন, অনেকবার কারাবরণ করেছেন।’
আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এবং দেশের রাজনীতিতে বণিকায়ণ ও দুর্বৃত্তায়নের বিরুদ্ধে সোচ্চার নেতা সাহারা খাতুনের মৃত্যু আওয়ামী লীগ তথা দেশের রাজনীতিতে এক অপূরণীয় ক্ষতি, বলেন তথ্যমন্ত্রী।