২লক্ষ মোবাইল ম্যাসেসের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার কাছে তার নির্বাচনী আসন তালতলীতে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘোষনার দাবী জানানো হয়েছে। সোমবার বেলা ১১টায় একযোগে ডিজিটাল মানববন্ধন কর্মসূচীর অংশ হিসেবে উপজেলার প্রায় সব মোবাইল থেকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘোষনার দাবী জানান। মোবাইল অনকরলেই শুধু একেরপর এক ম্যাসেস আসে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ঘোষনার দাবী।
জানা গেছে, ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আমতলী-তালতলী সংসদীয় আসনে নির্বাচন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা এমপি নির্বাচিত হয়েছিলেন। তখন তার প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ২০১২ সালের ৫ জানুয়ারী তালতলীতে উপজেলায় রুপান্তর করেন। উপজেলা ঘোষণার সাড়ে ৮ বছরেও প্রতিষ্ঠা হয়নি উপজেলার আড়াইলক্ষ মানুষের স্বাস্থ্য সেবায় উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স।
তালতলী উপজেলাটি সাগড় পারের উপজেলা। অত্যান্ত দুর্গম এলাকা। প্রতিনিয়ত তারা স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগেন। অথচ উপজেলায় নেই কোন হাসপাতাল। নেই কোন এ্যাম্বুলেন্স। মুমুর্ষ অসহায় দরিদ্র রোগীদের আল্লাহর উপর কিংবা ওঝা কবিরাজের উপর ভরসা করা ছাড়া তাদের আর কোন উপায় থাকে না। একটু ভিত্তশালীরা পার্শ্ববর্তী আমতলী কিংবা অন্য কোথাও নিয়ে চিকিৎসা করান। আর গরীব হত দরিদ্ররা মরেন বাড়িতে বসে। এখানে পূর্নাঙ্গ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা না হওয়ায় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ চিকিৎসক, ওষুধ সামগ্রী, এ্যাম্বুলেন্স কিছুই দিতে পারছে না। পারছেনা রোগীদের জন্য ইনডোর ব্যবস্থা চালু করতে। বছরের পর বছর তালতলী উপজেলা পূর্নাঙ্গ হাসপাতাল চালুর জন্য স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ে এবং স্বাস্থ্য অধিদপ্তরে চিঠি চালাচালি করলেও কোন কাজ হয়নি বলে জানান স্থানীয় স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ।
তালতলী উপজেলার সচেতন নাগরিক পরিষদের নেতা ইদ্রিসুর রহমান হৃদয় জানান, তালতলী উপজেলা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সৃষ্টি একটি উপজেলা। তিনি মানবতার মা। তালতলীতে সকল প্রশাসনিক অফিস প্রতিষ্ঠা হলেও এখনও হাসপাতাল প্রতিষ্ঠা হয়নি। ফলে আড়াই লাখ মানুষ মৌলিক অধিকার স্বাস্থ্য সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। আশা করি তিনি তালতলী বাসীর মুখের দিকে তাকিয়ে একটি পূর্নাঙ্গ হাসপাতাল ঘোষনার নির্দেশ দিবেন।
তালতলী উপজেলা আ’লীগ সভাপতি ও তালতলী উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান রেজবী উল কবির জোমাদ্দার বলেন, দেশে মহামারি করোনায় মানুষ দিশেহারা হয়ে পড়েছে। এ মুহুর্তে তালতলীতে হাসপাতাল না থাকায় প্রায় আড়াই লাখ মানুষ স্বাস্থ্য সেবা সেবা থেকে বঞ্চিত। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নিকট অনুরোধ জানাবো তালতলীতে যেন পূর্নাঙ্গ হাপাতাল ঘোষনার নির্দেশ প্রদান করেন।
তালতলীতে নিয়োজিত চিকিৎসক ডা. মো. ফাইজুর রহমান জানান, উপজেলার বড়বগী ইউনিয়নের উপ-স্বাস্থ্য কেন্দ্রের বরাদ্ধ ঔষধ এবং আমতলী হাসপাতাল থেকে ধার করে যে সামান্য ওষুধ পাই তা দিয়ে উপজেলার আড়াই লাখ মানুষের চিকিৎসা সেবা চালিয়ে যাচ্ছি। এখানে রোগী ভর্তির কোন ব্যবস্থা এবং ইনডোর চালু নেই।
আমতলী উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (তালতলীর অতিরিক্ত দায়িত্বে থাকা) ডা. শংকর প্রসাদ অধিকারী বলেন, তালতলীতে পূর্নাঙ্গ হাসপাতাল ঘোষনা না করায় আমরা সেখানে লোকবল এবং ওষুধ সামগ্রী দিতে পারছি না। করোনার এই মুহুর্তে আমতলী হাসপাতালের নামে বরাদ্দ করা সামান্য ওষুধ তালতলীতে দিয়ে থাকি। এই দিয়ে চলছে এক উপজেলার চিকিৎসা সেবা।
বরগুনার সিভিল সার্জন ডা. হুমায়ুন শাহিন খান বলেন, তালতলী উপজেলায় পূর্নাঙ্গ হাসপাতাল প্রতিষ্ঠার জন্য আমরা স্বাস্থ্য মন্ত্রলায়ে চিঠি দিয়েছি। আশা করি শিঘ্রই আমরা অনুমোদন পাবো। অনুমোদন পাওয়া গেলে লোকবল নিয়োগ হবে তখন তালতলীতে চিকিৎসা ব্যবস্থায় আর কোন সমস্যা থাকবে না