জেলা প্রতিনিধি-
টাঙ্গাইলে বহুল আলোচিত আওয়ামী লীগ নেতা বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলায় দুইজনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছে আদালত,পাশাপাশি উক্ত মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য (এমপি) আমানুর রহমান খান রানা ও তার তিন ভাইসহ ১০ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছে আদালত।
আজ রবিবার (২ ফেব্রুয়ারি) বিকেলে টাঙ্গাইলের প্রথম অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মাহমুদুল হাসান এ রায় দেন। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন, মোহাম্মদ আলী ও কবির হোসেন। তারা দুজনেই জামিনে থেকে পলাতক রয়েছেন।
বেকসুর খালাসপ্রাপ্তরা হলেন- সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানা, তার ভাই সাবেক পৌর মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্ত, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগ নেতা সানিয়াত খান বাপ্পা, বাবু, আলমগীর হোসেন, নাসির উদ্দিন নুরু, ছানোয়ার হোসেনে, মাসুদুর রহমান ও ফরিদ আহমেদ।
উল্লেখ্য,২০১৩ সালের ১৮ জানুয়ারি জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদের গুলিবিদ্ধ মরদেহ তার কলেজপাড়া এলাকার বাসার নিকট হতে উদ্ধার করা হয়। ঘটনার তিন দিন পর তার স্ত্রী নাহার আহমেদ বাদী হয়ে টাঙ্গাইল সদর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে হত্যা মামলা করেন।
২০১৪ সালের আগস্টে এই হত্যার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আনিসুল ইসলাম রাজা ও মোহাম্মদ আলী নামক দুইজনকে গোয়েন্দা পুলিশ গ্রেফতার করে এবং তারা আদালতে জবানবন্দি দেন। আসামিদের জবানবন্দিতে আওয়ামী দলীয় সাবেক সংসদ সদস্য আমানুর রহমান খান রানা, তার ভাই টাঙ্গাইল পৌরসভার তৎকালীন মেয়র সহিদুর রহমান খান মুক্তি, ব্যবসায়ী নেতা জাহিদুর রহমান খান কাকন ও কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সাবেক সহ-সভাপতি সানিয়াত খান বাপ্পার নাম প্রকাশে আসে।
এ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী ওয়াহেদ, আবদুল খালেক ও সনি আদালতে জবানবন্দি দেন। এরপর চার ভাই আত্মগোপনে চলে যান। পরবর্তীতে আমানুর রাহমান খান রানা আদালতে আত্মসমর্পণ করেন। তিন বছর জেলে থাকার পর জামিন লাভ করেন। ৫ আগস্টের পর তিনি আবার আত্মগোপনে চলে যান। আরেক ভাই সাবেক সহিদুর রহমান খান মুক্তি ভিন্ন আরেক মামলায় কারাগারে রয়েছেন।অপর দুই ভাই ২০১৪ সাল থেকে বিদেশে অবস্থান করছেন বলে তাদের ঘনিষ্ঠরা জানিয়েছেন।
গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গোলাম মাহফীজুর রহমান ২০১৬ সালের ৩ ফেব্রুয়ারি চার ভাইসহ ১৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র জমা দেন। ২০১৭ সালের ৬ সেপ্টেম্বর আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে এই মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। বিচার চলাকালে দুই আসামি আনিছুর রহমান ওরফে রাজা ও মোহাম্মদ সমির কারাগারে মৃত্যুবরণ করেছেন। গত ২৬ জানুয়ারি ফারুক হত্যা মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হয়।
রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী টাঙ্গাইলের অতিরিক্ত সরকারি কৌঁশুলি মোহাম্মদ সাইদুর রহমান স্বপন বলেন, আদালত দুই জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন এবং সাবেক এমপি আমানুর রহমান খান রানাসহ ১০ জনকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন আদালত।
আসামি পক্ষের আইনজীবী মুহাম্মদ নাসির উদ্দিন খান বলেন, সঠিক এবং ন্যায় বিচার হয়েছে। এ রায়ে আমরা খুশি।