1. boyd94289@gmail.com : Ayon Islam : Ayon Islam
  2. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  3. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  4. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
  5. bangladeshbulleting646@gmail.com : Sohel Desk : Sohel Desk
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৬:৪৩ অপরাহ্ন

পদত্যাগে বাধ্য হলেন টাঙ্গাইল প্রি-ক্যাডেট স্কুলের অধ্যক্ষ

  • সময় : মঙ্গলবার, ৩ সেপ্টেম্বর, ২০২৪
  • ১৭০

মোঃ শামসুর রহমান তালুকদার-

দীর্ঘদিনের নানা ধরনের অনিয়ম ও দুর্নীতি এবং প্রতিষ্ঠানকে দলীয়করণ করার অভিযোগে শিক্ষক ও অভিভাবকদের আন্দোলনের মুখে পদত্যাগ করলেন টাঙ্গাইল শহরের প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ঐতিহ্যবাহী টাঙ্গাইল প্রি-ক্যাডেট স্কুলের বিতর্কিত অধ্যক্ষ শাহানারা বেগম।

আজ মঙ্গলবার (৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে অধ্যক্ষের পদ থেকে শাহানারা বেগম এবং পরিচালনা পর্ষদের সদস্য পদ থেকে তার স্বামী হারুন অর রশিদ পদত্যাগ করেন।

এর আগে বেলা ১১টার দিকে অধ্যক্ষ শাহানারা ও তার স্বামী হারুন অর রশীদ স্কুলে প্রবেশ করলে,বিক্ষুব্ধ শিক্ষক ও অভিভাবকরা তাদেরকে দেখে উত্তেজিত হয়ে উঠে। তাদের বিরুদ্ধে তখন বিক্ষোভকারী নানা স্লোগান দিতে থাকে। এক পর্যায়ে অধ্যক্ষ ও তার স্বামী চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে আন্দোলনকারীরা তাদের রাস্তায় আটকিয়ে দেয়।

অবস্থা চরম পর্যায়ে পৌঁছালে সেখানে সেনাবাহিনীর সদস্যরা উপস্থিত হন এবং পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করেন। এ সময় টাঙ্গাইলের ছেলে ঢাকা কমার্স কলেজের ছাত্র সৌমিক ও টাঙ্গাইলের আরো কয়েকজন ছাত্ররা তাদের জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ে নিয়ে যায়। সেখানে বিক্ষোভকারীদের চাপের মুখে বিতর্কিত অধ্যক্ষ শাহনারা বেগম ও তার স্বামী হারুন অর রশিদ পদত্যাগ করতে বাধ্য হন।

গত কয়েকদিন ধরেই নানা অভিযোগে টাঙ্গাইল প্রি-ক্যাডেট স্কুলের অধ্যক্ষের পদত্যাগ ও বিচারের দাবি করেছে শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অভিভাবকরা। গত ১ সেপ্টেম্বর সকালে টাঙ্গাইল প্রেসক্লাবের সামনে অধ্যক্ষ শাহানারা বেগমের বিরুদ্ধে মানববন্ধন করে শিক্ষক ও অভিভাবকরা। এ সময় অভিভাবকরা মানববন্ধন করতে গেলে স্কুলের অধ্যক্ষের স্বামী তার লোকজন নিয়ে বাঁধা দেয়ার চেষ্টা করতে দেখা যায়। পরেরদিন ২ সেপ্টেম্বর অভিভাবকদের আরেকটি দল বেশ কিছু শিক্ষাথীদের নিয়ে অধ্যক্ষ শাহানারার পক্ষে মানববন্ধন করে।

একাধিক শিক্ষক জানান, শিক্ষার্থীদের প্রাইভেট পড়ানোর শর্তে অধ্যক্ষ শাহানারা স্কুলে শিক্ষক নিয়োগ দিতেন। শিক্ষকরা দিনরাত পরিশ্রম করলেও তাদের সামান্য বেতন দেওয়া হয়। প্রতিবাদ করলে তাদের চাকরি থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এছাড়াও শিক্ষকদের সাথেও দুর্ব্যবহার করা ছিল নিত্যদিনের স্বভাব।

প্রতিষ্ঠানের চারু ও কারুকলার শিক্ষক মির শামিম্মুজামান বাংলাদেশ বুলেটিনকে জানান, গত ২০ আগস্ট বিকালে বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে নিহত আবু সাঈদকে নিয়ে দেয়ালে গ্রাফিতি করার জন্য তিনি আমাকে কান ধরে ক্ষমা চাইতে বাধ্য করেন এবং আমার রং ও তুলি আটকে রাখেন।

অভিভাবকেরা অভিযোগ করে জানান, এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে দীর্ঘদিন ধরে নানা অনিয়ম-দুর্নীতি চলছে। জেলার আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতাদের সাথে সখ্যতা থাকায় তিনি ও তার স্বামী প্রতিষ্ঠানে একক আধিপত্য গড়ে তুলেন এবং দাপটের সাথে নানা অনিয়ম করতেন। তার বিরুদ্ধে যে কেউ মুখ খুলতে ভয় পেতো। স্কুলের নামে দোকান ভাড়া, ১২০০ শিক্ষার্থীর বেতন পরীক্ষা ফিসহ লাখ-লাখ টাকা আত্মসাৎ করে আসছেন। সেই দুর্নীতির টাকা দিয়ে শহরে বিলাস বহুল বাসা বানিয়েছেন। ছোট খাটো বিষয় নিয়ে অধ্যক্ষের কাছে জানাতে গেলে প্রায়ই তার লাঞ্ছনার শিকার হতে হয়েছে। স্কুলের কোমলমতি ছাত্রছাত্রীদের জন্যে কোনো টিফিন টাইম নেই। শিক্ষার্থীরা অনেকটা পালিয়ে পালিয়ে টিফিন করে থাকে। এছাড়া কোচিং বাণিজ্য, সকল বই খাতা-কলমসহ শিক্ষা সরঞ্জাম স্কুল থেকে অনেক বেশি দামে কিনতে বাধ্য করা হয়। এসব বিষয়ে প্রতিবাদ করতে গেলে নানাভাবে হয়রানির শিকার হতে হয় শিক্ষার্থী ও অভিভাবকদের।

উল্লেখ্য, ১৯৯৮ খ্রিষ্টাব্দ থেকে টাঙ্গাইল প্রি-ক্যাডেট স্কুলের অধ্যক্ষ হিসেবে যোগদান করেন শাহানারা বেগম।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪