তৌহিদ সোহাগ–
করোনায় বিপর্যস্ত বিশ্ব,এখনো কার্যকর কোন মেডিসিন বা ভ্যাকসিন আবিস্কৃত হয়নি।আদৈও কোন প্রতিষেধক আসবে কিনা আমরা জানিনা। আমাদের কি এভাবেই মাক্সবন্ধি হয়ে থাকতে হবে কিনা তার কোন নিশ্চয়তা এখন পর্যন্ত কেউ দিতে পারছেনা।এমতাবস্তায় বিভিন্ন দেশ পৃথকভাবে চেষ্টা না করে সকলদেশের গবেষকদের সম্মিলিত প্রয়াসের মাধ্যমে WHO এর তত্ত্বাবধানে এগিয়ে গেলে আরো কিছু আগে হয়তো সফলতা দেখলেও বিশ্ব দেখতে পারতো।মূলত মেডিসিন বা ভ্যাকসিন তৈরিতে শুরু হয়েছে এক ধরনের প্রতিযোগিতা।কে কার আগে মেডিসিন বা ভ্যাকসিন তৈরি করে ক্রেডিট নেবে এবং বাজারজাত করে মুনাফা অর্জন করবে তা নিয়ে শুরু হয়েছে নোংরা খেলা।এদিকে বেচারা WHO আছে চরম বিপদে। প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পের চুড়ান্তভাবে অর্থ সাহায্য বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি অন্যদিকে ছোট দেশগুলোর অভিযোগ বিশেষ করে আফ্রিকার দেশগুলো, WHO তাদের আবিস্কৃত মেডিসিনের স্বীকৃতি দিচ্ছেনা।অভিযোগ এবং পাল্টা অভিযোগের এ খেলায় বিশ্ব থেকে এ পর্যন্ত হারিয়ে গেল সাড়ে তিন লক্ষাধিক প্রান।
ট্রাম্পের অভিযোগ উহানের ল্যাব থেকেই চীন ইচ্ছাকৃতভাবেই করোনা ভাইরাস ছড়িয়েছে।চীন নাকি আগামী নির্বাচনে তাকে পরাজিত করার জন্যে উঠে পড়ে লেগেছে।আমেরিকা ইতিমধ্যে দক্ষিন চীন সাগরে শক্তি বৃদ্ধি করেছে।আমার মনে হয় উহানের ল্যাব থেকে যদি ভাইরাস ছড়ায়ও সেটা হয়েছে সম্পূর্ন অসাবধানতাবশত,অনিচ্ছাকৃত।যদিও প্রখ্যাত তিনজন ভাইরোলজিষ্ট দুই ধরনের মন্তব্য করেছেন।সে আলোচনায় যাবনা।ট্রাম্প অনেক অযৌক্তিক কথাবার্তা বলে ইতিমধ্যে বিশ্বে হাস্যরসে পরিনত হযেছেন।আমেরিকায় লক্ষাধিক লোকের প্রানহানিকে তিনি সম্মানের চোখে দেখছেন।কিন্তু আমেরিকার জনগন এতগুলো প্রানহানির জন্য প্রেসিডেন্ট ট্রাম্পকেই দুষছে।আর তাই আগামী নির্বাচনী বৈতরণী পার হওয়ার জন্য,জনমতকে ভিন্নখাতে প্রবাহিত করার জন্য এটা ট্রাম্পের একটা অপকৌশল।চীনকে ট্রাম্প কখনোই আক্রমন করবেনা।যদিও অনেক দেশই চীনকে দায়ী করছে।জাপান ইতিমধ্যে ক্ষতিপূরন দাবী করেছে চীনের কাছে।
দোষারোপের রাজনীতিতে সবচেয়ে বেশি এগিয়ে আছে বাংলাদেশ।সরকার মসজিদ আংশিক বন্ধ করে দিলে কিছু লোক সমালোচনার ঝড় তুলে দিল।মসজিদ না খোলার জন্য সরকারকে গালমন্দ করতেও ছাড়েনি।অথচ মসজিদ খোলার পর তাদের অনেককেই দেখেছি করোনার ভয়ে মসজিদে যাচ্ছেনা, একাকী নামাজ পড়ছে।অনেকে আবার নামাজই পড়েনা।অতি বুঝমান কিছু লোক আবার বলে সৌদিতে চুরি করলে হাত কাটা হয়, বাংলাদেশে কি চুরি করলে হাত কাটা হয়? তাহলে সৌদিকে কেন ফলো করতে হবে।একটা মানুষকে সংশোধনের সুযোগ না দিয়ে একবারেই পঙ্গু করে দেওয়া কতটুকু যুক্তিযুক্ত তা আমার বোধগম্য না।কিছু লোক আবার বিজ্ঞানের সাথে ধর্মের যুদ্ধ বাধিয়ে দিচ্ছে।একদল বলছে করোনা থেকে বাচালে বিজ্ঞানই বাচাবে।অন্যদল বলছে আল্লাহ ছাড়া কেউ বাচাতে পারবেন।বিজ্ঞানের সাথে ধর্মের তুলনা করা ঠিক না।ধর্ম মানুষের অগাধ বিশ্বাস,তাছাড়া ধর্মীয় গ্রন্থ কিন্তু বিজ্ঞানের কোন থিওরিক্যাল বই না।বিজ্ঞান আজো অনেক কিছুতেই অক্ষম।এইডস এর কোন ওষুধ আবিস্কৃত হয়নি।বিজ্ঞান কি পেরেছে মানুষের মৃত্যুকে ঠেকাতে? কাজেই ধর্মের সাথে বিজ্ঞানের তুলনা করা যাবেনা।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা নিরলসভাবে পরিশ্রম করে যাচ্ছেন করোনা মোকাবেলায়,নিজে সবকিছু তদারকি করছেন। এযাবৎকাল পর্যন্ত করোনা মোকাবেলায় তাকে সফল বলা যায়।চাল,ডাল, তেল আটাসহ জনগনকে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের সহযোগিতা,হত দরিদ্র মানুষের জন্য নগদ অর্থ প্রেরণসহ বিভিন্ন প্রনোদনা প্যাকেজ ঘোষনা করে ইতিমধ্যে বিশ্বের বড় বড় গনমাধ্যমে বার বার প্রসংসিত হয়েছেন।কিন্তু ঐ যে দোষারোপের রাজনীতি, তিনি কি পেরেছেন সমালোচনার উর্দ্ধে উঠতে?