আন্তর্জাতিক ডেস্ক-
ইরানের বিপ্লবী গার্ড বাহিনীর (আইআরজিসি) শীর্ষ কমান্ডার কাসেম সোলাইমানির চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় জোড়া বিস্ফোরণের ঘটনায় নিহত বেড়ে ১০৩ জনে দাঁড়িয়েছে। দেশটির দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর কেরমানে গতকাল বুধবারের এ ঘটনায় আহত হয়েছে আরও ১৮৮ জন।এই হামলাকে একটি ‘সন্ত্রাসী হামলা’ বলে অভিহিত করেছেন ইরানি কর্মকর্তারা।
আজ বৃহস্পতিবার মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএন, আল জাজিরাসহ একাধিক আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
ইরানের রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে বলা হয়েছে, সোলাইমানির চতুর্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে দক্ষিণ-পূর্বাঞ্চলীয় শহর কেরমানে তার কবরস্থানের কাছে একটি স্মরণসভা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠান চলাকালীন ২০ মিনিট পর প্রথম এবং তারপরেই দ্বিতীয় বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটে। সোলাইমানি ২০২০ সালের জানুয়ারিতে ইরাকে মার্কিন ড্রোন হামলায় নিহত হন।
ইরানের রাষ্ট্রীয় বার্তা সংস্থা ইরনা জানায়, প্রথম বোমাটি বিস্ফোরিত হয় সোলাইমানির সমাধিস্থলের ৭০০ মিটার দূরে। একটি পূজো কারের ভেতর স্যুটকেসের মধ্যে রাখা ছিল বোমাটি। রিমোট কন্ট্রোলারের সাহায্যে সেটির বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ চ্যানেল আইআরআইবি-কে দেওয়া সাক্ষাৎকারে ইরানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আহমাদ ওয়াহিদি বলেন, ‘প্রথম বিস্ফোরণটি ঘটে স্থানীয় সময় বুধবার বিকেল ৩টার দিকে। বিস্ফোরণে আহতদের উদ্ধার করতে যখন সভায় উপস্থিতরা ঘটনাস্থলে জড়ো হন, তখন অর্থাৎ ২০ মিনিট পর দ্বিতীয় বিস্ফোরণটি ঘটানো হয়। এটির প্রভাব ছিল ধ্বংসাত্মক।’
বোমা বিস্ফোরণে হতাহত হওয়ার ঘটনায় বৃহস্পতিবার একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা করেছে ইরান।
ঘটনার পর ইরানের বিচার বিভাগের প্রধান গোলাম হোসেন মোহসেনি-ইজেই বিবৃতি দিয়েছেন। তিনি বলেন, এই নৃশংস ঘটনার হোতা ও বাস্তবায়নকারীদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তির আওতায় আনা হবে।
সব তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে অপরাধীদের শনাক্ত করে তাদের ধরে আইনের হাতে তুলে দিতে ইরানের গোয়েন্দা বিভাগ, নিরাপত্তা বিভাগ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে অবিলম্বে কাজ শুরু করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি।
এখন পর্যন্ত নৃশংস এই বোমা হামলার দায় স্বীকার করেনি কোনো পক্ষ বা সংগঠন। তবে ওয়াশিংটনে বাইডেন প্রশাসনের এক সিনিয়র কর্মকর্তা বলেছেন, বিস্ফোরণগুলো অতীতে ইসলামিক স্টেট জঙ্গিদের পরিচালিত ‘সন্ত্রাসী হামলা’র মতো বলে মনে হচ্ছে।
এ বিস্ফোরণকে ‘জঘন্য ও অমানবিক অপরাধ’ বলে অভিহিত করে এর নিন্দা করেছেন ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসি। একই সঙ্গে রক্তাক্ত এ জোড়া বোমা হামলার প্রতিশোধ নেওয়ার অঙ্গীকার করেছেন দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনি।