আন্তর্জাতিক ডেস্ক-
জরুরি সমন্বিত পদক্ষেপই জলবায়ুবিষয়ক আসন্ন বিপর্যয় রোধ করবে বলে মনে করছেন বিশ্ব নেতারা। এক্ষেত্রে তহবিলের পাশাপাশি সেটির যথাযথ ব্যবহার প্রয়োজন বলে মনে করেন তারা।
জাতিসংঘের জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক সম্মেলনে (কপ২৮) অংশ নিয়ে অংশীজনরা প্রতিনিয়তই আলোচনা করছেন সংকট সমাধানের। জলবায়ু পরিবর্তন রোধে ঐক্যবদ্ধ পদক্ষেপের অংশ হিসেবে সরকারি-বেসরকারি খাতের অংশীদারত্বের আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা।
জলবায়ু বিপর্যয় থেকে বিশ্বকে বাঁচাতে উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছেন ব্রিটিশ রাজা চার্লস। তিনি তার বক্তব্যে বলেছেন, ‘পৃথিবী আমাদের নয়, আমরাই পৃথিবীর। প্রাকৃতিক নানা দুর্যোগ এরই মধ্যে বিপদের মুখে থাকা বিভিন্ন দ্বীপ দেশসহ ভারত, বাংলাদেশের নানা অংশে তাণ্ডব ঘটিয়েছে; পাকিস্তান নজিরবিহীন বন্যার মুখোমুখি হয়েছে। আট বছর আগে ফ্রান্সের প্যারিসে কপ২১ সম্মেলনে ভাষণ দিতে পেরে আমি উদ্বেলিত হয়েছিলাম। প্যারিস জলবায়ু চুক্তি হয়েছিল। সেটি ছিল আশা, ইতিবাচকতার এক মাইলফলক মুহূর্ত। বিভিন্ন দেশ মতবিরোধ সরিয়ে রেখে ভালো কিছু করার জন্য একত্রিত হয়েছিল।’
ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রতিটি দেশকে তাদের জলবায়ু লক্ষ্যমাত্রা পূরণ করতে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে আহ্বান জানিয়েছেন। তিনি বলেন, আজ সারা বিশ্ব আমাদের দেখছে। পৃথিবী তার ভবিষ্যৎ রক্ষার জন্য আমাদের দিকে তাকিয়ে আছে। আমাদের সফল হতে হবে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক বলেন, আমরা প্রত্যেককে সাহায্য করার জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি সম্পর্কে বাস্তববাদী হওয়া উচিত। শুধু বিশ্বনেতা হলেই হবে না এটাও নিশ্চিত করতে হবে যে আমরা ঘরের মানুষদের চাহিদাকে অগ্রাধিকার দিচ্ছি কি না।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট এমানুয়েল ম্যাক্রোঁ বলেন, গ্রুপ অফ সেভেনকে (জি৭) জলবায়ু সুরক্ষায় অন্যান্য দেশের জন্য উদাহরণ স্থাপন করতে হবে। কয়লাকে অযৌক্তিক উল্লেখ করে ২০৩০ সালের মধ্যে কয়লার অবসান ঘটাতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।
জাতিসংঘের শীর্ষ জলবায়ু কর্মকর্তা সাইমন ইমানুয়েল কারভিন স্টিয়েল বলেন, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বৈশ্বিক তাপমাত্রা নতুন রেকর্ড ভেঙেছে, যা এই বছরটিকে রেকর্ডে সবচেয়ে উষ্ণ করে তুলেছে এবং বিপদজনকভাবে ১.৫ সেলসিয়াসের থ্রেশহোল্ডের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। অথচ দেশগুলো প্যারিস চুক্তিতে এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি প্রাক-শিল্প স্তরের উপরে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে ধরে রাখতে সম্মত হয়েছে। গুরুত্বপূর্ণ সীমার মধ্যে থাকার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে গ্রিনহাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস করা এখনও সম্ভব, তবে আরও বিলম্ব বিপজ্জনক হবে। অথচ প্রতি বছর আমরা বিন্দুর মতো পদক্ষেপ নিচ্ছি। আমাদের আরও বড় পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। যদি আমরা এই দৌঁড়ে থাকতে চাই তাহলে প্রতিটি বছরের সঙ্গে আমাদের আরও বড় লাফ দিতে হবে। আমাদের কি করতে হবে বিজ্ঞান তা একেবারে পরিষ্কার করে বলে দিয়েছে।