নিজস্ব প্রতিবেদক-
চলমান সংঘাতে বেসামরিক নাগরিকদের টার্গেট করাসহ ধ্বংসাত্মক হত্যাকান্ডে হামাস ও ইসরায়েল উভয় পক্ষকেই যুদ্ধাপরাধী বলে উল্লেখ করেছে জাতিসংঘের তদন্ত কমিশন।
বৃহস্পতিবার (৯ নভেম্বর) কাতার ভিত্তিক সংবাদ সংস্থা আল জাজিরার এক প্রতিবেদনে এই তথ্য প্রকাশিতে হয়েছে।
খবরে বলা হয়েছে, যারা আন্তর্জাতিক মানবাধিকার আইন লঙ্ঘন করছে বা বেসামরিক নাগরিকদের টার্গেট করছে তাদের অবশ্যই জবাবদিহি করতে হবে বলেও জানিয়েছে জাতিসংঘের এই কমিশন।
কমিশন জানায়, গাজার সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো কয়েকশ নিরস্ত্র বেসামরিক মানুষকে গুলি করে হত্যা করেছে বলে প্রতিবেদনে এসেছে, যা অত্যন্ত ঘৃণিত কাজ এবং যা মেনে নেওয়া যায় না। বেসামরিক মানুষকে জিম্মি এবং মানব ঢাল হিসেবে ব্যবহার করা যুদ্ধাপরাধ।
কমিশন আরও জানায়, গাজায় ইসরায়েলের সর্বশেষ হামলা এবং সম্পূর্ণ অবরোধ দেওয়ার ঘোষণায় কমিশন অত্যন্ত উদ্বিগ্ন। কেননা পানি, খাদ্য, বিদ্যুৎ এবং জ্বালানি বন্ধ করে নিঃসন্দেহে গাজার নির্দোষ মানুষদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে।
মঙ্গলবার (৮ নভেম্বর) গাজা ও মিশর উপত্যকার সীমান্তপথ রাফাহ ক্রসিং পরিদর্শনে গিয়ে এসব কথা বলেন ভোলকের তুর্ক।
জাতিসংঘের হাই কমিশনার বলেন, “ইসরায়েল, গাজা ও পশ্চিম তীরের বাসিন্দারা যে অবস্থার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন, তাকে এই অঞ্চলের গত ৫৬ বছরের ইতিহাসের সবচেয়ে বিপজ্জনক পর্যায় বলা যায়।”
উল্লেখ্য, গত ৭ অক্টোবর ইসরায়েলের অভ্যন্তরে ঢুকে অতর্কিত হামলা চালায় হামাস যোদ্ধারা। সেদিন থেকেই গাজায় অভিযান শুরু করে ইসরায়েলের বিমান বাহিনী। সেই অভিযান এখনও চলছে।
হামাসের হামলায় ইসরায়েলে নিহত হয়েছে দেড় হাজারেরও বেশি ইসরায়েলি ও অন্যান্য দেশের নাগরিক। এছাড়া হামলার প্রথম দিনই ইসরায়েল থেকে প্রায় আড়াইশ’ জনকে জিম্মি হিসেবে গাজায় ধরে নিয়ে যায় হামাস। অন্যদিকে, ইসরায়েলি বিমান বাহিনীর অভিযানে গাজায় নিহতের সংখ্যা ছাড়িয়ে গেছে ১০ হাজার। এই নিহতদের অর্ধেকেরও বেশি শিশু ও নারী।
এই যুদ্ধ শুরুর এক সপ্তাহ পর জাতিসংঘের সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর সংস্থা নিরাপত্তা পরিষদে গাজা উপত্যকায় যুদ্ধবিরতির আহ্বান জানিয়ে প্রস্তাব উত্থাপন করে রাশিয়া। সেই প্রস্তাবে সমর্থন জানায় চীনও। বর্তমানে জাতিসংঘ, ইসলামি বিশ্ব ও বিশ্বের অন্যান্য প্রান্তের দেশও গাজায় যুদ্ধবিরতির জন্য সোচ্চার আহ্বান জানিয়ে আসছে।