আন্তর্জাতিক ডেস্ক :
পৃথিবীর কোনো দেশে যেতে প্রয়োজন পড়বে না কোনো ভিসার। শুধু চেহারা দেখেই অতিশয় সম্মানের সঙ্গে প্লেনে যতটা সম্ভব আরাম-আয়েশের ব্যবস্থা করে নিয়ে যাওয়া হবে। আর এই সুযোগ-সুবিধা শুধু ব্রিটেনের রাজা-রানির জন্য। আর ৭৩ বছর বয়সে রাজা হয়ে তৃতীয় চার্লস এই সুবিধাগুলো পাবেন।
রাজা তৃতীয় চার্লস পাসপোর্ট ছাড়াই বিদেশ ভ্রমণ করবেন। রাজপরিবারের অন্যান্য সদস্যদের মতো তার এই নথিটির প্রয়োজন পড়বে না। তার নামেই সবকিছু নথিভুক্ত হবে। প্রতিটি নথিতে বলা থাকবে যে, ‘মহামান্য রাজার নামানুসারে নথি অধিভুক্ত করা হোক এবং তাকে যথাযোগ্য মর্যাদায় ও প্রয়োজনীয় সুরক্ষা দেয়ার ব্যবস্থা করা হোক।’ একই কারণে ব্রিটেনে রাজাই হবেন একমাত্র ব্যক্তি যিনি লাইসেন্স ছাড়া গাড়ি চালাতে পারবেন।
পাসপোর্ট ও লাইসেন্স প্রয়োজন না থাকার পাশাপাশি ব্রিটিশ রাজা ভোটও দিতে পারবেন না। একই সঙ্গে কোনো ধরনের নির্বাচনেও দাঁড়াতে পারেন না। রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে তাকে অবশ্যই রাজনৈতিক বিষয়ে কঠোরভাবে নিরপেক্ষ থাকতে হবে। তিনি সংসদীয় অধিবেশনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন, সংসদের আইন অনুমোদন এবং প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাপ্তাহিক বৈঠকে অংশ নেবেন।
আরো মজার বিষয় হলো, নিজের একটি জন্মদিন থাকলেও, বছরে তিনি দুবার নিজের জন্মদিন উদযাপন করতে পারবেন। চার্লসের মা, রানি দ্বিতীয় এলিজাবেথেরও দুটি জন্মদিন ছিল। তার প্রকৃত জন্মদিন ২১ এপ্রিল, যেটি ব্যক্তিগতভাবে অনুষ্ঠিত হতো। আরেকটি জুনের দ্বিতীয় মঙ্গলবারে একটি সরকারি ও জনগণের জন্য উদযাপনের দিন ছিল। যখন গ্রীষ্মের আবহাওয়া বাইরের প্যারেডের জন্য বেশ উপযোগী ছিল।
যেহেতু চার্লসের জন্মদিন ১৪ নভেম্বর শীতের শুরুতে, তাই সম্ভবত গ্রীষ্মের কোনো এক দিন সাধারণ জনগণের উদযাপনের জন্য সরকারিভাবে নির্ধারণ করা হবে। গত ২৫০ বছর ধরে সর্বসাধারণের জন্য এই জন্মদিন উদযাপনের রীতি চলে আসছে। আর এই উদযাপনে রঙিন কুচকাওয়াজে অংশ নেয় ১ হাজার ৪০০-র বেশি সেনা, ২০০টি ঘোড়া এবং ৪০০ সামরিক সংগীতজ্ঞ বা ব্যান্ড পার্টি। একই সঙ্গে ব্রিটিশ রয়্যাল এয়ার ফোর্সের সুদৃশ্য মহড়া রাজপরিবারের সদস্যরা লন্ডনের বাকিংহাম প্যালেসের বারান্দা থেকে অবলোকন করবেন।
এ ছাড়া ব্রিটিশ রাজা শুধু মানুষের ওপর রাজত্ব করেন না। ১২ শতক থেকে ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসজুড়ে বিভিন্ন হৃদ ও নদীতে বিচরণকারী রাজহাঁসও রাজার সম্পত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। একই সঙ্গে রাজকীয় জলসীমায় থাকা ডলফিন ও তিমিরাও রাজার সম্পত্তি।