সোহেল রানা, ঢাকা:
বাংলাদেশে গতকাল রোববার থেকে পবিত্র মহররম মাস গণনা শুরু হয়েছে। সে অনুযায়ী আগামী ৯ আগস্ট (মঙ্গলবার) সারা দেশে পবিত্র আশুরা পালিত হবে। ইসলামিক ফাউন্ডেশনের বায়তুল মোকাররম সভাকক্ষে জাতীয় চাঁদ দেখা কমিটির সভায় এ সিদ্ধান্ত হয়। এতে সভাপতিত্ব করেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব মু. আ. আউয়াল হাওলাদার।
হিজরি সনের মহররম মাসের ১০ তারিখ আশুরায় বাংলাদেশে সরকারি ছুটি থাকে। এই দিনে মহানবী হজরত মুহাম্মদ (সা.)-এর দৌহিত্র হজরত ইমাম হোসেন (রা.) ফোরাত নদীর তীরে কারবালা প্রান্তরে শহীদ হন। সেই থেকে মুসলিম বিশ্বে কারবালার শোকাবহ ঘটনাকে ত্যাগ ও শোকের প্রতীক হিসেবে পালন করা হয়।
মুসলিম উম্মাহর এই অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে সারাদেশে পুলিশ সতর্ক রয়েছে । সাভারেও একই নির্দেশনা পালনে আগাম সতর্কবার্তা পাঠিয়েছেন সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী মাইনুল ইসলাম, পিপিএম।
সাভার মডেল থানার অফিসার ইনচার্জ কাজী মাইনুল ইসলাম পিপিএম এক ভিডিও বার্তায় বলেন, মাননীয় ঢাকা রেঞ্জ ডিআইজি হাবিবুর রহমান, বিপিএম (বার), পিপিএম(বার) স্যার, ও ঢাকা জেলার শ্রদ্ধেয় পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বিপিএম,পিপিএম স্যার’দের নির্দেশনা মোতাবেক আমি বিভিন্ন সময়ে সমসাময়িক কিছু বিষয় নিয়ে আপনাদের সামনে হাজির হয়ে থাকি। আপনারা জানেন, আসছে ১০ই মহরম পবিত্র আশুরা। মুসলিম উম্মাহর জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দিন।
সে উপলক্ষে আমাদের সাভার মডেল থানার পক্ষ থেকে জনসাধারণের জন্য কিছু নির্দেশনা রয়েছে। যা দৈনিক তৃতীয় মাত্রার মাধ্যমে হুবহু তুলে ধরা হলো :
১. পবিত্র আশুরার দিন মুসলমানগণ ইবাদতের মধ্য দিয়ে অতিবাহিত করে থাকেন। অনেকেই এ দিনটিতে বিভিন্ন পটকা, আতশবাজি, ফানুস উড়ানো, মোমবাতি প্রজ্বলন ও আলোকসজ্জাসহ নিজেকে নিজে আঘাত করে রক্তাক্ত করে থাকে। উঠতি বয়সের ছেলেরা অনেক এলাকায় আনন্দ উৎসবের নামে গাড়িতে সাউন্ড বক্স লাগিয়ে রাস্তাঘাটে ঘুরে জনসাধারণের রাস্তায় চলাচলের বিঘ্ন সৃষ্টি করে, যা এই পবিত্রতম দিনের পবিত্রতা নষ্ট করে। সম্মানিত অভিভাবকদেরকে আমরা জানাতে চাই যে, আপনার সন্তান যেন এই পবিত্রতম দিনটিতে আনন্দের নামে এই দিনটির পবিত্রতা নষ্ট না করে। আপনারা সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখবেন।
২. পবিত্র আশুরা উপলক্ষে আয়োজিত ধর্মীয় অনুষ্ঠান চলাকালে দুষ্কৃতিকারীরা যাতে কোন প্রকার গুজবের মাধ্যমে অরাজকতা সৃষ্টি করতে না পারে সে বিষয়ে সকলকে সতর্ক থাকতে হবে।
৩. মুসলমানগন নিজেরা শিয়া, সুন্নি মতাদর্শগত বিরোধকে কেন্দ্র করে যাতে কোন প্রকার অনাকাঙ্খিত ঘটনায় জড়িয়ে না পড়ে এজন্য আমাদেরকে সর্বোচ্চ সহিষ্ণু ও ধৈর্যধারণ করতে হবে।
৪. পবিত্র আশুরাকে কেন্দ্র করে স্বার্থান্বেষীমহল/জঙ্গিগোষ্ঠী নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড ঘটাতে পারে এজন্য সকলেই এ বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
৫. তাজিয়া মিছিলে ছোরা বল্লম, চাকুসহ কোন ধরনের অস্ত্র এবং ব্যাগ/পোটলা বহন করা যাবে না।
৬. ফেসবুকসহ সোশ্যাল মিডিয়ায় ধর্মীয় উস্কানিমূলক স্ট্যাটাস ও পোস্ট এর বিষয়ে সকলে সজাগ থাকা এবং এ বিষয়ে কোন তথ্য পেলে সংশ্লিষ্ট থানা পুলিশকে অবহিত করা।
৭. পবিত্র এ দিনটিতে যেন কোন অপ্রীতিকর ঘটনার সৃষ্টি না হয় এ জন্য সকলের প্রতি উদাত্ত আহ্বান জানাচ্ছি। যেকোন পরিস্থিতি মোকাবেলায় আমরা থানা পুলিশ আপনাদের পাশে রয়েছি।