শুক্রবার রাতে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দিগ্ধ আরও ১ রোগীর মৃত্যু হয়েছে। তার নাম আব্দুল আজিজ (৫৬)। তিনি সদর উপজেলার চুড়ামনকাটি ইউনিয়নের ছাতিয়ানতলা গ্রামের পশ্চিমপাড়ার মৃত আলেক সরদারের ছেলে। মৃতের ছেলে চুড়ামনকাটি ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি শামিম কবির ওয়াসিমের অভিযোগ, হাসপাতালে ভর্তির পরও বিনা চিকিৎসায় আমার পিতা মারা গেছেন।
ওয়াসিম জানান, প্রচন্ড জ্বর ও শ্বাসকষ্ট অবস্থায় আমার পিতা আব্দুল আজিজকে শুক্রবার সকাল ৭টার পর যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নেয়া হয়। জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে রোগীকে ভর্তি করে আইসোলেশন ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেন। ওয়ার্ডে নেয়ার পর কোন চিকিৎসক রোগীকে ব্যবস্থাপত্র দিতে আসেননি। সেবিকাদের ডাকলেও কেউ রোগীর কাছে আসেননি। জরুরি বিভাগ থেকে চিকিৎসকের লেখা ব্যবস্থাপত্র অনুযায়ী আমরা নিজেরা রোগীর ওষুধ খাইয়েছি। সকল প্রকার ওষুধ সামগ্রী বাইরে থেকে কিনে এনেছি।
বিনামূল্যের কোন ওষুধ আমাদের রোগীর দেয়া হয়নি।
রাত ৭টার পর আমার পিতার শ্বাসকষ্ট বেশি হলে অনেক কাকুতি মিনতির পর একজন ইন্টার্ন চিকিৎসক আসেন। তিনি দুর থেকে রোগীকে দেখে ব্যবস্থাপত্রে একটি ইনজেকশনের নাম লিখে দেন। ইনজেকশনটি কিনে আনলে সেবিকা শরীরে প্রয়োগ করার কিছু সময় পর আমার পিতা মারা যান। ওয়াসিম আরো জানান, করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তির পর থেকে আমার পিতার চিকিৎসায় অবহেলা করা হয়েছে। শেষপর্যন্ত বিনা চিকিৎসায় রাত ৯টার দিকে তিনি পৃথিবী থেকে বিদায় নিলেন।
হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ জানান, করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া আব্দুল আজিজ নামে এক রোগীর চিকিৎসাধীন অবস্থায় রাতে মৃত্যু হয়েছে। তিনি জ্বর ও শ্বাসকষ্ট নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। ভর্তির পর রোগীর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ফলাফল আসলে নিশ্চিত হওয়া যাবে তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন কিনা। চিকিৎসাসেবায় অবহেলার বিষয়ে তাকে কেউ অভিযোগ করেননি। মৃত ব্যক্তির স্বজনেরা লিখিত অভিযোগ করলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে বলে জানান আরএমও ডা. আরিফ আহমেদ।
উল্লেখ্য, এরআগে শুক্রবার বিকেলে আইসোলেশন ওয়ার্ডে মৃত্যু হয় শার্শা উপজেলার বেনিপুড়ি গ্রামের আরশাফ আলীর ছেলে জিয়াউর রহমান (৩৭)। আর বৃহস্পতিবার মারা গিয়েছিলেন যশোর সদর উপজেলার ঝুমঝুমপুর এলাকার মৃত কিসমত আলীর ছেলে (৫৭) ও নওদাগ্রামের কায়েশ বিশ্বাসের ছেলে সাধু বিশ্বাস (৩১)।