স্বামী হিশাম চিশতীর সঙ্গে টানাপোড়েন শুরু হয়েছে তমা মির্জার। পারস্পরিক মামলাও করেছেন তারা। মামলা করে কানাডা চলে গিয়েছেন তমার স্বামী হিশাম। এবার সেখান থেকে মুখ খুলেছেন তিনি। ফেসবুকে লম্বা স্ট্যাটাসে হিশাম জানিয়েছেন পুরো ঘটনা। তিনি জানান, ২০১৮ সালে গায়ক স্বপ্নিল সজীবের মাধ্যমে চিত্রনায়িকা তমা মির্জার সঙ্গে তার পরিচয়। কয়েকমাস ফোনে কথা বলার পর ২০১৯ সালের মে মাসে বিয়ের পিঁড়িতে বসেন তারা। বিয়ের পর তমার বাবার পরিবারের খরচ চালানোর দায়িত্ব হিশামের ওপর আসে। হিশামের সঙ্গে বিয়ের আগে আরও দুবার তমা মির্জার বিয়ে হয়েছিল। তার আগের বিয়ের ছবি হিশামের কাছে পাঠানো হয়। খবরটি শুনে মানসিক ভাবে ভেঙে পড়েন হিশাম। কিন্তু সংসার টিকিয়ে রাখার স্বার্থে মেনে নেন সব।
তিনি আরও জানান, স্বর্ণের দোকানে বিনিয়োগ করার জন্য হিশামের কাছ থেকে ২০ লাখ টাকা ধার নিয়েছেন তমা মির্জার মা। তারপরও প্রতি মাসে সংসার খরচের টাকা, ভাইয়ের টিউটরের খরচ, মা-বাবার চিকিৎসা, কুকুরের খাওয়ার খরচ- এধরনের বিভিন্ন অজুহাতে টাকা চাইতে থাকে তমার পরিবার।
গত আগস্ট মাসে করোনায় আক্রান্ত মাকে দেখতে বাংলাদেশে আসেন হিশাম। তখন বাসা ঠিক করার কথা বলে তার কাছ থেকে ৩ লাখ টাকা নিয়েছে তমা। মা অসুস্থ থাকায় মায়ের বাসায় ওদঠেন হিশাম। কিন্তু তমা তার সঙ্গে থাকতে রাজি হয়নি। এ নিয়ে তাদের মধ্যে টানাপোড়েন শুরু হয়। এক পর্যায়ে তমাকে কানাডা নিয়ে যাওয়া এবং সংসার খরচের জন্য মাসে একটি নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা দেওয়ার কথা বললে রাজি হয়নি তমার পরিবার। বরং তাদের সমস্যা প্রকট আকার ধারণ করে।
তমাকে ডিভোর্স দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন হিশাম, এ কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘আমার সিদ্ধান্তের কথা তাদের জানিয়ে দেই। এ কথা জানিয়ে দেওয়ার এক সপ্তাহ পরে তার পরিবারের পক্ষ থেকে আমার পরিবারের সাথে যোগাযোগ করা হয়। বলা হয় যে সংসার না ভেঙে একটা মিটমাট করে ফেলতে। আমার পরিবারও চায়নি ঘরটা ভেঙে যাক, এজন্য এত কিছুর পরেও তারা আমাকে আপোষ করতে বলেন। এমতাবস্থায় ৪ ডিসেম্বর রাতে তমা আমাকে ফোন করে কান্নাকাটি করে এবং বলে যে তার বাড়িতে গিয়ে বিষয়টা মিমাংসা করে ফেলতে। তার কথা বিশ্বাস করে আমি সেই রাতে তাদের বাসায় যাই। তাদের বাসায় যাওয়ার পর আমি দেখি যে তার মা, বাবা, ভাই এবং ড্রাইভার ড্রইংরুমে উপস্থিত। তার মা আমাকে বলেন, তমার ওপর নির্ভর করে তাদের সংসার চলে। তমাকে কানাডা নিয়ে যেতে হলে তাদের ২০ লক্ষ টাকা এখন দিয়ে যেতে হবে এবং প্রতি মাসে ৪ লক্ষ টাকা করে পাঠাতে হবে। আমি তখন তাদের বলি যে এই টাকা দেয়া আমার পক্ষে সম্ভব না, তারা যদি তমাকে আমার সাথে না যেতে দেন সেক্ষেত্রে আমি ডিভোর্স চাই।’
তারপর তমার মা-বাবা অশ্লীল ভাষায় গালাগালি শুরু করেন হিশামকে। প্রতিবাদ করলে তমার মা কাচের ভারী ফুলদানী দিয়ে হিশামের মাথায় আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে তার মাথা ফেটে যায় এবং তিনি নিচে পড়ে যান। তখন তমা, তার ভাই ও ড্রাইভার টেনে হিশামকে ঘরের বাইরে নিয়ে আসে এবং লোহার চেয়ার, গ্লাস এবং বিভিন্ন জিনিস দিয়ে উপুর্যপরি আঘাত করে বলে অভিযোগ করেন হিশাম।
হিশাম আরও অভিযোগ করেন, ‘তার বাবা একটি ওড়না দিয়ে আমার গলা পেঁচিয়ে ধরে। আমার চিৎকারে আশে-পাশের বাড়ির লোকজন বের হয়ে আসলে তারা আমাকে বাইরে ফেলে রেখেই ঘরে চলে যায়। লোকজন এবং আমার ড্রাইভার আমাকে ধরে হাসপাতালে নিয়ে যায়।
শেষে হিশাম জানান, তার হাত ভেঙে দুই টুকরো হয়ে গেছে। এখনো আশঙ্কামুক্ত নন তিনি। তমার আনা যৌতুকের অভিযোগ সম্পূর্ণ হাস্যকর এবং ভিত্তিহীন। টাকা এবং কানাডিয়ান নাগরিকত্ব পাওয়ার জন্যই হিশামের সঙ্গে তমার বিয়ে দেন তার পরিবার।