করোনা আমাদের অনেক কিছুই শিক্ষা দিয়েছে।করোনাকালীন এ ভাল শিক্ষাগুলো যদি আমরা রপ্ত করি তাহলে করোনা পরবর্তী জীবনেও আমরা যথেষ্ট উপকৃত হব।যেমন ঘন ঘন সাবান দিয়ে হাত ধোওয়া, মুখে মাক্স পরা, বাহির থেকে ঘরে এসে আগে বাথরুমে গিয়ে পরিস্কার পরিচ্ছন্ন হওয়া।এ অভ্যাসগুলো ধরে রাখতে পারলে তা আমাদের কল্যান বয়ে আনবে।সবকিছু ছাপিয়ে করোনাকালীন এই সময়ে আমরা সেবা ও মহানুভবতার যে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত দেখেছি তা চিরদিন মানুষের মনে দাগ কাটবে।
স্ত্রী সোফিকে আইসোলেশনে রেখে কানাডার প্রধানমন্ত্রী ট্রুডো তার জনগনের জন্য কেদেছেন।বিপুল পরিমান অর্থ ব্যয় করেছেন জনগনের কল্যানে।তার এ কান্না ছিল একজন দেশপ্রেমিকের সত্যিকারের চোখের পানি,ট্রুডোকে স্যালুট।ধন্য কানাডাবাসী।
আমি মমতাকে দেখেছি নিজে জনগনের হাতে মাক্স তুলে দিচ্ছেন। মানুষকে সামাজিক দূরত্ব বোঝাচ্ছেন।বিপদে ধৈর্যহারা না হয়ে অবিচল থেকেছেন, অটল থেকেছেন।মমতা সাধ্যমত চেষ্টা চলিয়ে যাচ্ছেন করোনাকালীন আপদ কাটিয়ে উঠার জন্য, জনগনের সেবা করে যাচ্ছেন নিরলসভাবে।মমতার এ চেষ্টা স্বার্থক হোক, সফল হোক ।
বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যক্রম চোখে পড়ার মতন।করোনাকালীন বিভিন্ন সেবা পৌছে দিচ্ছেন জনগনের দৌড়গোড়ায়।কোথাও কোনো অনিয়ম হলে সঙ্গে সঙ্গে শাস্তি দিচ্ছেন দূস্কৃতিকারীকে।করোনাকালীন সময়ে তিনি সত্যিকারের একজন ক্রাইসিস ম্যানেজারের ভূমিকা পালন করছেন।স্বশ্রদ্ধ সালাম তাকে।রাষ্টীয় পর্যায় ছাড়াও ব্যক্তিগত পর্যায়ে অনেকের সাহায্য সহযোগিতা ছিল অনুকরনীয়।বিভিন্ন ওয়েলফেয়ার এ্যসোসিয়েশন, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন এমনকি করোনাকালীন মানুষকে সহযোগিতা করার জন্য তাৎক্ষনিকভাবে গড়ে উঠা সংগঠনগুলোর ভূমিকাও অনিস্বীকার্য।
ডাক্তার, নার্স এমনিতেই সেবাধর্মী পেশা।তারপরেও নিজের মৃত্যুকে সাঙ্গ করে তারা যে করোনা রোগীকে সেবা দিয়ে যাচ্ছে তাদের এ অবদান সত্যিই শোধ হবার নয়।অনেক দেশেই অবসরে যাওয়া ডাক্তাররা শুধুমাত্র করোনা রোগীর সেবার জন্য পুরানো পেশায় ফিরে এসেছেন।
বাংলাদেশ পুলিশ যাদের শুধু দূর্নামই আমি শুনেছি।কোন ভাল কাজ করলেও তাদের দূর্নামের ভাগ এত বেশি যে,ভালো কাজটিও চাপা পড়ে গেছে।কিন্তু এবার করোনায় পুলিশের ভূমিকা প্রসংশনীয়।এই রকম মানবিক পুলিশ আমরা চাই।পুলিশ জনগনের বন্ধু এ কথার যথার্থতা এবার পাওয়া গেছে।
সিভিল প্রশাসনও দিন রাত পরিশ্রম করে যাচ্ছে।করোনায় আক্রান্ত হয়ে কেউ মারা গেলে ভয়ে কেউ দাফন, কাফন করছেনা, এরকম পরিস্থিতে টি এন ও’র নেতৃত্বে দাফন কাফনের ব্যবস্থ্য করা হচ্ছে।আল্লাহ বলেছেন, জীবে দয়া করে যে জন সেজন সেবিছে ঈশ্বর।
বাজশাহীর একটি ছোট বাচ্চা ছেলে তার সুন্নতে খাৎনা উপলক্ষে উঠা সব টাকা মেয়র লিটনের হাতে তুলে দিয়েছিলো করোনাকালীন মানুষের সেবার জন্য।এরকম অনেক উদাহরন আছে, যার কোনটি আমরা জানি কোনটি জানিনা।
দানকে অনেকে ফ্যাশন হিসেবে নিয়েছে।তারপরেও তাদেরকে ধন্যবাদ, তাদের দেখাদেখি অন্যদের বিবেক জাগ্রত হয়েছে।পথের পশুদের জন্য আহারের ব্যবস্থ্যা করে অনেকে অনুকরনীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন।আমাদের দেশের সিনেমার নায়ক নায়িকারা তাদের ইন্ড্রাসট্রির গরীব শিল্পীদের সহযোগিতা করে সত্যিকার নায়ক নাযিকায় পরিনত হয়েছেন।
শাকিব,মুশফিক এবং মাশরাফি তাদের ব্যাট ও ব্রেসলেট বিক্রির যাবতীয় টাকা করোনাকালীন মানবকল্যানে ব্যয় করেছেন।ব্লাড ব্যাংক বোয়ালমারী, বোয়ালমারীর প্রত্যন্ত এলাকায় খাদ্যসামগ্রী পৌছে দিচ্ছে নিজস্ব অর্থায়নে।বিভিন্ন এনজিও তাদের সাধ্যমতো চেষ্টা করছে গরীব, দুঃখী মেহনতি মানুষের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার জন্য।গ্রামীনফোন ও ব্রাকের যৌথ উদ্যোগে ”ডাকছে আমার দেশ” যথেস্ট সুনাম অর্জন করেছে।হাওর এলাকা তথা সমগ্র বাংলাদেশে কৃষকের ধান কেটে ঘরে তুলে দিয়েছে ছাত্রলীগ, স্বেচ্ছাসেবকলীগ, কৃষকলীগসহ বিভিন্ন অঙ্গসংগঠন।
এমনই একটি মানবিক পৃথিবীইতো আমরা চাই।যেখানে থাকবেনা কোন হানাহানি, মারামারি, থাকবেনা অস্ত্রের ঝনঝনানি।উঠে যাবে হিংসা বিদ্বেষ।থাকবে শুধু মানবিক মূল্যবোধ, পারস্পারিক সাহায্য, সহযোগিতা ও ভালোবাসা।তাই আসুন একসাথে বলি মানবতার জয় হোক।