ভারতে মহামারি করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ক্রমশ বেড়ে চলেছে। ইতোমধ্যে মৃত্যুপুরী স্পেনকে ছাড়িয়ে সংক্রমণের তালিকায় পঞ্চম স্থানে উঠে এসেছে দেশটি। ছাড়িয়ে যাওয়ার অপেক্ষায় চতুর্থ স্থানে থাকা যুক্তরাজ্যকেও। যেভাবে সংক্রমণ বাড়ছে তাতে তালিকায় শীর্ষে থাকা অন্যান্য দেশকেও ছাড়িয়ে যেতে সময় লাগবে না বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
ভারতে সবচেয়ে বেশি বিপর্যস্ত মহারাষ্ট্র। শুধু এ রাজ্যেই সংক্রমণের সংখ্যা চীনের মোট সংক্রমণকেও ছাড়িয়ে গেছে। এরপরই অবস্থান করছে রাজধানী দিল্লি। সেখানে মোট সংক্রমণের সংখ্যা আগামী ৩১ জুলাই নাগাদ সাড়ে পাঁচ লাখ ছাড়াতে পারে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। একই কথা বলেছেন অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সের ডিরেক্টর রণদীপ গুলেরিয়া।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, লকডাউন শিথিল করে দেয়ার পর থেকেই করোনার সংক্রমণ আরো দ্রুত ছড়াচ্ছে। আগামী দশ-বারো দিনে সংক্রমণের সংখ্যাটা দ্বিগুণ হবে। এভাবে চলতে থাকলে আগামী ৩১ জুলাই নাগাদ সংখ্যাটা সাড়ে পাঁচ লাখে দাঁড়াবে।
তবে সবচেয়ে বড় সমস্যা ভাইরাসটির মোকাবেলা করা নিয়ে। রাজ্যটিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে হাসপাতাল কিংবা আইসোলেশন সেন্টার নেই। যদি সংক্রমণের সংখ্যা সাড়ে পাঁচ লাখ ছাড়ায়, তাহলে সে সময় দেড় লাখের মতো আইসোলেশন বেড লাগবে। কিন্তু বর্তমানে পুরো রাজ্যে মাত্র নয় হাজারের সামান্য বেশি বেড রয়েছে। আর হাসপাতালে মোট বেড আছে ৪৯ হাজারের মতো।
এক্ষেত্রে সব বেড ব্যবহার করলেও সমস্যা মিটবে না। তাছাড়া সব বেড ব্যবহার করাও যাবে না। কারণ তখন অন্য রোগের চিকিৎসা করানো সম্ভব হবে না। তাই বিকল্প উপায় হিসেবে স্টেডিয়াম, ব্যাংকোয়েট হল এবং হোটেলগুলোতে করোনা রোগীদের রাখার চিন্তা-ভাবনা করছেন মুখ্যমন্ত্রী অরবিন্দ কেজরিওয়াল। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে বেড বাড়ালে তখন নতুন করে চিকিৎসক, চিকিৎসা কর্মী লাগবে।
এ ছাড়া অক্সিজেনের ব্যবস্থা করতে হবে, ভেন্টিলেটর লাগবে, সুরক্ষা পোশাক লাগবে। কিন্তু বর্তমানে এসবের কিছুই নেই। এ বিষয়ে চিকিৎসক পার্থ প্রতিম বোস বলেন, করোনা রোগীর সংখ্যা বাড়লে নিঃসন্দেহে বেড সংখ্যাও বাড়াতে হবে। কিন্তু তার আগে সরকারি হাসপাতালের অবস্থা ঠিক করা জরুরি। সেখানে আরো রোগী ভর্তি করাতে হবে। বেসরকারি হাসপাতালের ওপর বেশি নির্ভরশীল হলে হবে না।