ধর্ষণের প্রতিবাদে নিজের ফেসবুক পেজে ভিডিও শেয়ার করেন চিত্রনায়ক অনন্ত জলিল। সেখানে তিনি তার বক্তব্যে প্রথমে ধর্ষকদের কড়া ভাষায় সমালোচনা করেন। এরপর তিনি নারীদের অশালীন পোশাক বাদ দিয়ে শালীন পোশাক পরার আহ্বান জানান।
সেই বক্তব্যের জন্য দারুণভাবে সমালোচিত হয়েছেন অনন্ত। তার ভিডিও শেয়ার করে অনেকেই প্রতিবাদ জানিয়েছেন। একজন অভিনেতার কাছ থেকে এমন মন্তব্য হতাশাজনক বলে দাবি করছেন অনেকেই।
অবশেষে সেই প্রতিবাদ ও সমালোচনার মুখে নিজের ভিডিও সংশোধন করেছেন অনন্ত জলিল। প্রথমে পোস্ট করা ভিডিওতে নারীর পোশাকসংক্রান্ত সব মন্তব্য মুছে দিয়েছেন তিনি। ৬ মিনিটের ভিডিও এখন ৩ মিনিটের করেছেন। এটিও নতুন করে পোস্ট দিয়েছেন তার ফেসবুক পেজে। নতুন ভিডিওতে অনন্তর প্রশংসাই করছেন অনেকেই।
নারীর পোশাক নিয়ে কিছু ভুল মন্তব্য করলেও এই অভিনেতার মূল লক্ষ যে ধর্ষণ ও ধর্ষকের বিরুদ্ধে তাতে কোনো সন্দেহ নেই।
ধর্ষকদের বিচারের দাবিতে চলমান আন্দোলনে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার বিঘ্ন ঘটার কথা উল্লেখ করে অনন্ত জলিল ধর্ষকদের উদ্দেশে বলেন, এই যে তোমরা যারা ধর্ষণ করেছো, তোমরা বলব না তোরা বলব? ধর্ষণ করার কারণে যে সারাদেশে হচ্ছে আর আন্দোলনে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রার যে বিঘ্ন ঘটাচ্ছো, কেমন লাগছে তোমাদের? হাসি পাচ্ছে? তোমাদের সামনে তোমাদের স্ত্রী কন্যাদের যদি কেউ রেপ করে তাহলে তোমার কেমন লাগবে?
অনন্ত জলিল দেশের সব মেয়েদের উদ্দেশে ‘ভাই’ হিসেবে কিছু কথা বলেন। বখাটেদের হাত থেকে বাঁচতে তিনি শরীর আচ্ছাদনের কথাও বলেন এ সময়। নারীদের পাশ্চাত্য দেশের পোশাক ‘ফলো করে’ তা পরিধানে নিষেধ করেন। তিনি বলেন, এইসব ড্রেসআপ দেখে চেহারার দিকে না তাকিয়ে বখাটেরা তোমার ফিগারের দিকে তাকায়, এরপর বিভিন্ন মন্তব্য করে, এবং রেপ করার চিন্তা তাদের মাথায় আসে।
‘মডার্ন’ জামাকাপড়ের কথা তুলে জলিল বলেন, তোমরা কি নিজেদের মডার্ন মনে করো? অ্যাঁ? এটা কি মডার্ন ড্রেস? না অশালীন ড্রেস। এটা মডার্ন ড্রেস হতে পারে না। মডার্ন ড্রেস হবে যেখানে ফেস দেখা যাবে যেটা আল্লাহতায়লা দিয়েছেন। কিন্তু যে বডিটা আছে সেখানে শালীনভাবে পোশাক পরতে হবে। নিজেকে পাশের একজন ভদ্রমেয়ের কাছে জিজ্ঞাসা করে দেখো, তোমাকে কত বাজে লাগে দেখতে।
নারীদের টিশার্ট পরার কারণে ‘ইজ্জত শেষ’ হয়ে যায় উল্লেখ করে অনন্ত এই ভিডিওতে আরও বলেন, ছেলেদের মত একটা টিশার্ট পরে বের হয়ে যাও, মডার্ন মেয়ে তুমি! খুব মডার্ন! তারপর ইজ্জত শেষ করে আত্মহত্যা করো, না হয় মানুষের সামনে মুখ দেখাতে পারো না, এটা কি মডার্ন? শালীন ড্রেস পরলে যারা বখাটে যাদের মাথায় ধর্ষণের চিন্তাভাবনা আছে তারা তোমার দিকে শ্রদ্ধার দিকে তাকাবে। এরপর চোখ নিচের দিকে নিয়ে নেবে।
ভিডিওর শেষে ধর্ষকদের মৃত্যুদণ্ড চেয়ে প্রধানমন্ত্রীর নিকট আবেদনও জানান। অনন্ত বলেন, প্রধানমন্ত্রীর কাছে আমার আকুল আবেদন, আপনি আমাদের অভিভাবক। এসব অমানুষদের বিরুদ্ধে মৃত্যুদণ্ড আইন ও তা বাস্তবায়নের নির্দেশ দিতে হবে। আপনার দিকে সবাই তাকিয়ে আছে আপনি কখন নির্দেশ দেবেন।