করোনাভাইরাসের সংক্রমণ ঠেকাতে গত আড়াই মাস ধরে বন্ধ থাকার পর ধাপে ধাপে পুনরায় চালু হতে যাচ্ছে কাতারের স্বাভাবিক জনজীবন। আগামী ১৫ জুন থেকে কাতারে চার ধাপে পুনরায় সব খুলে দেওয়া হবে।
গতকাল সোমবার কাতার দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কমিটির আয়োজনে দোহায় এক সংবাদ সম্মেলনে কমিটির মুখপাত্র লুলয়া আলখাত এসব তথ্য জানিয়েছেন।
লুলয়া আলখাত জানান, আগামী ১৫ জুন থেকে কাতারে চার ধাপে পুনরায় সব খুলে দেওয়া হবে। কাতার থেকে আন্তর্জাতিক রুটে বিমান চলাচল, মসজিদে সীমিত আকারে নামাজ আদায়, শপিংমল ও দোকান ইত্যাদি পুনরায় চালু করা হবে সীমিত সময়ের জন্য, যা পর্যায়ক্রমে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে পুরোপুরি খুলে দেওয়া হবে।
কমিটির মুখপাত্র আরও জানান, কাতার থেকে বিদেশি নাগরিকদের নিজ দেশে ফিরে যাওয়ার জন্য কাতারের হামাদ আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সকল কার্যক্রম আগামী ১৫ জুন থেকে পুরোপুরি চালু করা হবে। এ ছাড়া শর্তসাপেক্ষে ধীরে ধীরে কাতারেও প্রবেশ করতে পারবে বিভিন্ন দেশের নাগরিকরা।
এ ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, যারা অন্য দেশ থেকে দোহায় ফিরবেন, তাদের নিজ খরচে দুই সপ্তাহের জন্য কাতারের যেকোনো হোটেলে কোয়ারেন্টিনে থাকতে হবে। কেউ চাইলে নিজ ঘরে কোয়ারেন্টিনে থাকতে পারবেন না, হোটেলেই অবস্থান করতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, যেসকল দেশে করোনা সংক্রমণের হার কম, সেসকল দেশের নাগরিকরা আগামী ১ আগস্ট থেকে কাতারে আসতে পারবেন। তবে এক্ষেত্রে কাতার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সকল নির্দেশনা মেনে আসতে হবে। এ ছাড়া যাদের কাতার আইডি আছে, তারা দোহায় আসার ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার পাবেন। তবে বিভিন্ন দেশ থেকে উন্মুক্তভাবে কাতারে ফিরে আসার বিষয়টি আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে পুরোপুরি শুরু হবে।
এ ছাড়া কাতার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের বিধিনিষেধ মেনে আগামী সেপ্টেম্বর মাসে গণপরিবহন চালু করা হবে। আগস্ট মাস থেকে ড্রাইভিং স্কুলগুলো পুনরায় খুলে দেওয়া হবে।
লুলয়া আলখাত জানান, আগামী সপ্তাহ থেকে কাতারে আংশিকভাবে মসজিদ খুলে দেওয়া হবে এবং পরবর্তী সময়ে স্বাস্থ্যবিধি মেনে ধাপে ধাপে সকল মসজিদ খুলে দেওয়া হবে। এ ছাড়া মসজিদে নামাজ আদায়ের ক্ষেত্রে মানতে হবে শর্ত। তবে এখনই মসজিদগুলোতে জুমার নামাজ আদায় হবে না। এইভাবে আগামী জুলাই মাসেও চলবে। তবে আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সকল মসজিদ খুলে দেওয়া হবে এবং নিয়মিত জুমার নামাজ আদায় করা হবে।
আগামী ১৫ জুন থেকে শপিংমলে ৩০০ মিটারের বেশি আয়তনে সেসব দোকান ঘরগুলো আছে, সেগুলো সীমিত আকারে খুলে দেওয়া হবে। তা ছাড়া আগামী ১ সেপ্টেম্বর থেকে সবধরনের শপিংমল ও দোকান আগের ন্যায় পুরোপুরি খোলা হবে এবং পাশাপাশি সকল রেস্টুরেন্ট ও খাবারের দোকান খুলে দেওয়া হবে। আগামী ১ আগস্ট থেকে সবধরনের সেলুন ও পার্লার খোলা হবে। এ ছাড়া সেপ্টেম্বর মাসে সকল পাইকারী পণ্যের মার্কেট, বিনোদনস্থান ও মিউজিয়ামগুলো খুলে দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, কাতারে এখন পর্যন্ত ৯ জন বাংলাদেশি করোনায় মারা গেছেন এবং আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৮ হাজার। তবে দেশটিতে মোট আক্রান্ত হয়েছেন ৭০ হাজার ১৫৮ জন। মারা গেছেন ৫৭ জন। আর সুস্থ হয়েছেন ৪৫ হাজার ৯৩৫ জন।