‘যাঁরা মহিলাদের স্বাধীনতার কথা বলেন, তাঁদের মুখোশ খোলা দরকার ছিল।’ পায়েল ঘোষ বললেন একটি সাক্ষাৎকারে। আর তার জন্য তিনি চুপ না থেকে তাঁর অভিজ্ঞতার কথা বললেন। কিন্তু এখানেই উঠে আসছে একাধিক প্রশ্ন। যা ইতিমধ্যেই টুইটারে ছেয়ে গিয়েছে। কারওর মতে এই ঘটনা আদতে সাজানো।
অনুরাগ কাশ্যপ যেহেতু উচ্চস্বরে কেন্দ্রীয় সরকারের বিরোধিতা করছেন। তাই তাঁকে চুপ করানোর জন্য এই চক্রান্ত। তার কিছু কিছু প্রমাণ জোগাড়ের চেষ্টা শুরু করেছেন অনুরাগ ভক্তরা। প্রথমত, পায়েল ইন্ডিয়া টিভির একটি সাক্ষাৎকারে বলেছেন। ‘ঘটনা টি ঘটেছে ২০১৪ থেকে ২০১৫ সালের মধ্যে।’ তাতে অনেকের প্রশ্ন, যৌন হেনস্থার এরকম একটি ঘটনার সাল কী করে তিনি ভুলে যেতে পারেন? পায়েল ঘোষ বলেছেন, ‘আমার পরিবার অত্যন্ত গোঁড়া।
তাই পরিবার এবং বন্ধুদের চাপে সেই ঘটনা এতদিন কাউকে বলতে পারিনি। এমনকী ২০১৮ সালে যখন মি-টু আন্দোলন শুরু হয়, তখন একবার টুইটারে এ ঘটনার কথা লিখে পোস্ট করেও পারিবারিক চাপে তা ডিলিট করতে বাধ্য হই।’ এই বক্তব্যের ক্ষেত্রে কেউ কেউ আবার ২০১৮ সালে তাঁর একটি পোস্ট সামনে তুলে এনেছেন। যেখানে তিনি ‘মি টু’ আন্দোলনের নিন্দা করেছিলেন। ধর্ষণের অভিযোগ করাকে ‘নাটক’ বলে মহিলাদের চরিত্রহনন করতে উঠে পড়ে লেগেছিলেন।
তিনি লিখেছিলেন, ‘কেউ ধর্ষণ করেনা। তারা (পুরুষেরা) কেবল সুযোগ নেওয়ার চেষ্টা করে। তোমার না পোষালে তুমি বেরিয়ে যাও সেখান থেকে। সেটা নিয়ে বিরাট নাটক করার কোনও দরকার নেই তার পরে।’
এখন অনেকেই অভিনেতা সায়ামি খেরের একটি লম্বা টুইটের কথা উল্লেখ করছেন। যেখানে তিনি অনুরাগের সঙ্গে ‘চোকড’– এ কাজ করার পর তাঁর অভিজ্ঞতার কথা লিখেছিলেন। ২২ জুন তিনি টুইট করে জানান, তাঁকে অনেকবার অনুরাগের বাড়িতে যেতে হয়েছিল। প্রথমবার তাঁর বাড়িতে পা রাখতেই তিনি কিছু বলার আগে অনুরাগ তাঁকে বলেছিলেন,
‘আমার বাবা মা আমার সঙ্গেই থাকেন। তাই বলছি, তুমি অস্বস্তিবোধ কোরো না।’ যতবারই তাঁর বাড়িতে যেতে হয়েছিল, তিনি একবারের জন্যেও অস্বস্তিবোধ করেননি।
এবং অনুরাগকে একজন পুরুষ হিসেবে তিনি প্রচণ্ড সম্মান করেন বলে জানিয়েছিলেন। এবং বাইরের দুনিয়া যেভাবে বলিউডের ‘ব্যাড বয়’ হিসেবে দাগিয়ে দিয়েছেন, তার ঠিক উল্টো একটি মানুষ তিনি।
এই সমস্ত ঘটনা ও টুইট ফের সামনে আসছে। আর ততই মানুষের মনে বদ্ধমূল ধারণা তৈরি হচ্ছে যে এই অভিযোগের পেছনে রাজনৈতিক চাল রয়েছে। কারণ, এসমস্ত ঘটনা তখনই ঘটল যখন বিজেপি সমর্থক কঙ্গনা ও বিজেপি বিরোধী অনুরাগের মধ্যে বাকযুদ্ধ চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল।
এবং মি টু অভিযোগ পড়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই অনুরাগ বেশ কয়েকটি টুইট করে জানান যে এই অভিযোগ সম্পূর্ণ ‘ভিত্তিহীন’।