নোটিস টাঙানো হয়েছিল সকাল ১০টা ৩৫ মিনিটে। তার আগেই বুলডোজার নিয়ে পুলিশ, পুরকর্মীরা পৌঁছে গিয়েছিলেন তাঁর পালি হিলের অফিস ভাঙতে। এমন অভিযোগ তুলে এ বার বৃহন্মুম্বই পুরসভা (বিএমসি)-র কাছে দু’কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দাবি করলেন কঙ্গনা রানাউত। পুরসভার নোটিসের ভিত্তিতে বম্বে হাইকোর্টে তাঁর দায়ের করা পিটিশন সংশোধন করে এই দাবি করেছেন তিনি নিজেই।
বাংলোর ৪০ শতাংশ ভেঙে দিয়ে মূল্যবান আসবাব ও শিল্পকর্ম নষ্ট করা হয়েছে বলে অভিযোগ বলিউড অভিনেত্রীর। বান্দ্রার পালি হিলে ৫ নম্বর বাংলোতে কঙ্গনার অফিস ‘মণিকর্ণিকা ফিল্মস’। এই বাংলোর নির্মাণে নিয়মভঙ্গের অভিযোগ তুলে গত ৭ সেপ্টেম্বর অভিনেত্রীকে নোটিস পাঠায় বিএমসি। পুর কর্তৃপক্ষের দাবি, কঙ্গনার তরফে কোনও জবাব না পেয়ে ৯ সেপ্টেম্বর ওই বাংলো ভেঙে দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়।
ওই দিনই বুলডোজার দিয়ে বাংলো ভাঙতে শুরু করেন পুরসভার কর্মী-আধিকারিকরা। বাইরে মোতায়েন করা হয় বিশাল পুলিশবাহিনী। শেষ পর্যন্ত বম্বে হাইকোর্ট ওই অফিস ভাঙার উপর স্থগিতাদেশ দেয়। নতুন পিটিশনে কঙ্গনার বক্তব্য, ‘‘অফিসের ৪০ শতাংশ ভেঙে দেওয়ার পাশাপাশি ঝাড়বাতি, সোফা, বিভিন্ন মূল্যবান শিল্পকর্ম নষ্ট করে দিয়েছে বিএমসি। নোটিস দেওয়ার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে এ ভাবে সক্রিয় হয়ে অফিস ভেঙে গুঁড়িয়ে দেওয়ার ঘটনা পূর্ব পরিকল্পিত।’’
অফিস ভাঙার ক্ষতিপূরণ হিসেবে ২ কোটি টাকা দাবি করেছেন অভিনেত্রী। এ ছাড়া বম্বে হাইকোর্ট যে স্থগিতাদেশ দিয়েছিল, সেই নির্দেশ বহাল রাখার আর্জিও জানানো হয়েছে নতুন আর্জিতে। গত বৃহস্পতিবার কঙ্গনার আইনজীবী রিজওয়ান সিদ্দিকি উচ্চ আদালতে জানান, অফিস ভাঙা রুখতে তখন তড়িঘড়ি করে আবেদন করেছিলেন কঙ্গনা। সেই আর্জি সংশোধন করতে চান তিনি। ২৯ পাতার আগের সেই পিটিশনের সঙ্গে মোট মোট ৯২ পাতার নতুন আর্জি বম্বে হাইকোর্টে মঙ্গলবার জমা দিয়েছেন রিজওয়ান।
তাতে অভিযোগ তোলা হয়েছে, ৯ সেপ্টেম্বর সকাল ১০.৩৫ মিনিটে ওই বাংলো ভাঙার নোটিস ঝোলানো হয়েছিল। তার আগেই পুলিশ ও পুরকর্মীরা বুলডোজার নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন। অর্থাৎ আগেভাগেই সব পরিকল্পনা করে রাখা হয়েছিল বলে অভিযোগ কঙ্গনার। কেন? পিটিশনে কঙ্গনার যুক্তি, মুম্বই পুরসভার নোটিসের জবাব দিয়েছিলেন তাঁর আইনজীবী রিজওয়ান। সেই আর্জি খারিজ করা হয় ৯ সেপ্টেম্বর ১০.৩৫ মিনিটে।
ওই দিনই অভিনেত্রী একটি টুইট করেন ১০টা ১৯ মিনিটে। তাঁর অফিসের সামনে পুলিশ, প্রশাসন ও পুরকর্মীরা আগেভাগেই যে অফিস ভাঙার প্রস্তুতি নিয়ে অপেক্ষা করছিলেন, ওই টুইটের ছবিতেই তা স্পষ্ট। পিটিশনে কঙ্গনার বক্তব্য, ‘‘বিএমসির যে অসৎ ও পরিকল্পিত উদ্দেশ্য ছিল, ওই টুইটারের ছবিই তার প্রমাণ।’’অন্য দিকে মামলায় দাবি করা হয়েছে, অফিস ভাঙা শুরু হতেই তাঁর আইনজীবী তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে গিয়ে হাইকোর্টের নথি দেখাতে চান। তাঁদের মামলার যে দুপুর সাড়ে ১২টায় শুনানির সময় নির্ধারিত করেছে হাইকোর্ট, সেই বিষয়টি জানাতে যান।
কিন্তু তাঁকে ভিতরে ঢুকতে না দিয়ে অফিসের গেটে বাইরে থেকে তালা লাগিয় দেওয়া হয়। আইনজীবীর কথা না শুনে ভাঙাভাঙির কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন পুরকর্মীরা।