চলতি বছরের শেষেই করোনা টিকার গবেষণা এবং উৎপাদনের ক্ষেত্রে সাফল্যের আশা করছেন বিল গেটস। মঙ্গলবার একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘‘করোনা টিকা সংক্রান্ত গবেষণায় ছ’টি সংস্থা অগ্রণী ভূমিকায় রয়েছে। আগামী বছরের গোড়াতেই এক মধ্যে তিনটির উৎপাদন ও বণ্টনের কাজ শুরু হয়ে যাবে।’’আগামী বছর করোনা টিকা ব্যবহার পুরোদমে শুরু হবে এবং কোভিড-১৯ সংক্রমণ এড়াতে তার সুফল মিলতে শুরু করবে বলেও জানান গেটস।
সেই সঙ্গে মাইক্রোসফ্টের প্রতিষ্ঠাতা দাবি, করোনা টিকার উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভারতের অংশীদারিত্ব অপরিহার্য হয়ে উঠবে। তাঁর কথায়, ‘‘করোনা টিকা তৈরি হওয়ার পরেই আমরা দ্রুতগতিতে তার উৎপাদন শুরু করতে চাই। আমার মনে হয়, বিশ্ববাসী এমন একটি টিকার প্রতি ভরসা রাখবেন, যা আমেরিকার, ইউরোপ বা ব্রিটেনের মানদণ্ডে পরীক্ষিত।’’বিশ্বজুড়ে এখন ৩৮টি সম্ভাব্য করোনা টিকার মানব বা পশুদেহে ‘ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল’ চলছে। প্রাক ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল পর্যায়ের গবেষণা চলছে ৯৩টি সম্ভাব্য করোনা টিকার উপর। তবে গেটসের মতে,
রাশিয়া বা চিনে করোনা টিকার কাজে সাফল্য মিললেও সেখানকার পরিকাঠামো পশ্চিমী দুনিয়ার সমতুল নয়।
ভারতে করোনা টিকা প্রস্তুত করতে অন্তত সাতটি পৃথক গবেষণা চলছে। ভারত বায়োটেক, সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া, জাইডাস ক্যাডিলা, প্যানাসিয়া বায়োটেক, ইন্ডিয়ান ইমিউনোলজিক্যালস, মাইনভ্যাক্স অ্যান্ড বায়োলজিক্যাল-ই-র মতো সংস্থা এই উদ্দেশ্যে কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। রাষ্ট্রায়ত্ত প্রতিষ্ঠান ‘ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর মেডিক্যাল রিসার্চ’
(আইসিএমআর)-এর সহায়তায় ভারত বায়োটেকের তৈরি সম্ভাব্য করোনা টিকা কোভ্যাক্সিনের মানবদেহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল চলছে। ব্রিটেনের অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে আমেরিকার সংস্থা অ্যাস্ট্রাজেনেকার তৈরি সম্ভাব্য করোনা প্রতিষেধক কোভিশিল্ডের মানবদেহে ক্লিনিক্যাল ট্রায়াল ও উৎপাদনের দায়িত্ব পেয়েছে পুণের সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া।
বিল ও মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন টিকা উৎপাদনের বিষয়ে সেরামের সঙ্গে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। বিল গেটস এদিন বলেন, ‘‘দ্রুত বিপুল পরিমাণে করোনা টিকা উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভারতের দক্ষতা প্রশ্নাতীত।’’ তাঁর মতে অ্যাস্ট্রাজেনেকার পাশাপাশি, নোভাভ্যাক্স, সানোফি এবং জনসন অ্যান্ড জনসন কম দামের করোনা টিকা উদ্ভাবনে সাফল্য পেতে পারে।
প্রসঙ্গত, অগস্ট মাসে মার্কিন সংস্থা ‘নোভাভ্যাক্স’ তাদের তৈরি করোনা প্রতিষেধক ‘এনভিএক্স-কোভ-২৩৭৩’ উৎপাদনের জন্যও চুক্তি করেছে সেরাম ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়ার সঙ্গে। যদিও পুণের ওই ওষুধ উৎপাদনকারী সংস্থার সিইও আদর পুণাওয়ালা কয়েকদিন আগে বলেছিলেন, ‘‘২০২৪ সালের আগে সকলের কাছে করোনা-টিকা পৌঁছনো সম্ভব বলে তিনি মনে করেন না।’’