মঞ্চ, টেলিভিশন, চলচ্চিত্র সব মাধ্যমের শক্তিমান বরেণ্য অভিনেতা এবং থিয়েটারের প্রাক্তন সভাপতি অবসরপ্রাপ্ত মেজর কে এস ফিরোজ না ফেরার দেশে চলে গেলেন । বুধবার (০৯ সেপ্টেম্বর) ভোর ৬ টা ২০ মিনিটে সিএমএইচ হসপিটালে তিনি পরলোক গমন করেন। মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিলো ৭৬ বছর।
অভিনেতা কে এস ফিরোজ বেশ কিছুদিন যাবৎ নিউমোনিয়ায় ভুগছিলেন। সম্প্রতি তিনি নিউমোনিয়ার ইঞ্জেকশন নিতে আইসিডিডিআরবিতে যান। সেখান থেকে ফিরেই জ্বরে আক্রান্ত হন। জ্বর নিয়ে একটি হাসপাতালে কয়েকদিন ভর্তি ছিলেন। অবস্থা খারাপ হলে তাকে মঙ্গলবার (৮ সেপ্টেম্বর) সিএমএইচে ভর্তি করা হয়। সেখানে লাইফ সাপোর্টে রাখা হয় তাকে। আজ সকালে পৃথিবী ছেড়ে না ফেরার দেশে পাড়ি জমান কে এস ফিরোজ।
মঞ্চ নাটক দিয়ে শুরু হয়েছিল কে এস ফিরোজের অভিনয় যাত্রা। নাট্যদল ‘থিয়েটার’র সাথে সম্পৃক্ত হয়ে অভিনয় শুরু করেন। এই দলের হয়ে তিনি অভিনয় করেছেন ‘সাত ঘাটের কানাকড়ি’, ‘কিংলিয়ার’ ও ‘রাক্ষসী’ নাটকে।
কে এস ফিরোজ প্রথম টিভিতে অভিনয় করেন দিলারা জামানের স্বামী শফিউজ্জামানের রচনায় ও জামান আলী খানের প্রযোজনায় ‘দীপ তবুও জ্বলে’ নাটকে। এতে তার বিপরীতে ছিলেন ডলি ইব্রাহীম।
কে এস ফিরোজ বেশ কিছু দর্শক নন্দিত চলচ্চিত্রেও কাজ করেছেন। তার প্রথম সিনেমা ‘লাওয়ারিশ’। অভিনয় করেছেন আবু সাইয়ীদের ‘শঙ্খনাদ’, ‘ বাঁশি’, মুরাদ পারভেজের ‘চন্দ্রগ্রহণ’ ও ‘বৃহন্নলা’র মতো প্রশংসিত সিনেমায়। তার মৃত্যুতে মঞ্চ টেলিভিশন ও চলচ্চিত্রের তার সহকর্মীদের মাঝে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। তার ভক্তরাও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই বরেন্য শিল্পীর প্রয়ানে গভীর শোক জানিয়েছেন।
গুণী এই অভিনেতার গ্রামের বাড়ি বরিশালের উজিরপুরের মশাং গ্রামে। তবে তার জন্ম তার ঢাকার লালবাগে। তার বাবার নাম এ জে এম সাইদুর রহমান। অবশ্য এলাকার মানুষ তার বাবাকে উজির মিয়া নামেই চিনতেন।
অভিনয়ের বাইরেও এক বর্ণিল ক্যারিয়ার কে এস ফিরোজের। ১৯৬৭ সালে কে এস ফিরোজ বাংলাদেশে সেনাবাহিনীতে কমিশন পদে চাকরি নেন।
১৯৭৭ সালে মেজর পদে চাকরি থেকে অব্যাহতি নেন। তার আগে ১৯৭৪ সালের ১ নভেম্বর মাধবীর সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। কে এস ফিরোজের তিন মেয়ে। তারা হচ্ছেন নাদিয়া, সাদিয়া ও রাবেয়া জাহান ফিরোজ।