যশোরে সেবিকা, ব্যাংক কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যসহ নতুন করে ৩৫ জনের কোভিড-১৯ নভেল করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। এই নিয়ে শনিবার পর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্ত হলেন ৩১৬৭ জন। এছাড়া করোনায় আক্রান্ত হয়ে আরও ১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার নাম সোলাইমান (৭০)। তিনি অভয়নগর উপজেলার বুইকারা গ্রামের বাসিন্দা।
ডা. রেহেনেওয়াজ জানান, শনিবার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টার থেকে পাঠানো ১৮৩ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাঠানো হয়। তাতে ৩৪ জনের করোনা শনাক্ত হয়েছে। এদিন খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (খুমেক) ল্যাব থেকে পাঠানো আরও ৮ টি ফলাফলে ১ জনের করোনা শনাক্তের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। এরমধ্যে যশোর সদর উপজেলায় ২০ জন, শার্শা উপজেলায় ২ জন, ঝিকরগাছা উপজেলায় ১ জন, মণিরামপুর উপজেলায় ৩ জন, কেশবপুর উপজেলায় ২ জন, বাঘারপাড়া উপজেলায় ৩ জন ও অভয়নগর উপজেলায় ৪ জন।
ডা. রেহেনেওয়াজ আরো জানান, এদিন ১৫ জনকে করোনামুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। জেনোম সেন্টারে পরীক্ষার জন্য নমুনা পাঠানো হয়েছে ১৬২ জনের। যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আদনান ইমতিয়াজ জানিয়েছেন, সদরে আক্রান্ত ২০ জনের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, ডিসি বাংলো রোড এলাকায় বসবাসকারী
যশোর মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর ডা. আখতারুজ্জামানের মা আনোয়ারা বেগম (৯৩), শ্যালক কামরুজ্জামান (৪৫), ঘোপ নওয়াপাড়া রোডে বাসিন্দা যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স সেলিনা আক্তার (৩৮), উপশহর এ ব্লকে বসবাসকারী একই হাসপাতালের সিনিয়র স্টাফ নার্স রেবেকা খাতুন (৫৩),
খড়কির বাসিন্দা সিভিল সার্জন অফিসের স্বাস্থ্য শিক্ষা কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন (৫১), পুলিশ লাইন এলাকায় বসবাসকারী পুলিশের এসআই মোরসালিম (৪৫), আরেক পুলিশ সদস্য এরশাদ হোসেন (৩৪), লোন অফিসপাড়ার রাহুল কাপুড়িয়া (৪০), বর্না কাপুড়িয়া (৩২), চাঁচড়া ডালমিল এলাকার বাসিন্দা সোনালী ব্যাংকের কর্মকর্তা সিদ্দিকুর রহমান (৩৬) ও সুজলপুর গ্রামের বাসিন্দা পুলিশের এএসআই আলমগীর (৪৪)। আক্রান্তদের মধ্যে আনোয়ারা বেগম যশোর ইবনেসিনা হাসপাতালে ও বাকিরা হোমআইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
অভয়নগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আবাসিক মেডিকেল অফিসার ডা. আলিমুর রাজিব জানান, গত সপ্তাহে খুলনার ল্যাবে নমুনা পরীক্ষায় সোলাইমানের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়েছিলো। এরপর থেকে তিনি নিজ বাড়িতে চিকিৎসাধীন ছিলেন। শনিবার সকাল সাড়ে ৯ টার দিকে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটে। পরিবারের লোকজন বিষয়টি জানালে উন্নত চিকিৎসার জন্য সোলাইমানকে খুলনা করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতালে রেফার্ড করা হয়। এর কিছু সময় পর তার ছেলে ফোন করে পিতা মারা যাওয়ার খবর দেন। সরকারি স্বাস্থ্যবিধি মেনে সোলাইমানের দাফনকার্য হয়েছে।
যবিপ্রবির অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও পরীক্ষণ দলের সদস্য ড. তানভীর ইসলাম জানিয়েছেন, জেনোম সেন্টারে যশোর জেলার ৩৪ জন ছাড়াও মাগুরা জেলার ১৩ নমুনা পরীক্ষায় ২ জন ও নড়াইল জেলার ২৮ জনের নমুনা পরীক্ষা ১৩ জনের শরীরে কোভিডের জীবাণু পাওয়া গেছে। সবমিলিয়ে ২২৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৪৯ জনের করোনা পজিটিভ এবং ১৭৫ জনের নেগেটিভ ফলাফল এসেছে।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানিয়েছেন, শনিবার পর্যন্ত জেলার ১৩২২৫ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ফলাফল এসেছে ১২১১০ জনের। এরমধ্যে করোনা পজেটিভ ৩১৬৭ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৯৩৪ জন। মৃত্যু হয়েছে ৪৬ জনের। এরমধ্যে ঢাকার হিসাবে ৪ জন ও খুলনার হিসেবে রয়েছে ৩ জন।