শুক্রবার যশোরে ব্যাংক কর্মকর্তা ও পুলিশ সদস্যসহ নতুন করে আরও ৫৮ জনের কোভিড-১৯ নভেল করোনা ভাইরাস শনাক্ত হয়েছে।
এরমধ্যে উপসর্গ নিয়ে মারা যাওয়া ১ জনের ফলাফল পজেটিভ এসেছে। এই নিয়ে জেলায় মোট ২৬৬৩ জন করোনা রোগী শনাক্ত হলো। আর মৃত্যুর সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৩৭ জন। এই তথ্য জানিয়েছেন সিভিল সার্জন অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা ডা. রেহেনেওয়াজ।
ডা. রেহেনেওয়াজ জানান, শুক্রবার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টার থেকে পাঠানো ১০৬ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে ৪৪ জনের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়।
এছাড়া খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (খুমেক) আরও ৫০ জনের ফলাফল আসে। সেখানে ১৪ জন করোনায় শনাক্ত বলে উল্লেখ করা হয়েছে। দুই ল্যাবে শনাক্ত হওয়া ৫৮ জনের মধ্যে
যশোর সদর উপজেলায় ৪০ জন, ঝিকরগাছা উপজেলায় ১২ জন ও কেশবপুর উপজেলায় ৬ জন। ডা. রেহেনেওয়াজ আরো জানান, এদিন নতুন করে ১৮৫ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য জেনোম সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
তিনি জানান, সোহরাব হোসেন (২৯) যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গত ১৮ আগস্ট তিনি মারা যান। তার নমুনা ল্যাবে পাঠানো হয়েছিলো।
পরীক্ষার ফলাফলে নিশ্চিত হওয়া গেছে তিনি করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছেন। সোহরার সুজলপুর গ্রামের নওশোর আলীর ছেলে।
ফলাফল তার পরিবারের সদস্যদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার ডা. আদনান ইমতিয়াজ জানান, আক্রান্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন নীলগঞ্জ ভিসা অফিস এলাকার জাকিয়া খন্দকার (৬০), লোন অফিস পাড়ার ওয়ালিউল ইসলাম (৪৩), ইব্রাহিম হোসেন (৫৮) যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল কোয়ার্টারে বসবাসকারী আবু সাঈদ (৫৪), আরবপুর দিঘীরপাড় এলাকার সোহাগ (৩৫), সরদারপাড়ার নুরুন্নাহার (৪২), লিচুবাগান এলাকায় বসবাসকারী পুলিশ সদস্য তন্ময় দাস (৩০), বেজপাড়া নলডাঙ্গা রোডের বাসিন্দা লুৎফুন্নেছা (৫৫), উপশহর ক্লাব মোড়ের বাসিন্দা নাসরিন (২০),
ধর্মতলা এলাকার রেবেকা (৫৩), তাসলিমা (৫০), ভেকুটিয়া গ্রামের মিঠুন (৪৫), মোমিনুর রহমান (৪০), ইসরাত জাহান (৫০), সুজলপুর গ্রামের সেলিম (৩২), বাহাদুরপুর গ্রামের বাসিন্দা কৃষি ব্যংকের কর্মকর্তা জামাল উদ্দিন (৫০), আনোয়ার ইউসুফ (৩৭), কাশিপুরের ওসমানপুর গ্রামের ডালিম (৩৩),
লেবুতলার আগ্রাইল গ্রামের আবুল কালাম আজাদ (৩৩) , চাঁচড়ার নতুন হাট গ্রামের আকিমুল (৩৫) ও নরেন্দ্রপুরের শাখারীগাতি গ্রামের মাহবুব (৩৮)। তাদের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। আক্রান্তদের মধ্যে তন্ময় দাস ,মোমিনুর রহমান , আবুল কালাম আজাদ জাকিয়া খন্দকার ওয়ালিউল হাসপাতাল আইসোলেশেন ও বাকিরা হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন।
যবিপ্রবির অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও পরীক্ষণ দলের সদস্য ড. তানভীর ইসলাম জানিয়েছেন, জেনোম সেন্টারে যশোর জেলার ৪৪ জন ছাড়াও মাগুরা জেলার ৫৯ নমুনা পরীক্ষায় ১৪ জন ও নড়াইল জেলার ৪৩ জনের নমুনা পরীক্ষা ১৩ জনের শরীরে কোভিডের জীবাণু পাওয়া গেছে। সবমিলিয়ে ২০৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৭১ জনের করোনা পজিটিভ এবং ১৩৭ জনের নেগেটিভ ফলাফল এসেছে।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানিয়েছেন, শুক্রবার পর্যন্ত জেলার ১২০২৫ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ফলাফল এসেছে ১০৩৭৮ জনের। এরমধ্যে করোনা পজেটিভ ২৬৬৩ জন। সুস্থ হয়েছেন ১৬৩২ জন।