যশোরে কোভিড-১৯ নভেল করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ২৩০০ ছাড়িয়েছে। মঙ্গলবার একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার, একজন চিকিৎসকসহ নতুন করে ৬৯ জন শনাক্তের মধ্য দিয়ে জেলায় আক্রান্তের সংখ্যা দাঁড়ালো ২৩২৮ জন। শনাক্তদের মধ্যে নারীদের তুলনায় পুরুষের সংখ্যাই বেশি। বিষয়টি নিশ্চিত করে সিভিল সার্জন অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা ডা. রেহেনেওয়াজ জানান, আক্রান্তদের ৭১ শতাংশ পুরুষ, ২৫ শতাংশ নারী ও ৪ শতাংশ শিশু।
ডা. রেহেনেওয়াজ জানিয়েছেন, মঙ্গলবার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টার থেকে পাঠানো ১৯৪ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফলে ৬৯ জনের করোনা পজেটিভ শনাক্ত হয়। এরমধ্যে যশোর সদর উপজেলায় ৩৪ জন, ঝিকরগাছা উপজেলায় ১০ জন, মণিরামপুর উপজেলায় ৫ জন, কেশবপুর উপজেলায় ৮ জন ও অভয়নগর উপজেলায় ১২ জন।
ডা. রেহেনেওয়াজ আরো জানান, এদিন করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে আরও ১৪০ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য জেনোম সেন্টারে পাঠানো হয়েছে।
যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রন) ডা. নাসিম ফেরদৌস জানান, আক্রান্তদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন, যশোরের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল আল নাসের (৩৭), যশোর ২৫০ মেডিকেল কলেজের কর্মচারি আব্দুস শহীদ (২৭), মাইকপট্টি ৩৯/সি শহীদ রোডের ডা. এএসএম আতিকুজ্জামান (৫০), ঘোপ ডিআইজি রোড এলাকার নাসিম রেজা (৩০), জেল রোডের বাহরুল ইসলাম (৭০), জুয়েল (৪২), পালবাড়ি এলাকার আসানুর রহমান (২৩), হরিনাথপুরের শাহরুল ইসলাম (৩৮), রেলস্টেশন রোড এলাকার সালাউদ্দিন (৪৩), কাজীপাড়া এলাকার নাইমা দিলসাত (৩৬), বেজপাড়ার আখি মিনা (৬০), রাজু আহমেদ (৩৪) জোসনা (৬৫), ক্যান্টনমেন্ট আবাসিক এলাকার তানিয়া রহমান (২৩) তাহেরা শোভা (৪০), অগ্রণী ব্যাংকের কর্মকর্তা জুলফিকার (৩৪), নীলগঞ্জের নুর জাহান বেগম (৮৫), মুজিব সড়কের এম হাসান সোহরাওয়ার্দী (৫৬), মোল্লাপাড়ার জামিল হোসেন (৯৫), পল্লী বিদ্যুৎ অফিসের কর্মচারী আক্কাস আলী (৩৬), চুড়ামনকাটির সাজিয়ালী গ্রামের সাজিয়ালির মাহফুজুর রহমান (১৭), সাতমাইল বারীনগরের রহিমা খাতুন (২৬), তেঁতলার ইমরুন নাহার (৩৪), মাকসুদা (৪২), খয়েরতলার হুমায়ন কবির (৪৫), উপশহর এ ব্লকের রুবেল (৩৮), (৪৩), শেখহাটির অপু (৪০), স্বপ্না (৩২) ও মুড়লির শরিফুল ইসলাম (৫০)। তারা সকলেই হোম আইসোলেশনের রয়েছেন। আক্রান্তদের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার জামাল আল নাসের করোনায় আক্রান্ত হওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যশোর পুলিশের ডিআইওয়ান এম মশিউর রহমান।
যবিপ্রবির অণুজীব বিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ও পরীক্ষণ দলের সদস্য ড. তানভীর ইসলাম জানিয়েছেন, জেনোম সেন্টারে যশোর জেলার ৬৯ জন ছাড়াও মাগুরা জেলার ৫০ নমুনা পরীক্ষায় ২০ জন ও নড়াইল জেলার ৬৮ জনের নমুনা পরীক্ষা ১৮ জনের শরীরে কোভিডের জীবাণু পাওয়া গেছে। সবমিলিয়ে ৩১২ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১০৭ জনের করোনা পজিটিভ এবং ২০৫ জনের নেগেটিভ ফলাফল এসেছে। যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানিয়েছেন, সোমবার পর্যন্ত জেলার ১০৬৪৭ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। ফলাফল এসেছে ৯৩৯৬ জনের। এরমধ্যে করোনা পজেটিভ ২৩২৮ জন।
সুস্থ হয়েছেন ১৩০৮ জন। মারা গেছেন ৩২ জন। সিভিল সার্জন আরো জানান, বর্তমানে হাসপাতাল আইসোলেশনে ৩৬ জন ও হোমআইসোলেশনে ৯৩৬ জন চিকিৎসাধীন রয়েছেন ।