ক্রীড়ানুরাগী বহুমাত্রিক প্রতিভাধর- তারুণ্যের দীপ্ত প্রতীক বীর মুক্তিযোদ্ধা শেখ কামাল এর আজ জন্মদিন। তার এই জন্মদিনে শেখ কামাল সহ পরিবারের সকলের রূহের আত্মার মাগফেরাত কামনা সহ বিনম্র শ্রদ্ধা জানিয়েছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ এর যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক কেন্দ্রীয় উপ কমিটির সাবেক অন্যতম সদস্য, তুরষ্ক আওয়ামী লীগ এর প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি এম এ ফারুক প্রিন্স।
এম এ ফারুক প্রিন্স বলেন, বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে এক অনন্যসাধারণ আইডল এবং পথিকৃৎ হলেন শেখ কামাল। যাকে এ দেশের মানুষ হাজাত হাজার বছর ধরে মনে রাখবেন।
সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জ্যেষ্ঠ পুত্র শেখ কামাল বাংলাদেশের ক্রীড়া উন্নয়নের অগ্রদূত। শহীদ শেখ কামাল আমাদের দেশে নান্দনিক ফুটবল ও ক্রিকেটসহ অন্যান্য দেশীয় খেলার মানোন্নয়নে অক্লান্ত শ্রম দিয়ে অপরিসীম অবদান রেখেছিলেন। নতুন নতুন খেলোয়াড় সৃষ্টির লক্ষে প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তুলতেন এবং তাদের সাথে নিয়মিত অনুশীলন করতেন।
ছোটবেলা থেকেই শেখ কামাল ছিলেন প্রচণ্ড ক্রীড়ানুরাগী। শাহীন স্কুলে পড়ার সময় স্কুল একাদশে নিয়মিত ক্রিকেট, ফুটবল, বাস্কেটবল খেলতেন। আজাদ বয়েজ ক্লাবের হয়ে শেখ কামাল প্রথম বিভাগ ক্রিকেট লিগে নিয়মিত খেলেছেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর শেখ কামাল শুধু খেলোয়ার হিসেবে নয়, ক্রীড়া সংগঠক হিসেবেও আত্মপ্রকাশ করেন। বন্ধুদের নিয়ে ধানমন্ডির সাতমসজিদ এলাকায় গড়ে তোলেন আবাহনী ক্রীড়াচক্র। শেখ কামাল শৈশব থেকে ফুটবল, ক্রিকেট, হকি, বাস্কেটবলসহ বিভিন্ন খেলাধুলায় প্রচণ্ড উৎসাহ ছিল তার। তিনি উপমহাদেশের অন্যতম সেরা ক্রীড়া সংগঠন আবাহনী ক্রীড়াচক্রের প্রতিষ্ঠাতা। বহুমাত্রিক অনন্য সৃষ্টিশীল প্রতিভার অধিকারী শহীদ শেখ কামাল বাংলাদেশ ছাত্রলীগের একজন নিবেদিত, সংগ্রামী, আদর্শবাদী কর্মী ও সংগঠক হিসেবে ১৯৬৬ সালের ৬ দফা আন্দোলন, ১৯৬৯-এর গণঅভ্যুত্থান ও ১৯৭১-এর মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। মুক্তিযুদ্ধের প্রধান সেনাপতি কর্নেল এম এ জি ওসমানীর এডিসি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন তিনি। শেখ কামাল স্বাধীনতা উত্তর যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনর্গঠন ও পুনর্বাসন কর্মসূচিতে সক্রিয় অংশ নেন। পাশাপাশি সমাজের পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর ভাগ্য উন্নয়নে সমাজ চেতনায় উদ্ধুদ্ধকরণে মঞ্চ নাটক আন্দোলনের ক্ষেত্রে তিনি একেবারেই প্রথম সারির সংগঠক ও উদ্যোক্তা ছিলেন। শেখ কামাল ঢাকা থিয়েটারের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা। অভিনেতা হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নাটক অঙ্গনে প্রতিষ্ঠিত ছিলেন। বহুমুখী প্রতিভার অধিকারী শহীদ শেখ কামাল ঢাকার শাহীন স্কুল থেকে মাধ্যমিক ও ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চ মাধ্যমিক পাস করার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগ থেকে বিএ অনার্স পাস করেন। ১৯৭৫ সালর ১৫ আগস্টের পূর্বে তিনি সমাজবিজ্ঞান বিভাগের এমএ শেষ পর্বের পরীক্ষা দিয়েছিলেন। যুদ্ধ চলার সময়ে তিনি লে. পদে সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। মুক্তিযুদ্ধের পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞানের ছাত্র হিসেবে পুনরায় শিক্ষা জীবনে ফিরে এসে শেখ কামাল পড়াশুনায় মনোনিবেশ করেন। এ সময় তিনি বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নির্বাচিত হন। ক্রীড়া জগতে তিনি রেখেছেন অপরিসীম অবদান। পাশাপাশি নতুন খেলোয়াড় তৈরি করার জন্য প্রশিক্ষণ শিবির গড়ে তুলেছিলেন। শেখ কামাল অনেক নাটকে অভিনয় করেছেন। তার মধ্যে একটি নাটক পশ্চিম বাংলার কলকাতায় মঞ্চস্থ হয়েছে। এদিকে নাট্য অভিনয় ছাড়া তিনি ভালো সেতারবাদক ছিলেন। ছায়ানটে সেতারবাদন বিভাগের ছাত্র ছিলেন। সাংস্কৃতিক অঙ্গনের বলিষ্ঠ সংগঠক শেখ কামাল বন্ধু শিল্পীদের নিয়ে গড়ে তুলেছিলেন স্পন্দন শিল্পীগোষ্ঠী। ১৯৭৫ সালের ১৪ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘ব্লু’ দেশবরেণ্য অ্যাথলেট সুলতানা খুকুর সঙ্গে তার বিয়ে হয়।
১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট শাহাদাত বরণের সময় তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান বিভাগের এম. এ শেষ পর্বের পরীক্ষার্থী ছিলেন এবং বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সংগঠন জাতীয় ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ছিলেন।