1. boyd94289@gmail.com : Ayon Islam : Ayon Islam
  2. tanvirinternational2727@gmail.com : NewsDesk :
  3. hrbangladeshbulletin@gmail.com : News Room : News Room
  4. 25.sanowar@gmail.com : Sanowar Hossain : Sanowar Hossain
  5. bangladeshbulleting646@gmail.com : Sohel Desk : Sohel Desk
শুক্রবার, ০৫ ডিসেম্বর ২০২৫, ০৯:১১ অপরাহ্ন

যশোর ২৫০ শয্যা হাসপাতালে নমুনা সংগহে স্বাস্থ্যবিধির বালাই নেই

  • সময় : শনিবার, ২৫ জুলাই, ২০২০
  • ৩১৫



যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে কোভিড-১৯ নভেল করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দিগ্ধ রোগীদের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে খোলা স্থানে। আর রোগীরা স্বাস্থ্যবিধি না মেনে জটলা করছে স্টাফ কোয়ার্টার ও মর্গের সামনের রাস্তায়। সেখান থেকে করোনা সংক্রমণের আশংকা রয়েছে। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন কোয়ার্টারে বসবাসকারী অধিকাংশ চিকিৎসক সেবিকা কর্মচারী ও লাশের স্বজনরা। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, বিষয়টির সমাধান করা হবে।


খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ২৩ মার্চ যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল কোভিড-১৯ সন্দিগ্ধ রোগীদের চিকিৎসাসেবার জন্য আইসোলেশন ওয়ার্ড তৈরি করে কর্তৃপক্ষ। এছাড়া বর্হিঃবিভাগে চিকিৎসার জন্য জরুরি বিভাগের সামনে আলাদা ইউনিটের পাশাপাশি রোগীদের নমুনা সংগ্রহের জন্য নির্দিষ্ট বুথ তৈরি করা। চিকিৎসক সেবিকা কর্মকর্তা কর্মচারী ও সাধারণ রোগীদের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে এমন উদ্যোগ গ্রহণ করে কর্তৃপক্ষ।

কিন্তু বর্তমান কর্মকান্ডে হাসপাতাল থেকে করোনা সংক্রমণ ছড়ানোর আশংকা দেখা দিয়েছে। সরেজমিনে দেখা গেছে, নির্দিষ্ট বুথ ব্যবহার না করে মহিলা আইসোলেশন ওয়ার্ডের পাশের খোলা স্থানে রোগীর নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। দুটি চেয়ারে দুইজন রোগীকে বসিয়ে মেডিকেল টেকনোলজিস্ট নমুনা সংগ্রহ করছেন। পাশে দাঁড়িয়ে রয়েছেন সিরিয়ালে থাকা রোগীরা।

তার থেকে একটু দুরে রীতিমতো রোগীদের জটলা তৈরি হয়েছে। জরুরি বিভাগের পাশে হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টারে যাতাযাতের সামনের রাস্তা ও মর্গে প্রবেশের রাস্তায় রোগীরা একে অপরের গা ঘেষে দাঁড়িয়ে রয়েছেন। কারো মুখে মাস্ক আছে, কারো মুখে নেই। করোনার সন্দিগ্ধ রোগীরা সামাজিক দুরত্ব মানছেন না। হাসপাতালের স্টাফ কোয়ার্টারে বসবাসকারী ১ জন চিকিৎসক জানান, গত ১২ এপ্রিল যশোর জেলায় প্রথম করোনাভাইরাসে আক্রান্ত রোগী শনাক্ত হয়।

তারপর থেকে প্রতিদিন আক্রান্তের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। ২৪ জুলাই পর্যন্ত জেলায় ১৫৬০ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। এছাড়া ২৪ জন করোনা রোগী মারা গেছেন। ওই চিকিৎসক আরো জানান, সরকারি এই হাসপাতালে ৫২ জন চিকিৎসক সেবিকা ও কর্মচারী করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। এই অবস্থার মধ্য দিয়ে প্রকাশ্যে রোগীর নমুনা সংগ্রহ করোনার সংক্রমণ ছড়াতে পারে।

সন্দিগ্ধরা যে রাস্তার উপর জটলা তৈরি করে সেখান দিয়ে প্রতিদিন চিকিৎসক, সেবিকা , কর্মকর্তা কর্মচারীরা চলাচল করে। এছাড়া মর্গের রাস্তায় মৃতদেহ নিতে এসে অসংখ্য মানুষ অপেক্ষায় বসে থাকে। খোলা স্থানে প্রকাশ্যে নমুনা সংগ্রহ ও সন্দিগ্ধদের জটলা তাদের জন্য ঝুঁকি বাড়চ্ছে। নাম প্রকাশ না করার শতে হাসপাতালের ১ জন কর্মচারী জানান, খোলা স্থানে নমুনা সংগ্রহ করার কারণে একদিকে সংক্রমণ ছড়ানোর আশংকা অন্যদিকে বিশৃংখল পরিবেশের সৃষ্টি হচ্ছে। এছাড়া নমুনা সংগ্রহের স্থানে স্বাস্থ্য বিধি মানা হচ্ছে না। কোয়ার্টারে বসবাসকারী ২ জন কর্মচারী জানান, নমুনা সংগ্রহে অনিয়ম মানতে না পেরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি মৌখিকভাবে জানিয়েছে। কোয়ার্টারে বসবাসকারী ১ জন সেবিকা জানান, সরকারি এই হাসপাতালে বেশির ভাগ নন কোভিড রোগী চিজিকৎসা নিতে আসে। তাদের সাথে থাকেন স্বজনরা। করোনায় সন্দিগ্ধরা নমুনা দিতে এসে যেখানে অপক্ষোয় থাকেন সেই রাস্তা দিয়ে চলাচল করে হাসপাতালের অসংখ্য চিকিৎসক সেবিকা কর্মকর্তা কর্মচারী ও রোগীর স্বজনরা। জটলার মাঝ দিয়েই যাতায়াত করে তারা। বুথের বাইরে খোলা স্থানে নমুনা সংগ্রহ করা তার মতো অনেকেই ভালো চোখে দেখছেন না। কারণ ভয়ঙ্কর ছোঁয়াচে করোনাভাইরাস সুযোগ পেলে ধরে বসবে এটাই স্বাভাবিক। এতে সাধারণ রোগীদের চিকিৎসায় ঝুঁকি বাড়বে।

একজন থেকে আরেকজন ছড়িতে পড়ার আশংকায় তিনি রীতিমতো আতংকগ্রস্থ। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন সিনিয়র চিকিৎসক জানিয়েছেন, হাসপাতাল থেকে করোনা সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি এখন অনেক বেশি। হাসপাতালের প্রধান গেটের পাশেই করা হয়েছে পুরুষ আইসোলেশন ওয়ার্ড। করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হওয়া অসংখ্য রোগীর পজেটিভ শনাক্ত হচ্ছে। ফলে প্রধান গেটের পাশে ওয়ার্ডটি না করে যেখানে নন কোভিড রোগী ও স্বজনদের যাতায়াত কম হাসপাতালের এককোণে এমন জায়গায় আইসোলেশন ওয়ার্ড করা উচিৎ ছিলো। আবার খোলামেলা পরিবেশে করোনা সন্দিগ্ধদের নমুনা সংগ্রহ করা হচ্ছে। এটাও একটা ঝুঁকি। সব মিলিয়ে বিষয়টি কর্তৃপক্ষের আমলে নেয়ার দাবি জানান তিনি।


গত বৃহস্পতিবার মর্গে লাশ নিতে আসা শহরের বেজপাড়ার আশিকুল ইসলাম জানান,পুরাতন কসবার শফিকুল, মঞ্জুরুলসহ আরো কয়েকজন জানান, যাতাযাতের রাস্তায় দীর্ঘসময় করোনা সন্দিগ্ধ রোগীদের ভিড় ছিলো। অনেকে রাস্তার উপর দাঁড়িয়ে আবার কেউ কেউ সিরিয়ালের অপেক্ষায় বসে ছিলেন। এমন পরিবেশে মনে আতঙ্ক ও ভয় থাকলেও স্বজনের মৃতদেহ নেয়ার জন্য বাধ্য হয়ে সেখানে থাকতে হয়েছে। তবে সাধারণ মানুষের কথা চিন্তা করে বিষয়টির সমাধান করার আহবান জানান তারা।

হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ জানান, স্বাস্থ্যবিধি না মেনে নমুনা সংগ্রহ করা ও রাস্তার উপর রোগীদের জটলা থাকার ব্যাপারে জানতে পেরেছি। বিষয়টি নিয়ে উর্ধ্বতন কর্মকর্তার সাথে আলাপ করেছি।

দ্রুত সমাধানে পদক্ষেপ নেয়া হবে। নমুনা দিতে আসা রোগীদের সচেতন হওয়া ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার আহবান জানান আরএমও।

সংবাদটি শেয়ার করুন

এই বিভাগের অন্যান্য খবর
©বাংলাদেশবুলেটিন২৪