রোববার যশোরে নতুন ৩ জনের কোভিড-১৯ নভেল করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। ১ জন চিকিৎসকসহ ৬ জন সুস্থ হয়েছেন। এদিকে, যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনাভাইরাসে আক্রান্ত সন্দিগ্ধ নারী সেলিনা বেগম (৩০) মারা গেছেন। এছাড়া ঘূর্ণিঝড় আম্পান তান্ডবে ক্ষতিগ্রস্থ ও জীবাণুমুক্তের কাজ চলার কারণে ১৩ দিন বন্ধ থাকার পর ৩১ মে থেকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ফের কোভিড-১৯ শনাক্ত পরীক্ষার কাজ শুরু হয়েছে।
যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানান, রোববার খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (খুমেক) ল্যাব থেকে পাঠানো ৮০ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাঠানো হয়। এতে ৩ জনের শরীরে করোনার অস্তিত্ব মেলে। এরমধ্যে যশোর যশোর সদর উপজেলায় ১ জন, যশোর বক্ষব্যাধি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ১ জন ও অভয়নগর উপজেলায় ১ জন রয়েছেন। বাকি ৭৭ জনের ফলাফল নেগেটিভ।
সিভিল সার্জন আরো জানান, করোনায় আক্রান্ত হওয়ার পর যে ৬ সুস্থ হয়েছেন তারা হলেন যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালটেন্ট ডা. তৌহিদুল ইসলাম ও সেবিকা রলি ইয়াসমিন। এছাড়া সদর উপজেলার বাসিন্দা ইমরান হোসেন, আকাশ হোসেন ও ইমামুল এবং বাঘারপাড়া উপজেলার দিপ্ত কুমার সুমন। তাদের প্রত্যেককে স্বাস্থ্য বিভাগের পক্ষ থেকে ফুলেল শুভেচ্ছা জানানো হয়েছে। এসময় সুস্থ হওয়ার ছাড়পত্র তুলে দেয়া হয়।
সিভিল সার্জন অফিসের দায়িত্বরত তথ্য কর্মকর্তা মেডিকেল অফিসার ডা. রেহেনেওয়াজ জানান, করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে রোববার যশোরের আরো ৪৪ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য দুটি ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এরমধ্যে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জিনোম সেন্টারে ১৮ ও খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের (খুমেক) ল্যাবে ২৬ ।
যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) ডা. আরিফ আহমেদ জানান, ২৯ মে সেলিনা বেগমকে করোনার উপসর্গ ও স্টোক হওয়া অবস্থায় হাসপাতালে আনেন। জরুরি বিভাগে দায়িত্বরত চিকিৎসক ওই নারী করোনায় আক্রান্ত সন্দেহে ভর্তি করে আইসোলেশন ওয়ার্ডে পাঠান। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি শনিবার রাতে মারা যান।
আরএমও আরো জানান, ভর্তির পর ওই নারীর নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছিলো। এখানো ফলাফল এসে পৌঁছায়নি। সতর্কতার সাথে দাফন করার জন্য স্বজনদের পরামর্শ দেয়া হয়েছে। সেলিনা বেগম যশোর শহরের নীলগঞ্জের মিল্টন শিকদারের স্ত্রী।
এদিকে, যবিপ্রবির ভাইস চ্যান্সেলর প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন জানান, ২০ মে বুধবার ঘূর্ণিঝড় আম্পানের তান্ডবে জিনোম সেন্টার কক্ষের কয়েকটি জানালার ক্ষতিগ্রস্থ হয়। এছাড়া করিডোর দিয়ে ল্যাবের মধ্যে পানি ঢুকে পড়ে। তারপরেও বিদ্যুৎ বিপর্যয়। তাই ওইদিন সন্ধ্যা থেকে নমুনা পরীক্ষার কাজ বন্ধ করা হয়। জিনোম সেন্টার কক্ষের জানালাগুলো মেরামত ও পরিস্কার পরিছন্নতার পাশাপাশি ল্যাব জীবাণুমুক্ত করার কাজ শেষ করে রোববার ( ৩১ মে ) থেকে করোনা পরীক্ষা শুরু করা হয়েছে।
জিনোম সেন্টারের সহকারি পরিচালক প্রফেস ড. ইকবাল কবির জাহিদ জানান, প্রথমদিন শুধুমাত্র যশোর জেলার ১৮ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। সোমবার থেকে অন্য তিন জেলার নমুনা আসতে পারে।
উল্লেখ্য, যশোর জেলায় করোনা আক্রান্ত ১০৭ জনের মধ্যে যশোর সদর উপজেলায় ৩৯ জন, শার্শা উপজেলায় ১০ জন, ঝিকরগাছা উপজেলায় ৭ জন, চৌগাছা উপজেলায় ১৫ জন, কেশবপুর উপজেলায় ১৩ জন, মণিরামপুর উপজেলায় ১১ জন, বাঘারপাড়া উপজেলায় ৩ জন ও অভয়নগর উপজেলায় ৯ জন।