শনিবার যশোরে চৌগাছা উপজেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক ও ফুলসারা ইউনিয়েনের চেয়ারম্যান মেহেদি মাসুদ চৌধুরী ও ১ জন চিকিৎসকসহ নতুন করে ৩১ জনের কোভিড-১৯ নভেল করোনাভাইরাস শনাক্ত হয়েছে। আর ৪৭ জনকে করোনামুক্ত ঘোষনা করেছে স্বাস্থ্য বিভাগ।এদিকে শনিবার রাতে যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আইসোলেশন ওয়ার্ডে করোনার উপসর্গ নিয়ে ১ নারী মারা গেছেন।
যশোর সিভিল সার্জন অফিসের দায়িত্বপ্রাপ্ত তথ্য কর্মকর্তা ডা. রেহেনেওয়াজ জানিয়েছেন, শনিবার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (যবিপ্রবি) জেনোম সেন্টার থেকে ১৩৩ জনের নমুনা পরীক্ষার ফলাফল পাঠানো হয়।
এতে ৩১ জনের করোনা পজেটিভ ও ১০২ জনের নেগেটিভ শনাক্ত হয়। এরমধ্যে যশোর সদর উপজেলায় ১৮ জন, শার্শা উপজেলায় ১ জন, চৌগাছা উপজেলায় ১ জন, কেশবপুর উপজেলায় ১ জন ও অভয়নগর উপজেলায় ১০ জন রয়েছেন। তিনি জানান, করোনা আক্রান্ত সন্দেহে শনিবার যশোর জেলার আরও ১৮৯ জনের নমুনা পরীক্ষার জন্য যবিপ্রবি ল্যাবে পাঠানো হয়েছে। এদিন নতুন করে ৪৭ জনকে করোনামুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে।
যশোর সদর উপজেলা স্বাস্থ্য উপজেলার মেডিকেল অফিসার (রোগ নিয়ন্ত্রণ) ডা. এএনএম নাসিম ফেরদৌস জানান, সদর উপজেলায় আক্রান্ত ১৮ জনের মধ্যে শহরের পূর্ব বারান্দীপাড়া বসবাসকারী ১ জন চিকিৎসক (৩০), যশোর উপশহর এ ব্লক ১ জন নারী (৫৪), ১ জন ছাত্র (২৫), শেখহাটি আদর্শপাড়া বাসিন্দা ও যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের ১ জন মেডিকেল টেকনোলজিস্ট ( ৪২) যশোর কেন্দ্রীয় কারাগারে কোয়ার্টোরে বসবাসকারী ১ জন পুরুষ কারারক্ষী (৪৬) , গাড়িখানা রোড এলাকার বাসিন্দা নারী ১ জন (৫০), বারান্দীপাড়া মোল্ল্যার ১ পরিবারের ২ জনের মধ্যে শিক্ষিকা (২৮) ১ জন শিক্ষার্থী (২৪), ঘোপ নওয়াপাড়া এলাকার ১ জন পুরুষ (৩৮), ঘোপ জেলরোড বসবাসকারী এনএসআইয়ের ১ জন ফিল্ড অফিসার (৪৩), ঢাকা রোড বারান্দীপাড়ার ১ জন নারী (৫০) , মন্ডলগাতি গ্রামের ১ জন পুরুষ (৩০), ঝুমঝুমপুর ক্লাব মোড় এলাকার ১ জন বেসরকারি চাকুরে (৪০)।
এছাড়া ১জন এনজিও কর্মকর্তাকে (৫৫) কেশবপুর ও ১ জন গাড়ি চালককে (৩৫) কুষ্টিয়া সিভিল সার্জনের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। শাহিন (২৪) জ্যো¯œা (৩৯) শাহরিয়ারের (৩৮) ফোন নম্বর বন্ধ থাকায় তাদের হদিস পাওয়া যায়নি। ডা. এএনএম নাসিম ফেরদৌস জানান, আক্রান্ত চিকিৎসক ৩৯ তম বিসিএসের। তিনি যশোর বিমান বন্দরে দায়িত্ব পালন করতেন। আক্রান্তদের মধ্যে কারারক্ষী প্রাতিষ্ঠানিক ও অন্যরা হোম আইসোলেশনে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাদের বাড়ি লকডাউন করা হয়েছে।
যবিপ্রবির এনএফটি বিভাগের চেয়ারম্যান ও পরীক্ষণ দলের সদস্য ড. শিরিন নিগার জানিয়েছেন, জেনোম সেন্টারে যশোর জেলার ৩১ জন ছাড়াও মাগুরা জেলার ৩০ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৭ জন বাগেরহাট জেলার ২৪ জনের নমুনা পরীক্ষায় ৭ জন ও সাতক্ষীরা জেলার ৭৮ জনের নমুনা পরীক্ষায় ১৫ জনের শরীরে কোভিডের জীবাণু পাওয়া গেছে। সবমিলিয়ে ২৬৫ জনের নমুনা পরীক্ষা করে ৬০ জনের করোনা পজিটিভ এবং ২০৫ জনের নেগেটিভ ফলাফল এসেছে। যশোর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) আরিফ আহমেদ জানান, গত ১১ জুলাই শনিবার রাত সাড়ে ৮ টার দিকে করোনার উপসর্গ নিয়ে আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান শর্মিলা নামে এক নারী।
তিনি করোনার উপসর্গ নিয়ে ভর্তি হয়েছিলেন। তার নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে। পরে বিস্তারিত জানাতে পারবো। যশোরের সিভিল সার্জন ডা.শেখ আবু শাহীন জানান, শনিবার পর্যন্ত যশোর জেলায় ৯শ’ ৬৮ জন করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে। সুস্থ হয়েছেন মোট ৪৮৭ জন। এছাড়া ১৫ জনের মৃত্যু হয়েছে।