যশোরে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয় ২২ এপ্রিল। তিনি ছিলেন মণিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের ১ জন স্বাস্থ্যকর্মী। বর্তমানে লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা রোগী। মঙ্গলবার (৭জুন) পর্যন্ত জেলায় করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা ৭৪৪ জন। এরমধ্যে চিকিৎসক ২৫ ও সেবিকা ২০ জন রয়েছেন। এছাড়া অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী রয়েছেন ৪৭ জন।
১ জন স্বাস্থ্যকর্মীসহ ১৪ জন মারা গেছেন। করোনা আতঙ্কের পরিস্থিতিতে সংক্রমণ প্রতিরোধে অবিরাম ছুটে চলেছেন যশোরের সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন। নিজেই সচেতনতামূলক প্রচার প্রচারণায় রয়েছেন। করোনায় আক্রান্ত রোগীদের খোঁজ নেয়ার পাশাপাশি প্রতিদিন পরিদর্শনে যাচ্ছেন জেলার কোন না কোন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান। তাকে দেখে চিকিৎসক সেবিকা ও স্বাস্থ্যকর্মীদের মনোবল বাড়ছে। ফলে চিকিৎসাসেবার জন্য রোগীদের দুর্ভোগ ও হয়রানির শিকার হতে হচ্ছে না। করোনাকালে নিজের জীবন বাজি রেখে বিশেষ ভূমিকার জন্য ডা. শেখ আবু শাহীন সব মহলে প্রশংসিত।
সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানিয়েছেন, মরনব্যাধি করোনাভাইরাস আতঙ্ক সবার মাঝে রয়েছে। তিনিও এর বাইরে নন। তারপরেও মানুষের কথা চিন্তা করে তার এই ছুটে চলা। কিভাবে করোনার ভয়কে জয় করবেন সেই বিষয়ে মানুষকে সচেতন করার জন্য অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। জেলার প্রধান স্বাস্থ্য কর্মকর্তা হিসেবে তার অনেক দায়িত্ব রয়েছে। করোনা মহামারীর এই সময়ে অফিস বা ঘরে বসে থাকলে চলবে না। সুস্থ মানুষ যেনো করোনায় আক্রান্ত না হয় সেই বিষয়ে নানা প্রচার প্রচারণা নিয়ে ছুটছেন মানুষের কাছে। সিভিল সার্জন জানান, প্রতিদিন কোন না কোন স্বাস্থ্য প্রতিষ্ঠান পরিদর্শনে গিয়ে চিকিৎসক ,সেবিকা ও অন্যান্য কর্মীদের সাথে আলোচনায় বসছেন। তাকে দেখে স্বাস্থ্যকর্মীরা মনোবল ফিরে পাচ্ছেন।
তারা আতঙ্ক দুরে ঠেলে রোগীদের চিকিৎসাসেবা দিয়ে চলেছেন। সিভিল সার্জন আরো জানান, নিজের জীবনের মায়া ত্যাগ করে দায়িত্বকে বড় করে দেখেছেন। নিয়মিত ভিজিট করছেন করোনা ডেডিকেটেড হাসপাতাল। রোগীদের চিকিৎসাসেবার ব্যাপারে খোঁজ খবর নিচ্ছেন। তাদের থাকা বা খাওয়ার বিষয়ে কষ্ট হচ্ছে না কিনা সেই বিষয়েও কথা বলেন রোগীদের সাথে। এছাড়া তিনি সাধ্যমতো করোনা রোগীদের পাশে থাকার চেষ্টা করেন। করোনার হিমশিম পরিস্থিতি মোকাবেলায় তিনি সর্বোচ্চ ভূমিকা রাখতে চান। করোনাকালে কোন দায়িত্ব পালনকালে পিছু পা হবেন না। করোনায় আক্রান্তদের সেবা নিশ্চিত ও সুস্থ মানুষের সচেতন করে তোলার অঙ্গিকার নিয়ে দায়িত্ব পালন করে চলেছেন। নিজের মনে শতভাগ আত্মবিশ্বাস অসহায় মানুষের সেবার জন্য ছুটে চলেছি। তাই আল্লাহর রহমতে কিছুই হবেনা।
সিভিল সার্জন ডা. শেখ আবু শাহীন জানান, মানুষের কথা ভেবে রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারেননা। চোখের সামনে ভেসে ওঠে করোনার ভয়ে কাতর মানুষের চেহারা। ‘যতক্ষণ পর্যন্ত মানুষ স্বাস্থ্যবিধি না মেনে চলবে ততদিন করোনা সংক্রমিত রোগীর সংখ্যা বাড়তেই থাকবে। তাই নিয়মনীতি মেনে চলার আহবান জানিয়ে সিভিল জানান, সকলের সচেতনতা ছ্ড়াা করোনা পরিস্থিতি সামলানোর শতচেষ্টা সফল করা সম্ভব নয়। এজন্য করোনা সংক্রমণের প্রকৃত তথ্য জেনে এবং যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন করে সবাই সুরক্ষিত থাকুন। কাশি বা হাঁচি হচ্ছে এমন ব্যক্তির থেকে নিরাপদ দূরত্ব বজায় রাখুন। মাস্ক না পরে কেউ বাইরে বের হবেন না। সাবান দিয়ে হাত না ধুয়ে চোখ, নাক বা মুখ স্পর্শ করবেন না।
কাশি বা হাঁচির সময় আপনার নাক এবং মুখটি কনুই ভাঁজ করে বা টিস্যু দিয়ে কভার করুন। অসুস্থ বোধ করলে বাড়িতেই থাকুন। জ্বর, কাশি এবং শ্বাসকষ্ট হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন।