নিজস্ব প্রতিবেদক
দক্ষিণ গাজা উপত্যকায় একটি খাদ্য বিতরণ কেন্দ্রের কাছে ইসরাইলি বাহিনীর গুলিতে অন্তত ২৭ ফিলিস্তিনি নিহত এবং বহু মানুষ আহত হয়েছেন। পরপর তৃতীয় দিন এ ধরনের ঘটনা ঘটলো। মঙ্গলবার ফিলিস্তিনের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের বরাতে দ্য গার্ডিয়ান এ তথ্য জানিয়েছে।
সাংবাদিকরা হতাহতের সংখ্যা স্বাধীনভাবে যাচাই করতে পারেননি, তবে রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, আন্তর্জাতিক রেড ক্রস কমিটির একজন মুখপাত্র জানিয়েছেন, তারা রাফাহর হাসপাতালে ১৮৪ আহতকে গ্রহণ করেছেন। এর মধ্যে ২৭ জন মারা গেছেন।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেস (এপি) গাজা দক্ষিণে ফিলিস্তিনিদের হত্যার বিষয়ে বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেছে। ইসরাইলি সৈন্যরা একটি খাদ্য বিতরণের কেন্দ্রের এক কিলোমিটারের মধ্যে গুলি চালায়।
এপির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, গুলির ঘটনা ঘটেছে একটি গোলচক্করের কাছে, যা ত্রাণ বিতরণ কেন্দ্রের প্রায় এক কিলোমিটার দূরে। গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের রেকর্ড বিভাগের প্রধান জাহের আল-ওয়াহিদি জানিয়েছেন, কমপক্ষে ২৭ জন ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছেন।
আন্তর্জাতিক রেড ক্রসের মুখপাত্র হিশাম মেহানা বলেছেন, রাফাহর ফিল্ড হাসপাতালে ১৮৪ জন আহতকে নিয়ে আসা হয়, যাদের মধ্যে ১৯ জন হাসপাতালে পৌঁছানোর আগেই মারা যায় এবং পরে আরও আটজন মারা যায়। ২৭ জনের লাশ খান ইউনিসের নাসের হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। নাসের হাসপাতালের নার্সিং বিভাগের প্রধান মোহাম্মদ সাকর জানিয়েছেন, নিহতদের মধ্যে তিনজন শিশু এবং দু’জন নারী। হাসপাতালের পরিচালক আতেফ আল-হুত বলেছেন, বেশিরভাগ রোগীর শরীরে গুলির আঘাত রয়েছে।
অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সাংবাদিক রিপোর্ট করেছেন যে, ঘটনাস্থল থেকে ফিরে আসা লোকজনের হাতে কিছুই ছিল না, কিন্তু রক্তমাখা দাগযুক্ত খালি ময়দার ব্যাগ মাটিতে পড়ে ছিল।
এদিকে আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমকর্মীদের গাজায় প্রবেশে ইসরাইেলি সরকারের পক্ষ থেকে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার সংস্থার মতে, গাজায় খাদ্য বিতরণে ইচ্ছাকৃত বাধা দেয়া ইসরাইলিদের যুদ্ধাপরাধের শামিল। তারা খাদ্য সংগ্রহের চেষ্টারত বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলাকে অমানবিক বলে বর্ণনা করেছে। জেনেভায় গণমাধ্যমকে দেয়া প্রতিক্রিয়ায় জাতিসংঘের মানবাধিকার কমিশনারের মুখপাত্র জেরেমি লরেন্স এ মন্তব্য করেছেন।